বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সাধক সুলতানুল আউলিয়া, কুতুবুল আকতাব, গওছে জামান, আরেফ বিল্লাহ, হযরত শাহ্ ছুফি আলহাজ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রা.) ছিলেন বাঙালি মুসলমানের অহংকার ও তার কালের আলোকিত পুরুষ। তিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক, প্রখ্যাত সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক, দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক ও আধ্যাত্মগুরু।
ইংরেজ শাষণাধীনে মুসলমানদের সার্বিক জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। সমাজের সর্বক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে পড়ে। সে সময়ে তিনি ছিলেন বাঙালি মুসলমানদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, সমাজ ইত্যাদি সার্বিক জীবনে পুনর্জাগরণের অগ্রদূত।
সাতক্ষীরা জেলার (তদানীন্তন খুলনা জেলা) নলতা শরিফে ১৮৭৩ সালে ডিসেম্বরের কোনো এক শনিবার প্রত্যুষে হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের বহু পূর্ব হতে এ মহান সাধকের আগমন বার্তা পৌঁছেছিল। তার পিতা মুনশী মো. মফিজ উদ্দীন একজন ধার্মিক, ঐশ্বর্যবান ও দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। তার পিতামহ মো. দনেশও একজন ধর্মপ্রাণ ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন।
হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ছিলেন পিতামহের একমাত্র পুত্রের জ্যেষ্ঠ সন্তান। ফলে তার শিক্ষার জন্য পিতা ও পিতামহের আপ্রাণ চেষ্টা ও আগ্রহ ছিল। তার বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ না হতেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। ১৮৮১ সালে তিনি বর্তমান দ্বিতীয় শ্রেণির সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একটি রুপার মুদ্রা পুরস্কার পান।
তিনি নলতা মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয় হতে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ ভাগ অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি টাকী গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে চতুর্থ (বর্তমান সপ্তম) শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৮৮৮ সালের শেষভাগে কলকাতায় লন্ডন মিশন সোসাইটি ইনস্টিটিউশনে সেকেন্ড ক্লাসে (বর্তমান নবম শ্রেণিতে) ভর্তি হন এবং তিনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৮৯০ সালে কৃতিত্বের সাথে এন্ট্রান্স (বর্তমান এসএসসি) পরীক্ষয় উত্তীর্ণ হন ও বৃত্তি লাভ করেন।
তিনি হুগলি কলেজ থেকে ১৮৯২ সালে এফএ (বর্তমানে এইচএসসি) এবং ১৮৯৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে সাফল্যর সাথে বিএ পাস করন। ১৮৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দর্শন শাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
চাকরি জীবন ও শিক্ষা বিস্তার : হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ১৮৯৬ সালের ১ আগস্ট রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের ‘সুপার নিউমারারী’ টিচার হিসাবে যোগদান করেন। তিনি অক্টোবর ১৮৯৬ থেকে মার্চ ১৮৯৭ পর্যন্ত ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ী মহকুমার স্কুল সাব-ইন্সপেক্টর পদে অতিরিক্ত ডেপুটি ইন্সপেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক বছরের মধ্যেই তিনি পদোন্নতি পান বকেরগঞ্জ জেলার ডেপুটি ইন্সপেক্টর পদে। একাধিকক্রমে ৭ বছর তিনি বরিশালে অবস্থান করেন। ১৯০৪ সালে তিনি Subordinate Educational Service Provincial Educational Service -এ প্রবেশ করেন। তিনিই প্রথম Inspecting Line থেকে Teaching Line -এর জন্য মনোনীত হন। ১৯০৭ সালে তিনি চট্টগ্রামের ডিভিশনাল ইন্সপেক্টর পদে নিযুক্ত হন। ১ এপ্রিল ১৯১২ সালে প্রেসিডেন্সি ডিভিশনের Additional Inspector পদে নিযুক্ত হন তিনি। ১৯১৯ সালে তিনি আবার চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় ইন্সপেক্টর পদে বদলি হন। ১৯২৪ সালের ১ জুলাই তিনি Assistant Director of Public Instruction for Muhammadan পদে নিযুক্ত হন। এবং দীর্ঘ পাঁচ বছর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এই দায়িত্ব পালন করেন। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর দীর্ঘ চাকরি জীবনে সম্পূর্ণটাই কেটেছে শিক্ষা বিভাগে।
তার এই দীর্ঘ সময়ের দিনগুলো ছিল বর্ণাঢ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ ও কর্মবহুল। এখানে ছিল মেধা, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সাফল্যের সমাহার। একজন সাধারণ শিক্ষক থেকে শিক্ষা বিভাগের সর্বোচ্চ পদে আসন গ্রহণ- পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠার এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমা ছিল সত্যিই অনন্য।
