ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জমিজমা রেজিস্ট্রেশন

অনলাইনের মাধ্যমে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধের কার্যকরী উপায়

একেএম রেজাউল করিম
অনলাইনের মাধ্যমে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধের কার্যকরী উপায়

বর্তমান যুগে প্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদের জীবনকে সহজ ও সুগম করার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এর মধ্যে জমিজমা রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে চালু হলে কীভাবে হয়রানি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য রোধ করা সম্ভব হবে, তা আজকের আলোচনার বিষয়। অনলাইনে জমিজমা রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য নির্ধারিত একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকবে, যা নিম্নরূপ-

ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি : সরকারের পক্ষ থেকে একটি সেন্ট্রালাইজড ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হবে। এখানে ভূমি সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য এবং রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।

রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া : জমির মালিক বা তার প্রতিনিধি অনলাইনে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন জমির সীমানা, মালিকানা, এবং নথিপত্র আপলোড করবেন।

ডিজিটাল নথি যাচাই : জমির নথিপত্র ও মালিকানা যাচাইয়ের জন্য কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, নথিগুলো যাচাই করা হবে যাতে কোনো ভুল তথ্য বা জালিয়াতি না ঘটে।

ফি প্রদান : জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত ফি অনলাইনে বিভিন্ন ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে প্রদান করা যাবে, যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, বা ডেবিট কার্ড।

মালিকানা স্বীকৃতি : একবার জমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হলে, মালিকানা স্বীকৃতির একটি ডিজিটাল সার্টিফিকেট জমির মালিককে ইমেইল বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

ডাটাবেসে সংরক্ষণ : সমস্ত তথ্য ডিজিটাল ডাটাবেসে সংরক্ষণ করা হবে, যা সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য হবে এবং সেখান থেকে জমির তথ্য খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।

সার্চ সুবিধা : সাধারণ জনগণ সহজেই তাদের জমির তথ্য এবং রেজিস্ট্রি স্থিতি অনুসন্ধান করতে পারবেন। এটি নিশ্চিত করবে যে জমির মালিকানা ও রেজিস্ট্রির তথ্য সর্বদা স্বচ্ছ ও আপডেটেড রয়েছে।

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন : ব্যবহারকারীদের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করা যেতে পারে, যা জমির মালিকরা তাদের জমির সমস্ত তথ্য দেখতে এবং রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য তথ্য : জমির রেজিস্ট্রির তথ্য প্রয়োজনে বিভিন্ন সরকারি অফিসের সাথে শেয়ার করা যাবে, যাতে বিভিন্ন পরিষেবাগুলো দ্রুত এবং সহজে পাওয়া যায়।

অনলাইনে জমিজমা রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু হলে এটি সামাজিক সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজ ও দ্রুত পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণের জন্য সেবা প্রদান সম্ভব হবে, যা খরচ ও সময় দুটোরই সাশ্রয় করবে এবং ভূমি অফিসগুলোর ওপর চাপ কমাবে।

এজন্য সরকারের পরিকল্পনা ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা অপরিহার্য। যদি আমরা আমাদের জমির রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে একাত্ম করতে পারি, তাহলে এটি দেশটির উন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের মানুষজনের জন্য একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও কার্যকরীব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।

ইঞ্জিনিয়ার, কলামিস্ট, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত