ব্যাংক খাতে ডলারের স্থিতি হ্রাস

বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

অতীতে দেশে ডলার সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিলেও এ বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যায়নি। আগের বকেয়া ও স্থগিত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় ডলারের স্থিতি কমেছে। জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে ডলার সংকটের কারণে স্থগিত ও বকেয়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কারণে সম্প্রতি ব্যাংকগুলোয় ডলারের স্থিতি কমেছে। বিগত সরকার ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকার অক্টোবর পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধ করেছে প্রায় ২০০ কোটি ডলার ও দীর্ঘমেয়াদি ৩০০ কোটি ডলার। চাহিদার তুলনায় ডলারের প্রবাহ এখনো কম থাকায় ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে টাকার অবমূল্যায়ন আগের তুলনায় কমেছে। এদিকে আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির প্রবণতা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের রিজার্ভ থেকে বিক্রি করেছে ৪৩৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বিক্রি করেছে ৭২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। দেশের চলমান ডলার সংকট এবং রিজার্ভ ঘাটতি মোকাবিলায় বাজেট সহায়তার প্রতি বিশেষ জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরইমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে চাওয়া হয়েছে এ সহায়তা। এর অংশ হিসাবে ৪০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আশার কথা, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স, বৈদেশিক অনুদান ও বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ আগের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ডলারের বাজারে। চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে যান। এতে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি আস্থা বাড়ানো সম্ভব হলে মানুষের চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় সাশ্রয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার। ডলার সংকট কাটাতে রপ্তানি বাড়াতে গুরুত্ব দিতে হবে এবং দেশে আমদানিনির্ভরতা কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। রপ্তানির নতুন বাজার সৃষ্টি এবং রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের বিষয়েও গুরুত্ব বাড়াতে হবে। কোনো রপ্তানিকারক কোনোরকম কারসাজির আশ্রয় নেন কি না, সেদিকেও নজর দিতে হবে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ওপরও গুরুত্ব বাড়ানো দরকার। প্রবাসীরা যাতে তাদের উপার্জিত অর্থ বৈধপথে দেশে পাঠান, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। অর্থ পাচার ও হুন্ডি রোধে কঠোর হতে হবে। দুর্নীতি ডলার সংকটকে তীব্র করে তুলছে। কাজেই এ সংকট নিরসনে দুর্নীতি রোধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।