অফিসের প্রতিটি দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করাকে তিনি ধর্ম পালনের অংশ হিসাবে মনে করতেন। তিনি যখন যেখানে যে দায়িত্বে থাকতেন সে অঞ্চলের শিক্ষা প্রসারের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতেন।
পাশাপাশি সমাজ সংস্কার তথা সমাজের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিও তিনি ছিলেন সচেষ্ট। আধ্যাত্মচর্চা ও আধ্যাত্মিক জীবন-যাপনের প্রতি বাল্যকাল থেকেই তার প্রবল আকর্ষণ লক্ষ্যণীয়। তিনি রাজবাড়ীর অতিরিক্ত ডেপুটি ইন্সপেক্টর থাকাকালীন হেঁটে মফস্বলে স্কুল পরিদর্শন করতেন।
কখনও কখনও তাকে রমজান মাসে ২০ মাইল পর্যন্ত হাঁটতে হয়েছে। তিনি রাজশাহীতে অবস্থানকালে মুসলমান ছাত্রদের শিক্ষার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেন। তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে সংগ্রামের মধ্যমে মুসলমান ছাত্রদের জন্য দ্বিতল ছাত্রাবাস ‘ফুলার হোস্টেল’ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
তারই প্রচেষ্টায় রাজশাহীতে মাদ্রাসা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর চাকরি জীবনের একটি বড় অধ্যায় কেটেছে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় ইন্সপেক্টর হিসেবে। চট্টগ্রামের দায়িত্বভার গ্রহণ করার কিছুদিনের মধ্যেই বিভাগীয় কমিশনারের প্রস্তাব অনুসারে সদরের সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোর আবশ্যকতা অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠিত হয়। তিনি ছিলেন সেই কমিটির সেক্রেটারি।
এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করে তিনি কমিটির রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। বিভাগীয় কমিশনার তার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে বেতন বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করেন। তার পদের গুরুত্ব বিবেচনা করে মধ্যবর্তী দু’টি গ্রেড অতিক্রম করে বেতন ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় উন্নীত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট ও আন্তরিক। কর্তৃপক্ষও ছিল তার প্রতি আস্থাশীল। এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগে যে অর্থ ব্যয় হতো অন্য সব বিভাগে সে অর্থ ব্যয় হতো না। তার প্রচেষ্টর ফলে চট্টগ্রাম বিভাগে মুসলিম শিক্ষার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়।
শিক্ষা সংস্কার ও শিক্ষানীতি প্রণয়ন : মহামনীষী হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্তি বাংলার মুসলিম ইতিহাসে এক নতুন মাইল ফলক। এই দায়িত্ব প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে মুসলিম শিক্ষার উন্নতি ও প্রসারের গুরু দায়িত্ব তার উপর আর্পিত হয়। তিনি ও তার মেধা, বুদ্ধিমত্তা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
মুসলিম শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা ও অনাগ্রহ দূরীকরণে এবং অগ্রগতি সাধনের অনুকূলে উচ্চ পর্যায়ে নীতি নির্ধারণে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। নতুন দায়িত্বে যোগদানের পরপরই তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত স্কিমসমূহ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কলিকাতায় মুসলিম ছাত্রদের জন্য একটি স্বতন্ত্র কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মধ্যই মুসলমানদের জন্য একটি স্বতন্ত্র কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামিয়া কলেজ। ইসলামিয়া কলেজ ছাড়াও তিনি বহু স্কুল, কলেজ ও হোস্টেল প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুল। ১৯২৮ সালে মোসলেম এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল গার্লস কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার অবদান প্রশংসনীয়। সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে অত্যধিক কাজের চাপের মধ্য দিয়েও তাকে নীতি নির্ধারণ এবং বিভাগীয় মিটিংসহ প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩০৯টি বিষয় নিষ্পত্তি করতে হত। পাঁচ বছরের মধ্যে এদেশের শিক্ষা বিভাগের বৈপ্লবিক সংস্কার সাধিত হয়।
এই মহামনীষীর উল্লেখযোগ্য সংস্কার সমূহ নিম্নরূপ : এক. তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার রীতি প্রচলিত ছিল। অনেকের মতে সাম্প্রদায়িকতা বিদ্যমান থাকায় হিন্দু ও মুসলিম পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব হতো। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর প্রচেষ্টায় প্রথমে অনার্স ও এমএ পরিক্ষার খাতায় নামের পরিবর্তে ক্রমিকনং (Roll No) লেখার রীতি প্রবর্তিত হয়। পরবর্তিতে আইএ এবং বিএ পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর নাম লেখার রীতি রহিত করা হয়। দুই. সে সময় হাই ও Intermediate মাদ্রাসা থেকে পাস করে ছাত্ররা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেত না। উক্ত মাদ্রাসাদ্বয়ের শিক্ষার মানউন্নয়ন করেন হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)। ফলে মাদ্রাসা থেকে পাস করা ছাত্রদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়। তিন. তৎকালীন সব স্কুল-কলেজে তিনি মৌলভির পদ সৃষ্টি করেন এবং পণ্ডিত ও মৌলভির বেতনের বৈষম্য রহিত করেন। চার. তখন উর্দুকে Classical Language হিসাবে গণ্য করা হতো না। ফলে পশ্চিমবঙ্গের উর্দুভাষী ছাত্রদের অসুবিধা হতো। তারই প্রচেষ্টায় উর্দু সংস্কৃতির স্থান অধিকার করে।
পাঁচ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার খসড়া বিল সিনেটে উপস্থাপিত হলে দারুণ বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে তা বিবেচনার জন্য একটি স্পেশাল কমিটি গঠিত হয়। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) উক্ত কমিটির একজন সদস্য ছিলেন এবং যতদূর সম্ভব তিনি এর আবশ্যকতা সমর্থন করেন। সরকার মুসলিম শিক্ষার ভার হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর হাতে ন্যস্ত করেন।
ফলে বহু মক্তব, মাদ্রাসা, মুসলিম হাইস্কুল এবং কলেজ তারই তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও অমুসলিম স্কুলে মুসলিম শিক্ষকের নিযুক্তি এবং অন্যান্য সরকারি বিভাগের মুসলিম কর্মচারী নিয়োগও তার হাতেই ন্যস্ত ছিল। এই সুযোগে স্বতন্ত্র মক্তব পাঠ্য নির্বাচন ও মুসলিম ছাত্রদের শিক্ষার জন্য একমাত্র মুসলিম লেখকের প্রণীত পুস্তক প্রচলনের নিয়ম প্রবর্তন করেন এবং গভর্নমেন্টের অনুমোদন নেন।
প্রত্যেক মুসলিম বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয় এবং প্রত্যেকের জন্য মুসলিম রচিত পাঠ্যপুস্তকের ব্যবহার প্রচলন হয়। এসময় মখদুমী লাইব্রেরি, প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি ও পরে ইসলামিয়া লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সাত. মুসলিম ছাত্রদের জন্য বৃত্তির ধারা নির্দিষ্ট হয়। বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির বৃত্তি বণ্টনের পূর্বে তার মতামত গ্রহণ করা হতো। আট. মুসলিম শিক্ষকদের পাঠ্যপুস্তক লেখার সুযোগ দেয়া হতো। নয়. মুসলিম ছাত্রদের জন্য বেকার হোস্টেল, টেলার হোস্টেল, কারমাইকেল হোস্টেল ও মুসলিম ইনস্টিটিউট কলকাতার বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) মনে করতেন ‘মনুষ্যত্বের বিকাশই শিক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য’। তার মতে প্রত্যেক মানুষের মধ্য লুকায়িত আছে বিপুল সম্ভাবনা।
শিক্ষার মাধ্যমে এই সম্ভাবনাকে বিকশিত করা সম্ভাব। শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তার প্রণীত ‘টিচারস ম্যানুয়েলে’ তিনি লিখেছেন, ‘মনুষ্যত্ব লাভ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য।
মনুষ্যত্ব লাভ করিতে হইলে শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক এই ত্রিবিধ বৃত্তির সম্যক অনুশীলন আবশ্যক।’ তিনি তার ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে বঙ্গীয় মুসলমান’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘শিক্ষার দুইটি উদ্দেশ্য- চরিত্র গঠন ও জীবিকা সংগ্রহ। শিক্ষাকে তিনি জাতীয় উন্নতির সর্বপ্রধান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে মনে করতেন। তিনি মনে করতেন, জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি এবং সম্পদ জনসাধারণের জ্ঞান। শিক্ষার মাধ্যমেই এই জ্ঞানের বিকাশ সম্ভব। হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) চেয়েছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে সম্পূর্ণ আধুনিক।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বশেষ আবিষ্কারের সাথে পরিচিত হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। একজন মানুষ আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠার মতো শিক্ষা পাবে। শিক্ষা সংক্রান্ত তার পরামর্শগুলো বর্তমান বাংলাদেশে শিক্ষা সমস্যা সমাধানের পথ নির্দেশ করতে এবং একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে পথিকৃত হতে পারে।