ডাকসু নির্বাচন : জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক দোলাচল
ইঞ্জিনিয়ার একেএম রেজাউল করিম
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ডাকসু নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে, জাতীয় নির্বাচনের আগে সম্পন্ন করার পক্ষে মতপ্রকাশ করেছে। অপরদিকে, ছাত্রদলসহ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন এই প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করছে। তাদের দাবি, জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু নির্বাচন হলে তা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। দুই পক্ষের এই বিরোধের পেছনে তাদের নিজ নিজ দলীয় স্বার্থ গভীরভাবে জড়িত। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচেটিয়া আধিপত্য হটিয়ে দেয় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছাত্র সংগঠনগুলো। কিন্তু ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির একসময় কৌশলগতভাবে ক্যাম্পাস থেকে সরে দাঁড়ায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নামেই ক্যাম্পাসে দখল বজায় রাখে শিবিরের অপ্রকাশিত অংশ। ফলে, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবিরের অঘোষিত নিয়ন্ত্রণে। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নির্বাচন-পূর্ব ডাকসু নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
ছাত্রদল অভিযোগ করছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু নির্বাচন হলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। এটি ছাত্রদলের জন্য অসম লড়াইয়ে পরিণত হবে। পাশাপাশি, ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারলে ছাত্রদলের জন্য ভোটের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ডাকসু নির্বাচনকে নিজেদের আধিপত্য আরো সুসংহত করার সুযোগ হিসেবে দেখছে। তারা বিশ্বাস করে, জাতীয় নির্বাচন-পূর্ব ডাকসু নির্বাচন তাদের পক্ষে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের এই দ্বন্দ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যে বিশাল ফাটল তৈরি করতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাস রাজনীতির এই অস্থিরতাবিরোধী পক্ষের জন্য অসুবিধা তৈরি করবে। তবে জাতীয় নির্বাচন-পূর্ব ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্তের ভার এখন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর ওপর।
কলামিস্ট, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