বিদায় নিচ্ছে ঘটনাবহুল বছর ২০২৪। বাংলাদেশের ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থাকবে বছরটি। দীর্ঘ ১৬ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকার পর এক অবিস্মরণীয় গণঅভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। জুলাই অভ্যুত্থান বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে চিনিয়েছে। তারুণ্যের জয় হয়েছে এই বিপ্লবের মাধ্যমে। এই বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান। একজন আবু সাঈদের মতো সাহসী যুবকের বুলেটের সামনে বুক পেতে আত্মদানের কথা জাতি কখনোই ভুলবে না। স্বৈরাচারের বুলেটে প্রাণ ঝরেছে মুগ্ধ’র মতো আরো অনেক তরুণের। এইসব বীর তরুণদের বুকের রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর অন্যরকম এক বাংলাদেশ দেখলো বিশ্ব।
তরুণরা জানান দিয়েছে, তরুণদের হাতে কোনো দিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ। স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতার স্বাদ পেল বাংলাদেশ। এর সুফল নিজেদের কাঁধে তুলে নিলেন তরুণরাই। চারদিন সরকার ছাড়া, পুলিশ প্রশাসন ছাড়া চলেছে দেশ। কিন্তু পথ হারায়নি বাংলাদেশ। তরুণরা নিজ নিজ দায়িত্বেও জায়গা থেকে বাংলাদেশকে আগলে রেখেছে এই চারদিন। শিক্ষার্থীরা পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছিল। তরুণরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে। পুরো দেশের দেয়ালজুড়ে এঁকেছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি।
দেশের ক্রান্তিলগ্নে তরুণদের অনুরোধে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেন। নোবলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের পাশে আবারও সমর্থন যোগচ্ছেন। বিনিয়োগ করার আশ্বাস দিচ্ছেন। প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। যা গত ১৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশে বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। পুরো জাতি তাকিয়ে আছে ড. ইউনূসের দিকে। সবার প্রত্যাশা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নতুন বছরে জাতিকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিবেন। পুরোনো জঞ্জাল সংস্কার করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। এই প্রত্যাশা নিয়ে বছরের শেষ দিনটিকে বিদায়।