ভয়াবহ বায়ুদূষণে ঢাকা
মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আনার পদক্ষেপ জরুরি
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অনেকদিন ধরেই বিশ্বের বায়ুদূষণের কবলে পড়া শহরগুলোর তালিকার শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে রাজধানী ঢাকা। ছুটির দিনগুলোয় যেহেতু গাড়ি চলাচল কম এবং কলকারখানা বন্ধ থাকে, সেহেতু এ সময় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। তবে এবার ছুটির দিনেও শীর্ষস্থানে ছিল ঢাকা। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে বিশ্বের ১২৬টি শহরের মধ্যে শুক্রবার সকালে শীর্ষে ছিল ঢাকা। বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের মধ্যে থাকলেও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, কোনো সরকারের সময়েই এ বিষয়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। হাইকোর্টের একাধিক নির্দেশনার পরও সিগনিফিকেন্ট ও টেকসই পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বড় বড় সব কোম্পানি, যেগুলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা মেট্রোর মতো হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে নিয়োজিত, তারা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পরিমাণ বাজেট থাকে, তা খরচ করে না। তাছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের যে বাজেট থাকে, তা দিয়ে সত্যিকার অর্থে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সরকারকে আলাদা করে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। তা না হলে বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। আমরা দেখছি, প্রতি নিঃশ্বাসে নগরবাসী বিষাক্ত বায়ু সেবনে বাধ্য হলেও এ নিয়ে নেই কোনো সতর্কতা কিংবা হুঁশিয়ারি। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে বিশ্বের অন্য দেশগুলো জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে থাকে। বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান; কিন্তু এদেশে এখন পর্যন্ত বায়ুদূষণের কারণে এমন কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি। ২০১৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে রাজধানীর বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস-ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলাকে চিহ্নিত করা হয়। পরিতাপের বিষয়, উৎসগুলো চিহ্নিত করা সত্ত্বেও বায়ুদূষণ কমাতে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি আমরা। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। এ পরিস্থিতিতে জনসাধারণেরও উচিত মাস্ক পরা, খোলা স্থানে ব্যায়াম না করার মতো কিছু স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার বায়ুদূষণের মাত্রা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।