ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তারেক রহমান বৈষম্যহীন রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণের অনন্য চিন্তক

আসাদুল করিম শাহীন
তারেক রহমান বৈষম্যহীন রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণের অনন্য চিন্তক

উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, এশিয়ার মানচিত্রে ছোট্ট সবুজভূমি বাংলাদেশ। এদেশেরই একটি আদর্শিক পরিবারে ৫৯ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করে এক অনন্য শিশু। সেই শিশুটিই আজকের বাংলাদেশের রাজনীতির বরপুত্র তারেক রহমান। ‘জাতীয়তাবাদী শক্তির সোনালী ফিনিক্স’ গণতন্ত্র হারা জাতির পরমবন্ধু ও পথপ্রদর্শক আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা। আধুনিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা জননেতা তারেক রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারেক রহমান এক দুর্জয় নাম। অনেক বছর ধরে তিনি আলোড়িত ও আলোকিত করে আছেন জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠা। তারুণ্যের অহংকার জনপ্রিয় এ নেতা বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মানুষ। সাধারণ জনগণ তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে, তিনি দেশে ফিরে দিশাহারা জাতিকে আলোর পথ দেখাবেন।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক আদর্শের প্রধানতম ভিত্তি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূল বক্তব্য হলো, ভাষা একটি জনগোষ্ঠীর জাতীয়তাবাদের একক নির্ধারক হতে পারে না। একটি জনসমাজের জাতীয়তাবাদ বিকাশে একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাস, ভাষা, মানবধারা, লোক সংস্কৃতি এবং স্বপ্ন অনেক উপাদান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশে বেশ ক’টি ভাষাভাষী ও ধর্ম বিশ্বাসী লোক বাস করে, অনেকগুলো উপজাতি সম্প্রদায় রয়েছে। এদের সবাইকে নিয়েই আমরা বাংলাদেশি জাতি। আমাদের মূলমন্ত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। আর এই মুহূর্তে আমাদের নেতা গণতন্ত্রের মানসপুত্র তারেক রহমান।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে যোগ্য মেধাবী দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা তারেক রহমান। ১৯৮৮ সালে নিজ জেলা বগুড়ার গাবতলী থানা বিএনপির একজন সাধারণ সদস্য হিসাবে তার আনুষ্ঠানিক রাজনীতি শুরু। যদিও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী হিসাবে কখনও বা পরামর্শদাতা হিসেবে মাঝে মাঝে তাকে দেখা যেত। তিনি আগে বিএনপি পুনর্গঠনে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

এছাড়া ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশেষ অবদান রাখেন দেশবরেণ্য এই তরুণ নেতা। ১৯৮২ সনের ২৪ মার্চ স্বৈরাচারী হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচিত বিএনপি সরকারকে বন্দুকের নলে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে, বিএনপির সেই চরম ক্রান্তিকালে আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির হাল ধরেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং জাতীয়তাবাদী যুবদলকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, অগ্নিঝরা দুঃসময়ে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে মহাসংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। সেই কঠিন সময়ে সদ্য কৈশরোত্তীর্ণ তারেক রহমান ছাত্রবস্থায় তার মায়ের পাশে থেকে বিএনপি পুনর্নির্মাণে অনেক সহযোগিতা করেছেন, যা বিএনপির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

জাতীয়তাবাদী শক্তিকে গতিময়তাদানের জন্য তার রাজনীতিতে আর্বিভাব। যিনি বুকের গভীরে লালন করেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। আব্রাহাম লিঙ্কন এর প্রদর্শিত গণতন্ত্রই তার প্রথম পছন্দ, ‘জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন, যা কখনো পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে না। তার স্বপ্ন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে তিনি শুরুতেই ছুটে গিয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছে। পথে প্রান্তরে হেঁটে বেড়িয়েছেন তিনি। এই আদর্শ অনুপ্রেরণা তিনি লাভ করেছেন তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর কাছ থেকে। পিতার আদর্শ ও কর্মসূচি হৃদয়ে ধারণ করে দেশপ্রেমের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সত্য-ন্যায় ও কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবার প্রত্যয় নিয়েছেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা তারেক রহমান। তিনি রাজনীতিতে আসার আগে ও পরে একাধিকবার উল্লেখ করেছেন, তার পিতাই তার শিক্ষক।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বরণের কিছু পরে তিনি একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন ‘আমার শিক্ষক’ শিরোনামে, তাতে তার পিতার সাথে কিছু স্মৃতির উল্লেখ করেছেন। এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘১৯৮১ সালের ৩০ মে বহুবার এসেছে জীবনে। যতদিন বেঁচে থাকব ঘুরে ঘুরে প্রতিবছর দিনটি আসবে। কিন্তু আমরা তো কখনও ১৯৮১ সালের ২৯ মে’তে ফিরে যেতে পারব না। ৩০ মে’র পর যখন দেখলাম লাখ লাখ মানুষ চোখের পানি নিয়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে একটি কফিনের পেছনে দাঁড়িয়ে তাদের নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তখন শুধু এইটুকুই মনে হয়েছিল, একটি মানুষ কীভাবে এত লাখো কোটি মানুষ আপন করে নিতে পারেন, কেমন করে পারেন কোটি মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিতে। সেই লাখো কোটি মানুষের প্রিয় জিয়াউর রহমানের সন্তান আমি, এটি মনে হলে বাবাকে হারানোর ব্যথা একটু হলেও লাঘব হয়।

যখন মনে পড়ে, লাখ লাখ লোক জানাজায় এবং রেডিও-টিভির সামনে বসে কোটি কোটি মানুষ আল্লাহর দরবারে তাদের প্রিয় মানুষটির জন্য দোয়া করছে, তখন পিতার মৃত্যুর বেদনা অল্প হলেও প্রশমিত হয়। আজো মনে পড়ে জানাজার দিনের সেই অচেনা মুরব্বীর কথা, তিনি বলেছিলেন, ‘বাবা, কাঁদতে নেই; দেখ লাখ লাখ মানুষ এসেছে এই জানাজায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার বাবাকে বেহেশত নসিব করবেন; তোমরা কাঁদলে তোমার বাবার আত্মা কষ্ট পাবে।’ আজও যখন বাদজুমা বাবার কবর জিয়ারতে যাই, একজন মানুষ হলেও পাই সেখানে সেই সময়ে, যে তার নেতার জন্য দু হাত তুলে দোয়া করছে। যাকে আগে কোনো দিন দেখিনি; হয়তো আর কোনোদিন দেখবও না। আসলে এত মানুষের দোয়ার জন্য আজও মাঝে মাঝে মনে হয়, বাবা আমাদের মধ্যেই আছেন, হয়ত অফিসে গেছেন, কাজ শেষ হলেই চলে আসবেন। যেমন মনে হয়েছিল ২৯ মে ১৯৮১ সালে। আমার বাবা যখন মারা যান, তখন আমার বয়স ১৪-১৫ বছর। অর্থাৎ যে সময় একজন কিশোরের জীবনের পথ চলতে শেখার জন্য দরকার তার জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিক্ষককে, অর্থাৎ তার বাবাকে।

কিন্তু আমার এবং ভাইর কারও এই শিক্ষকের কাছ থেকে সরাসরি বেশি কিছু শিখার অবকাশ হয়নি। তার প্রধান কারণ, আমাদের এই শিক্ষকের কাঁধে ন্যস্ত ছিল, সেই সময়ে সমগ্র দেশ ও জনগণের গুরুদায়িত্ব। তাই জীবনের পরবর্তী সময়ে আমাদের শিখতে হয়েছে এই শিক্ষকের রেখে যাওয়া সততা থেকে, শিখতে হয়েছে তার রেখে যাওয়া আদর্শ থেকে এবং সেই সব কর্ম থেকে, যা তিনি একজন পিতা হিসেবে আমাদের দিয়ে করিয়েছেন, বলেছিলেন করতে, তা থেকে। তারই ছোট ছোট অনেক ঘটনা রয়েছে। ঘটনাগুলো বিচার করলে এর প্রভাব আমাদের জীবনে অনেক।’

কঠিন দুঃসময়ে তারেক রহমান রাজনীতিতে আগমন করেন, তার সেই আগমন ছিল রাজনীতির বদ্ধঘরে খোলা জানালার মতো, যে জানালা দিয়ে রাজনীতির বদ্ধ ঘরে ঢুকতে পেরেছিল একমুঠো মিষ্টি সুবাতাস। রাজনীতিতে তারেক রহমানের আগমনে তখনকার ছাত্র-যুবক-শ্রমিক, তথা সকল তরুণ কর্মীদের মাঝে উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল, জাতীয়তাবাদী আদর্শের সৈনিকরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখেছিলেন তার মধ্যে। কর্মে-কথায়-আচরণে তৃণমূল নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের মনে আশা-ভালোবাসার সঞ্চার করেছিলেন তিনি। যে ভালোবাসা এখনও অটুট অম্লান রয়েছে।

‘ঐক্যবদ্ধ অগ্রগতির অমোঘ দাবি উৎপাদনের রাজনীতি এবং জনগণের গণতন্ত্র। এই কর্মসূচি নিয়ে একদিন গ্রামের পর গ্রামে ছুটে গেছেন বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান। তারই প্রদর্শিত পথে পা রাখলেন তারেক রহমান এবং গণমানুষের প্রাণের ছোঁয়া পেয়ে তিনিও উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিলেন। সেই থেকে তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন তারেক রহমান। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা সরাসরি শোনা এবং সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এক নতুন ইতিহাস গড়ে তুলতে তৎপর হন। জননেতা তারেক রহমান নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধকে ফিরিয়ে আনতে এক অনন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাঝে গড়ে তোলেন ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। এক একটি সাধারণ হাত হয়ে ওঠে তখন কর্মীর হাতিয়ার।

নারীর ক্ষমতায়নে শিক্ষার আলো জ্বালাতে তিনি কিছু কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেন। ফলে তাদের মধ্যেও জেগে ওঠে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সমাজে তাদের অবদান রাখার স্পৃহা। ফলে নারীরাও সমাজ ও জাতি গঠনে এগিয়ে আসার মানসিক প্রস্তুতি নেন। পল্লী উন্নয়নে তারেক রহমান গ্রহণ করেন যুগান্তকারী পদক্ষেপ। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে অক্ষরজ্ঞান দান, জীবনমুখী শিক্ষার প্রসার, উন্নত বাসস্থানের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি করা, বিদ্যুতায়ন প্রক্রিয়া ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়নের জন্যও তিনি সার্বিক প্রয়াস চালাতে সচেষ্ট হন। মূলত গ্রাম উন্নয়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব বলে তারেক রহমান পল্লী উন্নয়নের ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা চালান। তিনি মনে করেন, আলোকিত গ্রামই আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার পূর্বশর্ত। তারেক রহমান গত পর্বে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি, বন্যা-সিডর-আইলা-মঙ্গা ইত্যাদিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রম, শিশু স্বাস্থ্য সচেতনতা, ক্যাম্প, বীজ ও সুপেয় পানি প্রকল্প, বৃত্তি প্রকল্পসহ সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে গণমানুষের মাঝে আশা ও উদ্দীপনার সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি ছাত্র রাজনীতির ক্ষেত্রেও তারেক রহমান ফলপ্রসূ কল্যাণকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এসব কর্মসূচির লক্ষ্য আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে নিরক্ষরতামুক্ত-সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। একটি সুশিক্ষিত স্বনির্ভর জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব দরবারে আপন মহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতিকথায় লিখেছেন- আমি তারেককে ভালোবাসি। ‘তারেক রহমানকে আমি দেখি একজন শিক্ষকের দৃষ্টি দিয়ে। ভালো ছেলে। বিনয়ী, সদাশয়, মৃদুভাষী। নন্দিত জাতীয় নেতা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। নেতানেত্রীর কাতারে বুদ্ধিদীপ্ত অগ্রগামী তারুণ্যের প্রতীক। দীর্ঘজীবী হোক এই কামনা প্রতি মুহূর্তের।

বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাজনীতির মানসপুত্র তারেক রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন সকাল সৃষ্টির জন্য তার আগমন। তারেক রহমান এবং তার অনুগামী জাতীয়তাবাদী শক্তির চাওয়া নির্বাচন কেন্দ্রিক বহুদলীয় গণতন্ত্র। বাংলাদেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত গণতন্ত্রের ভগ্নস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো তার উত্থান হোক জন্মদিনে এই প্রবল প্রত্যাশা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী আপমর মানুষের।

জননেতা তারেক রহমান একজন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা রাজনীতিক। আর একজন স্বপ্নদ্রষ্টা রাজনীতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের জন্য রূপকল্প তৈরি করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে গণমুখী করার চেষ্টা করেন। তিনি বোঝেন একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৃণমূলে অবস্থানরত ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে জাগ্রত করে দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তির ধারাকে বেগবান করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রহমান ও তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে জননেতা তারেক রহমানের রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে। রাজনীতিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন জেনেছেন, বুঝেছেন। তাই রাজনীতি মিশে আছে তার রক্তের স্রোতধারায়। পিতার আদর্শকেই বুকে ধারণ করে তিনি রাজনীতির অঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার সততা, নৈতিকতা, কর্তব্যপরায়ণতা, নিয়মানুবর্তিতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেই জননেতা তারেক রহমান তার রাজনৈতিক জীবনের অধ্যায় শুরু করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে মা বেগম খালেদা জিয়াকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে থাকেন। একজন রাষ্ট্রনায়কের আরাধ্য কর্ম সম্পাদনের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে আরোহন করেন।

২০০১-এর জাতীয় নির্বাচনে চারদলীয় জোটের অভূতপূর্ব বিজয় লাভের নেপথ্য কারিগর ছিলেন জননেতা তারেক রহমান। ঝিমিয়ে পড়া দল ও সংগঠনকে তিনি জাগিয়ে তোলেন দুর্বার বেগে। দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে তরুণ সমাজকে দীক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি যে ভিশন ও মিশন নিয়ে যাত্রা শরু করেন তা ছিল সময়োপযোগী ও কার্যকর এক পন্থা। জননেতা তারেক রহমান ছিলেন একজন স্বাপ্নিক, কর্মঠ ও ভিশনারি যুবক যিনি ২০০৫-এ দাঁড়িয়ে আরও ২০ বছর পরের বাংলাদেশের একটি ছবি কল্পনা করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের একটি মডেল তার চোখের সামনে দাঁড় করিয়ে তিনি রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে তা বাস্তাবয়নে সর্বদা দলীয় নেতাকর্মীদের ও জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করেন।

‘২০০৫-এর ১১ ডিসেম্বর দৈনিক মানবজমিন আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে জননেতা তারেক রহমান দেশ ও দেশের জনগণ নিয়ে যে বক্তব্য তুলে ধরেন, যে পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন তার সাথে সাযুজ্যতা খুঁজে পাওয়া যায় আধুনিক সিঙ্গাপুরের স্থপতি লী কুয়ান ইউ কিংবা আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির মোহাম্মদের সাথে। তিনি এগিয়ে যেতে চান তার বাবার পথ ধরে। তার অসমাপ্ত কার্যাবলি সমাপ্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে জননেতা তারেক রহমান যে অভিযাত্রা শুরু করেছেন তা যদি সুষ্ঠভাবে সমাপ্ত করা যায় তবে তৃতীয় বিশ্বের বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বের বাংলাদেশে উন্নীত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ সেই বক্তব্যে বাস্তবে তার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিস্তৃতভাবে ফুটে উঠেছিল।

জননেতা তারেক রহমান হচ্ছে একজন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী তরুণ নেতৃত্ব। তিনি তার নেতৃত্বের গুনে নতুন তরুণ প্রজন্মের মাঝে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তা অন্যদের নিকট কল্পনাতীত সাফল্যই বটে। দীর্ঘদিন দেশে গণতন্ত্র ছিল অনুপস্থিত মৃত নদীর মতো। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করে চলেছে। দেশি-বিদেশি গভীর ষড়যন্ত্রের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে প্রিয় স্বদেশভূমি। মুহূর্তে দেশ ও জাতির রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ঘোরসন্ধিক্ষণে জাতির প্রয়োজন জননেতা তারেক রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্ব। একথা বলতে অত্যুক্তি হবে না। গত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তিনিই ছিলেন রূপকার। এছাড়া গত ১৬ বছর স্বৈরাচারবিরোধী মহা সংগ্রামে তার নেতৃত্ব জাতিকে দিয়েছিলেন নতুন দিনের আগমনী বার্তা।

জননেতা তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুধু দলের নেতৃত্বেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তিনি দেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন এবং সমাধানের পথ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। রাজনৈতিক চাপে এবং বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার কারণে তিনি বিদেশে অবস্থান করতে বাধ্য হলেও দেশের রাজনীতি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার তীব্র নাড়ির টান অটুট রয়েছে।

জননেতা তারেক রহমানের প্রতি জনগণের অকৃতিম ভালোবাসা ও বিপুলসংখ্যক মানুষের সমর্থন প্রমাণ করে যে, তিনি শুধু একজন নেতা নন, বরং একজন প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব। ভবিষ্যতে এই জনদরদী ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বে দেশ ও বিএনপির রাজনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে, এটাই বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা।

সহ প্রচার সম্পাদক, বিএনপি

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত