ঢাকা ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইসলামী শক্তির সম্ভাবনা কতটা

ড. মো. কামরুজ্জামান
ইসলামী শক্তির সম্ভাবনা কতটা

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। সারাদেশে ৩ লাখের বেশি মসজিদ রয়েছে। ৩ লাখ মসজিদে প্রায় ৬ লাখ ইমাম ও মোয়াজ্জিন রয়েছেন। প্রায় ২০ হাজার কওমি মাদরাসা রয়েছে। এই মাদরাসাগুলোতে প্রায় ২০ লাখ আলেম রয়েছেন। আলিয়া মাদরাসার সংখ্যাও ছোট বড় প্রায় ২০ হাজারের মতো। সেখানেও আলেমের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। দেশে অর্ধশতাধিক ইসলামী দল রয়েছে। উল্লেখযোগ্য পীরের দরবার সংখ্যা ১০০-এর কাছাকাছি। সব মিলিয়ে দেশে প্রায় ৪০ লাখ আলেম রয়েছেন। ফজরের আজান শুনে এদেশের মানুষের ঘুম ভাঙে। আবার ইশার আজান শুনতে শুনতে তারা ঘুমাতে যায়। সব মিলিয়ে দেশের সামগ্রিক পরিবেশ ধর্মীয় আবহে জড়িত। দেশের অধিকাংশ মানুষ তাই ধর্ম প্রিয়।

বাংলাদেশ দুইবার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ থেকে একবার এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আরেকবার। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীনের পেছনে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আবেগ কাজ করেছিল। এদেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করেছিল, ব্রিটিশ থেকে দেশ স্বাধীন হয়ে পৃথক একটি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হবে। দেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইসলামী ভাবধারায় প্রণীত হবে। ব্যাংক-বিমা, কোর্ট-কাছারি, অফিস-আদালত ইত্যাদি ইসলামের নীতিতে পরিচালিত হবে। কিন্তু তা হলো না। দেশ নায়করা সেকুলারনীতির ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করলেন। ফলে মুসলিম জনতা আশাহত হলো। বিশেষ করে, পাকিস্তানি শাসকরা পূর্ব বাংলার জনগণকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। ফলে ১৯৭১ সালে বীর বাঙালি পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে বাধ্য হয়েছিল।

১৬ ডিসেম্বরে তারা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয়। ১৯৭১ থেকে ২০২৪-৫৩ বছর। দেশটি পরিচালিত হয়ে আসছিল ধর্মহীন নীতির ভিত্তিতে। বিশেষ করে ২০০৮ থেকে ২০২৪ সময়টি ছিল ভয়াবহ ইসলামবিরোধী নীতির বহিঃপ্রকাশ। তাদের জুলুম ও ফ্যাসিবাদী নীতি পাকিস্তান ও ব্রিটিশদের পেছনে ফেলে দিয়েছিল। আর এ ফ্যাসিবাদের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন শেখ হাসিনা। হাসিনা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছিলেন। শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছিলেন। তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের চরিত্রকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিল শেখ হাসিনার শিক্ষা নীতি। পৌত্তলিকতার প্রতি তার ছিল প্রবল আগ্রহ। পাঠ্যবইয়ের পাতায় পাতায় ছিল নানা ধরনের মূর্তির ছবি। গুম, খুন ও রক্তের নেশা ছিল তার প্রবল। তার হৃদয়টি ছিল নিষ্ঠুরতা, হিংস্রতা এবং পরশ্রীকাতরতায় ভরা। তার হিংস্রতা চরিতার্থ করতে তৈরি করেছিলেন আয়না ঘর। আয়না ঘর ছিল মাজলুমের আর্তনাদে ভরা এক বিভীষিকাময় জাহান্নাম। ছিল এক ভয়ানক টর্চার সেল। ধর্মপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক মানুষকে এখানে তিলে তিলে হত্যা করা হতো। শুধু আয়না ঘরই নয়। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চল এক একটি আয়না ঘরে পরিণত হয়েছিল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত