বাংলাদেশ কোনো না কোনো ইস্যুতে সরকারের পতন ঘটে এবারও দেশে যে রাজনীতির পটপরিবর্তন হলো- তার পেছনে শুরুতে ছিল সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতির ‘কোটা’ বাতিলের দাবির আন্দোলন। যদিও দেশের অধিকাংশ জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল লোক দেখানো। আসল উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচার সরকারের পতন। এই কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মসনদ তছনছ করে ফেলল। প্রাণ বাঁচাতে তিনি আশ্রয় নিলেন ভারতে। এতদিন তার তেমন সমালোচনাও করা যায়নি। তবে তার নামের আগে একটা বিশেষণ যোগ হয়েছে ‘ফ্যাসিস্ট’ বা ‘স্বৈরাচার’। দেশের ছাত্র-সমাজের আড়ালে আওয়ামী লীগবিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তি কৌশলে তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই স্বৈরাচার উপাধি দেয়। এর পেছেনের গল্পটাও অবশ্য সবার জানা। তবে লেখার স্বার্থেই সেটা আবার সামনে আনতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন একজন সাংবাদিক। এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন শেখ হাসিনা। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন- মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা (চাকরি) পাবে না তো, রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? তার এই বক্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ হন আন্দোলনরতরা। তারা রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তারা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে, আমি কে/ রাজাকার, রাজাকার/ কে বলেছে, কে বলেছে/ স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ অবস্থা বেগতিক দেখে নমনীয় হন শেখ হাসিনা। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। হাইকোর্টও প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগে ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিল করে মাত্র ৭ শতাংশ রেখেছিলেন। যদিও শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আন্দোলনের বারুদ জ্বলতে শুরু করেছে পুরোদমে। এরই মধ্যে পুলিশের গুলিতে রংপুরে মারা যান আবু সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী।
আন্দোলন বেগবান হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রায় সারাদেশেই আন্দোলনকারীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। প্রায় হাজার খানেক তাজাপ্রাণ ঝরে যায়। আহত ও পঙ্গু হয় অনেক মানুষ। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের এবং সরকারের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ৩ হাজার সরকারি কর্মচারীর তাজাপ্রাণ ঝরে যায়। অবশেষে গদি ছেড়ে চলে যান শেখ হাসিনা। সরকারি কর্মচারীর সন্তানদের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগে কোটা সুবিধা নিয়ে কখনোই কোনো ধরনের আন্দোলন সংগ্রাম হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাতি-পুতিরা মামলা করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগে কোটা চেয়ে মামলা করে রায় পেয়েছে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের কারণে সরকার ৭ শতাংশ কোটা রেখে একটি পরিপত্র জারি করেন। কিন্তু যে সকল অধিদপ্তর পরিদপ্তর এর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সন্তানদের বিশেষ কোটা রয়েছে- সেগুলো কোন পরিপত্র দ্বারা বাতিলের কোনো সুযোগ নেই এবং সরকারের বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠানসহ এমন কিছু বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন সেনাবাহিনী, পুলিশ, বর্ডারগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, রেলওয়েসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সন্তানের নিয়োগে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ভর্তির জন্য বিশেষ কোটা সুবিধা দীর্ঘদিনের। কর্মচারীরা যে সামান্য বেতন পায় তা দিয়ে তাদের সন্তানদের ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করানো প্রায় অসম্ভব। সেই কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্মলগ্ন থেকে কর্মচারীর সন্তানদের কোটা সুবিধা দিয়ে পরিবারকে স্বাবলম্বী করে আসছে। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সিন্ডিকেট নিয়োগ বাণিজ্য করতেই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সন্তানদের কোটার দিকে কালো বিড়াল চক্রের মতো থাবা বসিয়েছ। কোটাবিরোধী আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক এবং পিএসসি’র নিয়োগ বাণিজ্য কোটার অবসান কি করতে পেয়েছেন; বিষয়টি তেমন নয়। এখনও তাদের কোটা বহাল আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল; বর্তমান সরকার এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোটা আছে এবং থাকবে। প্রতাপশালীদের এই কোটা কখনোই বাতিল হবে না আর কেউ তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামও করতে সাহস পাবেও না।
উদাহরণ হিসেবে জনপ্রশাসনের কথাই বলি। সেখানে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর পেছনে রয়েছে সংস্কার কমিশন প্রধান মুয়ীদ চৌধুরীর একটি বক্তব্য। তিনি বলেছেন, উপ-সচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ কোটা থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ প্রশাসন এবং অন্যদের ২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করতে চান। তাদের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মাঠের বাস্তবতা, অর্জিত জ্ঞান, অন্তদৃষ্টি দিয়ে নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিকদের সহায়তা করতে পারেন। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মাঠপ্রশাসনের সামগ্রিক কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী জায়গা সচিবালয়ে আসেন। স্বাভাবিক কারণেই তাদের উপ-সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ কোটা যৌক্তিক। তাছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান যে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছেন; সেখানে কী কোটা নেই? অবশ্যই আছে। কেননা, কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক নিপীড়ন নির্যাতন আর স্বৈরশাসনের কারণে অতিষ্ঠ জনগণের আবেগকে পুঁজি করে সরকার পতনের প্রকাশ্য নেতৃত্বে থাকা ছাত্র নেতাদের থেকে ছাত্র কোটা’য় তিনজন উপদেষ্টা রয়েছেন (ছাত্র)। তারা হলেন- নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ। তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের উপদেষ্টা করা হয়েছে। আবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এনজিও কর্মকর্তাকেও উপদেষ্টা করা হয়েছে। একটি বিশেষ পত্রিকার লেখক কলামিস্টকেও উপদেষ্টা করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সাথে সুসম্পর্ক ও আঞ্চলিকতার কারণেও অনেকে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন। তারাও কিন্তু কোটারই অংশ! অন্যদিকে সরকারি সকল নিয়োগে সচিব, মন্ত্রী, এমপি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের স্লিপে মেধা তালিকার নামে টাকার কোটায় তাদের পছন্দের লোকজনকে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকা এবং তাদের কোটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কোটা। এই কোটা বাতিলের ক্ষমতা কারো নেই। পিএসসি’র নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে মেধা তালিকার কোটা তো অদৃশ্য প্রভাবশালী কোটা এবং ভয়ংকর কোটা।
আবার আসি রাজনীতিতে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি তখন দেশের বাইরে ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতেই তাকে দলের কাণ্ডারি করা হয়। ওই সময় কী তার চেয়ে যোগ্য বিচক্ষণ ও পোড় খাওয়া নেতা ছিলেন না? তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী কী শেখ হাসিনার চেয়ে কম যোগ্যতা সম্পন্ন? না। তাহলে? তাকে দলের সভাপতি করা হয় বঙ্গবন্ধুর মেয়ে হিসেবে, নেত্রী হিসেবে নয়। এটাকেও কোটাই ধরে নিতে হবে। এবার আসি বিএনপির কথায়। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর এক পর্যায়ে চেয়ারপারসন হন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। মওদুদ আহমেদ, বদরুদ্দৌজা চৌধুরীর মতো বর্ষীয়ান নেতা থাকতে তাকে কেন চেয়ারপার্সন করা হলো? এটাও কী কোটা নয়?
এখানেই শেষ নয়; খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হলো তার ছেলে তারেক রহমানকে। এখানেও কী কোটা অনুসরণ করা হয়নি? হয়েছে। কারণ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিককে কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়নি। জাতীয় পার্টিরও একই অবস্থা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেই মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলের চেয়ারম্যান (প্রথমে ভারপ্রাপ্ত ও পরে নির্বাচিত) হন তার ভাই জিএম কাদের। সেখানে কিন্তু অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নেতা ছিলেন। তারপরও তাদের কপালে চেয়ারম্যানের চেয়ার জোটেনি। এমনকি জেলা উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়েও রাজনৈতিক দলের পারিবারিক এবং টাকার কোটায় নমিনেশন এবং নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকে।
এবার দেশের বাইরে নজর দিতে চাই। ভারতের অন্যতম প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তার দলের নাম কংগ্রেস। তিনি আততায়ীর গুলিতে মারা যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হন তার ছেলে রাজীব গান্ধী; তখন তিনি টগবগে এক যুব। একই সঙ্গে তিনি দলেরও প্রধান হন। অথচ তখনও দলটিতে অনেক প্রবীণ নেতা ছিলেন। সেই রাজীব গান্ধীও আততায়ীর হাতে নিহত হন। পরে দলের প্রধান হন তার স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেস বিজয়ী হলেও তিনি প্রধানমন্ত্রী হননি। কারণ তিনি বিদেশি (তার জন্ম ইতালীতে) বলে সমালোচনা হতে থাকে। এখনও দলের প্রধান তিনি এবং তার ছেলে রাহুল গান্ধী পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা। এটাকেও কোটাই ধরে নিতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান ছিলেন। তার মৃত্যুর পর তার মেয়ে বেনজীর ভুট্টো রাজনীতিতে নাম লেখান। তিনিও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। আততায়ীর হাতে তিনিও নিহত হন। পরে তার স্বামী আসিফ আলী জারদারি দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং তার ছেলে... মন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি এখন পিপিপি প্রধান। এটাকেও কোটাই বলা চলে। দেশটির আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ এখন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরীফ এখন প্রধানমন্ত্রী। এটাকেও কোটা’ই বলা চলে। কারণ দলটির অনেক যোগ্য নেতা থাকা সত্ত্বেও তারা প্রধানমন্ত্রী বা দলের প্রধান হতে পারেননি। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রাজনীতির একই অবস্থা।
সুতরাং চাইলেই কোটা থেকে বের হওয়া যাবে না এবং নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে মেধা তালিকা নির্বাচিত’র কোটাও বন্ধ হবে না। সুষ্ঠু রেল পরিচালনায় বাংলাদেশ রেলওয়েসহ সকল বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা সংরক্ষণ করতেই হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর সন্তানদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে কোটার প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বহাল রাখতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে মতো কারিগরি পরিবহন সংস্থায় নিয়োগ দিতে হবে নিয়োগ পাওয়ার পূর্বেই অর্ধেক প্রশিক্ষিত পোষ্যদের মধ্য থেকে। কারণ রেলওয়ে একটি বিশেষায়িত কারিগরি পরিবহন সংস্থা। রেলওয়ের দৈনন্দিন মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও অপারেশন, সিগন্যাল ব্যবস্থা ও রেলপথ সচল রাখা, কোচের মেকানিক্যাল ও বৈদ্যুতিক মেরামত কাজ, ট্রেন পরিচালনা অপারেশন বিভাগসহ সকল বিভাগের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনবল প্রয়োজন।
বর্তমানে রেলওয়েতে দক্ষ জনবলের অভাবে রেলওয়ে সুষ্ঠু পরিচালনা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। মেধা বাণিজ্যের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার পূর্বেই অর্ধেক প্রশিক্ষিত রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারীর সন্তানদের সুকৌশলে তাদের চাকরি পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগে পিএসসি মেধাবী নিয়োগের নামে যে নিয়োগ বাণিজ্যের কোটা দীর্ঘদিন থেকে বহাল রেখেছে সেই কোটা কি কখনও বন্ধ হবে? বাস্তবতা হচ্ছে তা কখনোই বন্ধ হবে না। কোটা সুবিধা বাতিলের পূর্বে প্রতাপশালীদের কোটা বাতিল করতে হবে। মেধা না কোটা, মেধা, মেধা এই স্লোগানটা হচ্ছে মূলত অসাধু নিয়োগ দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক ও কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাণিজ্যের স্লোগান। সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও সন্তানদের প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলন সংগ্রাম এবং রাজনৈতিক দলের পারিবারিক কোটাপ্রাপ্ত সুবিধা গ্রহণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হতে হবে। আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলি রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কোথায় কোটা নেই?
সভাপতি, বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি