ঢাকা ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জলবায়ু সম্মেলন ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

রায়হান আহমেদ তপাদার
জলবায়ু সম্মেলন ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে আজারবাইজানের বাকুতে বসেছে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজান গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার গঠনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম বিদেশ সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রে। গত সেপ্টেম্বরে প্রধান উপদেষ্টা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেন। নিউইয়র্কের পর দ্বিতীয় বিদেশ সফরে কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজান যান প্রধান উপদেষ্টা।

এদিকে ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার পর ২০২৪ সালেই আবারো সর্বোচ্চ তাপমাত্রার শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় জলবায়ু সংস্থা। তাদের এ তথ্যে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবার আরো একটি নতুন স্তরে পৌঁছতে চলেছে। এই পরিস্থিতিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য এক গুরুতর সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা, কারণ চলতি বছর গড় তাপমাত্রা প্রথমবারের মতো প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালে করা প্যারিস চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল গ্লোবাল তাপমাত্রা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা এবং ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা, যাতে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো হ্রাস করা সম্ভব হয়। প্যারিস চুক্তি অনুসারে, ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি অতিক্রম করলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত বন্যা ও খরার ঘটনা, ভূমিক্ষয় এবং বারবার বনভূমি অগ্নিকাণ্ডের মতো জটিল পরিবেশগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হচ্ছে, এল নিনো প্রভাব, যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘটে এবং এটি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।

এর প্রভাব পৃথিবীজুড়ে আবহাওয়া পরিবর্তন ঘটায়, বিশেষ করে বৃষ্টিপাত, গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা এবং শীতল আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যায় এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, যা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও ছাই বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রাখে এবং তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই পরিস্থিতি এক প্রকার সতর্কবার্তা যা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উদ্দীপিত করা উচিত। এই রিপোর্টটি এমন সময়ে এসেছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন, যিনি প্রায়ই জলবায়ু পরিবর্তনকে অমূলক বলে মনে করেন। তার পুনঃনির্বাচন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে কারণ বিশ্ব সম্প্রদায় আসন্ন জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন, কপ-২৯-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা আগামী সপ্তাহে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যদি আরো বৃদ্ধি পায় তবে এর প্রভাব হতে পারে বহু জটিল ও বিপজ্জনক। যেমন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে জলমগ্নতার ঝুঁকি বাড়বে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেবে এবং ভূমিক্ষয় বেড়ে গিয়ে মানবজাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া, আবহাওয়ার এই অস্বাভাবিক পরিবর্তন খাদ্য উৎপাদন, জল সরবরাহ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের এই বৈশ্বিক সতর্কতাকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞানীরা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ জলবায়ুর এই অবস্থা আমাদের জীবনের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক গুরুতর বিপদ সংকেত।

প্রতিবছরের মতো এবারো বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল তাতে যোগ দেয়। কপ-২৮-এ বাংলাদেশের কিছু ভালো অর্জন রয়েছে। জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা, অর্থের সহজলভ্য এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে ন্যায্য প্রাপ্তির পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ তহবিল বরাদ্দের জন্য জলবায়ু অর্থায়নের পক্ষে দর-কষাকষি করে অনেকাংশে সফল হয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর ১০০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল। জলবায়ু তহবিলের অর্থ প্রাপ্তির জটিলতার বিষয় নিয়েও কথা বলেছিল বাংলাদেশ। সাতশ মিলিয়ন ডলার লোকসান ও ক্ষতি তহবিল প্রতিষ্ঠা ছিল কপ-২৮-এর একটি মূল অর্জন। জলবায়ুজনিত দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ ন্যায়সংগত আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পক্ষে কাজ করে আসছে। অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে নতুন অর্থায়ন প্রক্রিয়াগুলো কার্যকরী এবং সহজপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার ভিত্তিও তৈরি করেছে।

আশা করা যায়, এর সুফল অচিরেই মিলবে। বাংলাদেশ এই সম্মেলনে যাচ্ছে আমূল বদলে যাওয়া এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। অপর দিকে পৃথিবীজুড়ে তাপমাত্রা বাড়ছে, জীববৈচিত্র্যের হচ্ছে ক্ষতি আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে উঠছে নৈমিত্তিক ঘটনা। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের জন্য সমর্থন পাওয়া বাংলাদেশের জন্য আবশ্যক। সম্মেলনটি বাংলাদেশের জন্য অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষতি ও ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। সে হিসেবে কপ-২৯-এ বাংলাদেশ জলবায়ু সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ, উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জনে বৈশ্বিক পদক্ষেপের দাবিদার বটে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতি নিরূপণ করার জন্য একটি ক্লাইমেট ভালনারিবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছিল। এই দলিল পর্যালোচনায় দেখা যায় যে মধ্য ও উপকূলীয় বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলো প্রবল বৃষ্টিপাত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বন্যা ও নদীভাঙনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বার্ষিক বর্ষা ও বন্যা বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১৮ শতাংশ প্রভাবিত করে। ফলে বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের প্লাবনভূমিতে কৃষি, অবকাঠামো ও জীবিকাকে প্রভাবিত হয়।

