একুশে বইমেলা আসলেই বইপ্রেমীদের মাঝে যে বিষয়টির আগ্রহ সবচেয়ে বেশি কাজ করে তা হচ্ছে নানা মত ও পথের লেখকদের নতুন নতুন বইয়ের প্রকাশ। ইসলামী ও ডানপন্থি লেখকদের পাশাপাশি মুক্তমনা এবং প্রগতিশীল লেখকদের বই এবং পদচারণা বইমেলার অন্যতম একটি আকর্ষণ। কিন্তু, যতদিন যাচ্ছে- সেই আগ্রহ এবং দৃশ্যে পরিবর্তন ঘটছে। যেসব কারণে এসব পরিবর্তন ঘটছে তার মধ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান অন্যতম। এমনিতেই মত, পোশাক এবং বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিয়ে লেখালেখি করেন- এমন সাহসী লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক কম। হুমকি, গুপ্ত হামলা ও প্রাণনাশের উচ্চ ঝুঁকি এসব বিষয়াদী নিয়ে গবেষণাধর্মী লেখা প্রকাশে বড় বাঁধা- সেটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। পরিবর্তিত বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার লেখকদের মনে জন্মানো শঙ্কা এবং বাঁধার গতি প্রকৃতি সমাজ ও রাষ্ট্রে কি প্রভাব ফেলছে- তা নিয়ে ভাবনার লোকেরও এখন অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলা একাডেমি ও একুশে পদক: ফ্যাসিবাদ, চাটুকারিতা এবং নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা। বাংলা একাডেমি, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, কিংবা শিল্পকলা একাডেমির মতো সম্মানজনক পুরস্কার আমাদের জাতির গর্ব। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই পুরস্কারগুলো বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এবং কাদের এই পুরস্কার দেয়া উচিত? ঘোষিত পুরস্কার স্থগিত করে অত্যন্ত খারাপ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বাংলা একাডেমি। কোনো পুরস্কারই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। এবারের পুরস্কার তো আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল। পুরস্কারপ্রাপ্তরা অযোগ্য, এরকম কথাও খুব একটা শোনা যায়নি, যেমনটি শোনা যেত আগের বছরগুলোতে। দুজনকে নিয়ে যে সমালোচনা ছিল তা লেখার নয়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার। এসব সমালোচনা যদি সইতে না পারেন তাহলে পুরস্কার ঘোষণা করলেন কেন? নাকি কতিপয় উগ্র অতি-বিপ্লবীর হুমকিতে ভয় পেয়েছেন? মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের মতো প্রাজ্ঞ এবং সাহসী মানুষের কাছ থেকে এরকম নতজানু আচরণ রীতিমতো অপ্রত্যাশিত। আপনার কিসের ভয়? চাকরি হারানোর ভয় করেন নাকি? আপনি তো বুড়িগঙ্গার জলে ভেসে আসেননি। প্রয়োজন পড়লে পদত্যাগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।
তবুও মব ভায়োলেন্সের কাছে মাথা নত করবেন না, এটাই তো প্রত্যাশিত ছিল। পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের যে এভাবে অপমান করলেন, সেই অধিকার কি আপনার আছে? এই লেখকরা কি আপনাকে পুরস্কারের জন্য ধরাধরি করেছিলেন? তেলের ড্রাম নিয়ে হাজির হয়েছিলেন? নাকি পুরস্কার ভিক্ষা চেয়েছিলেন? না, কোনোটিই করেননি। তাহলে অপমান করলেন কেন? তাদের আপনি মুখ দেখাবেন কী করে? সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীও এই অপমানের দায় এড়াতে পারেন না। আপনি জানিয়েছেন, বাংলা একাডেমি পুরস্কারের সঙ্গে আপনার মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
তাহলে পুরস্কার স্থগিত করার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করলেন কেন? উপদেষ্টা কতদিন থাকবেন? ফের তো ফিরে আসতে হবে আমাদের কাতারেই। জবাবদিহি করতে পারবেন তো? ২০১৭ সালে অধ্যাপক নিয়াজ জামানকে অনুবাদ শাখায় পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা আসার পর এই ধরনের মব ভায়োলেন্স তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগের অনলাইন সন্ত্রাসীরা। ‘বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে’ তাকে পুরস্কার গ্রহণের জন্য একাডেমিতে না যেতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তৎকালীন মহাপরিচালক। সেটাও এক ন্যক্কারজনক উদাহরণ ছিল। তখনও আমরা এর সমালোচনা করেছি। আওয়ামী অনলাইন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি। সেইসব আওয়ামীদের এখন খুঁজেই পাওয়া যায় না।
সেইসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের স্টাইলে আজকে যারা হঠাৎ বিপ্লবী সেজে মব ভায়োলেন্সের হুমকি দিয়ে পুরস্কার স্থগিত করতে বাধ্য করলেন এবং লেখকদের জন্য অপমানজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেন, এক বছর পর তাদেরও কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। মনে রাখবেন, সময় সবকিছু সুদে-আসলে ফেরত দেয়। আপনাদের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা জানানোর অধিকার অবশ্যই আপনাদের আছে। প্রতিবাদ করার অধিকারও নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু উগ্র কথাবার্তা বলে একাডেমি ঘেরাও করা এবং ভায়োলেন্সের ইঙ্গিত দেয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আজকের মহাপরিচালক দুই বছর পর থাকবেন না, সংস্কৃতি উপদেষ্টাও থাকবেন না, থাকবে না এই উগ্র অতি-বিপ্লবীরাও, কিন্তু ঘোষিত পুরস্কার স্থগিত করে যে ন্যক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি করলেন, তার ক্ষত রয়ে যাবে বহুকাল। বাস্তবতা হচ্ছে মুক্তমনা ও প্রগতিশীল লেখক- সমালোচক সবার জন্য বাধাগুলো বাংলাদেশে ক্রমেই বড় আকার ধারণ করছে।
এই বাধা এখন সমালোচনা ও ভীতি প্রদর্শনের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। অতীতের ন্যায় প্রগতিশীলদের মনে প্রাণনাশের ঝুঁকি তৈরি করছে। নিশ্চয়ই আমাদের স্মরণ আছে, ঢাকায় ২০১৫ সালে বইমেলা থেকে ফেরার পথে মুক্তমনা লেখক হিসেবে পরিচিত অভিজিৎ রায়কে জঙ্গিরা কুপিয়ে হত্যা করেছিল।
সেবছর অক্টোবরে আরেকটি জঙ্গি হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন লেখক রণদীপ বসু। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীদের হাতে ধারাবাহিকভাবে অনেক মুক্তচিন্তক হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারের চলমান সময়ে মুক্তমনা লেখকরা কতটা নিরাপদ সে প্রশ্ন এখন বিশ্বব্যাপি ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেক লেখক ও বিশ্লেষক বর্তমান সরকার ও সময়কে মুক্তমনা লেখকদের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ মনে করছেন না। এমনকি কেউ কেউ এখনকার পরিস্থিতিকে আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করছেন? ব্যক্তিগত আলাপে অনেক লেখক আমাকে জানিয়েছেন, এখন আরো বেশি আতঙ্ক তাড়িয়ে বেড়ায় তাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশে থাকা মুক্তচিন্তার দুজন লেখক সম্প্রতি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ ও মুক্তচিন্তক মানুষদের হত্যার হুমকি সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছে তাদের জীবনযাত্রা। প্রাণভয়ে কোনো কোনো লেখক দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন? দেশে যারা আছেন অনেকে নিজের অবস্থান জানাতে আতঙ্কিত। অনেকে বলছেন, ‘মুক্তচিন্তা ও তা প্রকাশের স্বাধীনতা এখন বাস্তবিকই রুদ্ধ। আপাত কোনো আলোর চিহ্ন তাদের চোখে পড়ছে না। এমনকি তারা বলছেন-নির্ভয়ে লেখার স্বপ্ন দেখাও এক ধরনের যুদ্ধ- এটাই বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা। ধর্মীয় মৌলবাদের বিপক্ষে লেখার কারণে বাংলাদেশে মৌলবাদীরা বরাবরই চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়। ফলশ্রুতিতে তারা মুক্তমনা লেখকদের উপর নির্মম হামলা করে, সুযোগ পেলে হত্যা করে। অতীতে একাধিক মুক্তচিন্তক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা এসবের উদাহরণ। যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক, নাস্তিক ও মুক্তচিন্তক লেখকদের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন প্লাটফর্ম ‘মুক্তমনা’র একজন সম্পাদকের নাম সবাক পাখি। আমরা অনেকেই তাকে চিনি। তার মতে, বাংলাদেশে মুক্তচিন্তক লেখকদের হত্যার পেছনে আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থন ছিল? সবাক পাখির অভিযোগ, ‘আজীবনের জন্য তিনি মৌলবাদীদের টার্গেট। দেশে ফিরে গেলে মৌলবাদীরা সুযোগ পেলেই তাকে মেরে ফেলবে। ১৬ কোটি মানুষের মাঝে তার মৃত্যু কেবলই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে। এর বেশি কিছু না। আমরা জানি, বাংলাদেশে মৌলবাদীদের হাতে মুক্তচিন্তক লেখক ও ব্লগার হত্যার ঘটনা প্রথম শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজিব হায়দারকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে একে একে কট্টরপন্থিদের চাপাতির আঘাতে ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, সামাজিক অধিকারকর্মীসহ অন্তত ১০টি হত্যার ঘটনা ঘটেছিল, আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে? পূর্ববর্তী সংবিধানের অধীনেই তারা দেশ পরিচালনা করছেন- যে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বিদ্যমান আছে। কিন্তু, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও সব ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করছে কি না তা নিয়ে সহসাই প্রশ্ন উঠছে। যারা এই প্রশ্ন উত্থাপন করছেন- তাদের কাছে এমন কিছু চিত্র এবং তথ্য হয়তো রয়েছে- যা পর্যালোচনায় ড. ইউনুস সরকারকে ইসলামপন্থিদের মদদপুষ্ট মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। বর্তমান সরকারের ওপর মৌলবাদীদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও পর্যায়ক্রমে সরকারের ধর্মীয় মৌলবাদের দিকে ঝুঁকে পড়া অনেকটাই স্পষ্ট। এ প্রসঙ্গে ধর্মীয় সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সাথে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি অনেকেই উদাহরণ হিসেবে সামনে আনছেন। অনেকের মতে, ২০০৮ সালেও বাংলাদেশে একটি সহিষ্ণু সমাজ ছিল। কিন্তু এর পর থেকে যত দিন গেছে, লেখালেখির জন্য মুক্তমনাদের জন্য বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমাদের মতো মুক্তমনা লেখকদের লেখার বিষয়গুলো কেন কিছু শ্রেণির স্বার্থে চরম আঘাত হানে তা অনুমেয় নয়। ধর্মে নারীদের অসম্মানজনক অবস্থান, হত্যার নির্দেশনা, সমাজিক অস্থিরতা তৈরির জন্য ধর্মের ব্যবহার ও ঈশ্বরবিষয়ক কল্পনার সীমাবদ্ধতা নিয়ে লেখালেখিকে কেন মুক্তমনা লেখকদের ‘অপরাধ’ হিসেবে বিবেচ্য হবে? এসব বিষয়ে লেখালেখির কারণে লেখকদের ওপর এখন ক্রমাগত হুমকি আসাটা কি স্বাভাবিক? যদি স্বাভাবিক না হয়ে থাকে তাহলে কেন প্রগতিশীলদের হুমকি দেয়া হয় ? যারা ব্লগে লেখালেখি করেন, ব্লগ থেকে তাদের পোস্ট সরিয়ে ফেলার জন্য কর্তৃপক্ষের ওপর বিভিন্ন পক্ষ থেকে চাপ বাড়ানোর সংবাদও পাচ্ছি বিভিন্ন মহল থেকে। তারপরও মুক্তমনা অনেক লেখক লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই সাহস, সংগ্রাম ও আপসহীনতাকে সুরক্ষা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলেই আমি মনে করি? সাদাত হোসাইন আমার পরিচিত ও আমার খুবই ভালো বন্ধু। তিনি খুবই ভালো মনের মানুষ, তিনি চমৎকার গল্প লেখেন, তার সাথে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে, বই-গল্প নিয়ে, তার লেখা নিয়ে, তার প্রথম লেখালেখি কীভাবে শুরু হয়েছিল। এক আলোচনা সভায় তার এ লেখক জীবনের গল্পটা শোনার সুযোগ হয়েছিল। যা-ই হোক এবার আসি আসল কথায় সাদাত হোসাইনের নতুন দুইটা বই বের হয়েছে, শঙ্খচূড় প্রথম খণ্ড ও শঙ্খচূড় দ্বিতীয় খণ্ড, এই দুটি বই প্রকাশ পেয়েছে। পাওয়া যাবে দুইটা প্রকাশনীতে অন্যপ্রকাশ- রকমারি ও বইমেলায়। ফেব্রুয়ারি মাসে একুশের বইমেলাতে আরো কি নতুন বই আসছে সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, বাংলাদেশে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রথম অভিযান হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। পরবর্তীতে এরকম বেশ কয়েকটি অভিযানে অনেকগুলো গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে। যদিও সব সরকার সব সময় দেশে জঙ্গিদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে এবং রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিরা গোপনে ছাড়া পেয়ে যায়। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ হয়তো আবার চোখের আড়ালে চলে যাবে। কিন্তু, মুক্তমনা লেখকদের জীবনের উপর থেকে ঝুঁকি চলে যাবে না। আজীবনের জন্য মুক্তমনা লেখকরা উগ্রবাদীদের প্রধান টার্গেটে থাকার আশঙ্কা আছে। নিশ্চয়ই আমাদের স্মরণ আছে, রাজনৈতিক কারণেই শেখ হাসিনা হেফাজতে ইসলামের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছিলেন, যে হেফাজত তার ছবিসহ ব্যানার নিয়ে মিছিল করে শাস্তি দাবি করেছিল। প্রতিপক্ষ বিএনপিকে দুর্বল করার কৌশল হিসেবেই মৌলবাদীদের সাথে শেখ হাসিনা তখন এই ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছিলেন। হেফাজতের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে কিছু নাস্তিক ব্লগারের মৃত্যু অথবা দেশ ছাড়ার ঘটনা হাসিনার ক্ষমতায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। কারণ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে নাস্তিকদের মৃত্যু ভোটের দিক থেকে সরকারকে কোনো চাপে ফেলে না বলেই ধারণা করতেন শেখ হাসিনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা ধর্মীয় উগ্রবাদ, পশ্চাদপদতা, অসহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখি করেন, বই লিখেন, কলাম লিখেন- সরকারের উচিত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। একই সাথে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করাও সময়ের দাবি?
এ বিষয়ে খুব দ্রুতই সরকারের সদিচ্ছা দৃশ্যমান হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক: নারী অধিকার কর্মী ও নির্বাসিত লেখিকা।