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল খরাপ্রবণ, শুষ্ক মৌসুমে তীব্র পানিসংকটের সম্মুখীন হয়। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো ঘূর্ণিঝড়ের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ঘটনাগুলো তীব্রতর হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। ফলে মিঠাপানির সম্পদ এবং আবাদযোগ্য জমি দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। দেশে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা চরম উষ্ণ দিনগুলোর স্থায়িত্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। এই প্রবণতা দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের পরিধি বাড়ানো না হলে ২০৫০ সাল নাগাদ, জলবায়ু প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক জিডিপির দুই শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। দর-কষাকষিতে দক্ষ লোকজনের স্বল্পতার কারণে প্রায়ই উপযুক্ত ফোরামে বাংলাদেশের যথাযথ চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হয় না। তবে বাংলাদেশ জলবায়ু নীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। ২০২১ সালে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) হালনাগাদ করেছে, যাতে গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাসের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যগুলো সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নবায়নযোগ্য শক্তি, শক্তি দক্ষতা এবং টেকসই কৃষিব্যবস্থা। এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করা নির্ভর করছে উন্নত দেশগুলো থেকে যথেষ্ট আর্থিক সহায়তা এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের ওপর।

কপ-২৯-এর কেন্দ্রীয় বিষয়ের মধ্যে তাই এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কপ-২৯-এ বাংলাদেশের এজেন্ডা তিনটি প্রধান বিষয়সূচিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন বাস্তবায়ন ও ক্ষয়ক্ষতির তহবিল কার্যকর করা। বাংলাদেশ ২০০৯ সালে উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক লক্ষ্যের বাইরে বৈশ্বিক জলবায়ুতে একটি নতুন অর্থায়নের সংস্থান চায়। ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের প্রয়োজন মেটাতে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। তাই আন্তর্জাতিক উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ।

কপ-২৯ বাংলাদেশকে সহজলভ্য এবং পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়নের জন্য দর-কষাকষির একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশের জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা পরিকল্পনাগুলো উপকূলীয় বনায়ন, উন্নত জল ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কৃষি অনুশীলনের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কপ-২৯ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপিএস) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করার জন্য পরিকল্পিত অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বাস্তাবায়নে প্রয়োজনীয় সমর্থন করবে। বাংলাদেশ অভিযোজন তহবিলের জন্য অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতির জন্য চাপ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় তার জলবায়ু কর্মপরিকল্পনায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন এবং জলাভূমি পুনরুদ্ধারের মতো প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাজ করছে। এই উদ্যোগগুলো কার্বন নির্গমন হ্রাস করার সঙ্গে সঙ্গে জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করে এবং বাস্তুতন্ত্রকে টেকসই হতে সাহায্য করে। এসব উদ্যোগ বাংলাদেশের উপকূলীয় এবং গ্রামীণ এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কপ-২৯-এ বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও জলবায়ু অভিযোজনবান্ধব ভূমি ব্যবহার নীতি বাস্তবায়নের জন্য অন্যান্য দেশকে সহযোগিতা করবে।

ঢাকাসহ বাংলাদেশের নগর কেন্দ্রগুলো তাপপ্রবাহ, বায়ুদূষণ এবং জলাবদ্ধতার কারণে তীব্র জলবায়ু হুমকির সম্মুখীন। টেকসই নগর উন্নয়ন এবং জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামোর ওপর কপ ২৯-এ কার্যকর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ এনে দিতে পারে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারগুলোকে আরো সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মতো পদক্ষেপে গুরুত্ব দিতে হবে। এখন দেখার বিষয়, এ জলবায়ু সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নেতারা কী ধরনের পদক্ষেপের প্রস্তাব করবেন। তবে বার্ষিক আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯-এ ফের দুশ্চিন্তার কালো মেঘ দেখা দিয়েছে। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সম্মেলন শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের এই পালাবদল হুট করে আট বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। সংশয়ের কারণ, আট বছর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বরে মরক্কোর মারাকেশে বসেছিল বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলন। সম্মেলন শুরু হয়েছিল ট্রাম্পের জয়ের খবর দিয়ে। উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। কারণ, নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বারবার জলবায়ু পরিবর্তন ও সেই সম্পর্কিত আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, জলবায়ু আন্দোলন এক ব্যয়বহুল ধাপ্পাবাজি। যুক্তিহীন, অহেতুক এবং সেটি চীনের স্বার্থে চীনাদের তৈরি। এসব মন্তব্য ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছিল তার ঘোষণা। ট্রাম্প বলেছিলেন, প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসবে। সেই ঘোষণা মারাকেশে সমবেত আন্দোলনকর্মীদের মনে যে হতাশার সৃষ্টি করেছিল, সম্ভবত তারই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে।

লেখক : গবেষক ও কলাম লেখক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত