ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ

একেএম আতিকুর রহমান
জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ মাসের ১৩ তারিখ বিকালে চার দিনের এক সফরে বাংলাদেশে আসেন। তার এই সফর মূলত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য হলেও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তিনি আলাপ-আলোচনা করেন। ১৪ তারিখ সকালে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দুপুরের পর কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যান। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও ড. ইউনূস। সন্ধ্যার পর তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। পরের দিন জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন ছাড়াও তিনি নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওইদিন তার সম্মানে প্রধান উপদেষ্টার আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজেও তিনি যোগ দেন। ১৬ তারিখে সকালের দিকে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

দুই. ১৪ তারিখে জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রোহিঙ্গা শিবিরে চলে যান। সেখানে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে কিছুটা সময় কাটানো ছাড়াও তরুণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতিসংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়। তিনি রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বিভিন্ন কর্মসূচিও পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর তিনি এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে তিনি যেমন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন, তেমনি এক গভীর মানবিক সংকটে উপনীত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি যেমন বলেছেন, ‘তারা বাড়ি ফিরে যেতে চায়। মিয়ানমার তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়াই এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান।’ তেমনি রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘রাখাইনে সংঘাত এবং পদ্ধতিগত নিপীড়ন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবশ্যই যাদের সুরক্ষার প্রয়োজন, তাদের সহযোগিতা করতে হবে।’ জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ জাতিসংঘ মহাসচিব ২০২৪ সালের মানবিক সহায়তার তুলনায় ২০২৫ সালে ওই সহায়তা ৪০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি প্রসঙ্গে বলেন, এটি একটি নিরবচ্ছিন্ন বিপর্যয় হবে। তিনি বাংলাদেশে আশ্রিত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য বিশ্ববাসীর সাহায্য-সমর্থনের খুবই প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে চলমান বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং রাখাইনে জেনোসাইডের কথা তুলে ধরেন। মানবাধিকারের নৃশংস লঙ্ঘন থেকে বাঁচতে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে, সে কথাও তিনি বলেন। তার বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পাশাপাশি অনেক মানবিক ও উন্নয়নমূলক এনজিও বিশাল তহবিল হ্রাসের ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ায় তার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে মানুষের ওপর, যারা সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। সাহায্য তহবিল কাটছাঁট হলে মানবিক ক্ষতি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়া পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়ব না। পরিস্থিতি যতক্ষণ অনুকূল না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের পাশে না দাঁড়ায়, ততক্ষণ এই ইস্যুতে কথা বলে যাওয়ার আশ্বাস দেন।

আমরা জানি, রোহিঙ্গা শিবিরগুলো সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিশু, তরুণ, মহিলাসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সবাই রাখাইনে ফেরার প্রবল আকুতি ব্যক্ত করে। এছাড়া তারা রাখাইনে ফেরার আগ পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ আর কাজের সুযোগের বিষয়গুলো জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তুলে ধরে। অন্যদিকে মাথাপিছু রেশন মাসে সাড়ে ১২ ডলার থেকে ছয় ডলারে নেমে আসায় তাদের বেঁচে থাকাটাই যে কঠিন হয়ে পড়েছে, তা-ও তারা জানায়।

তিন. জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের কার্যক্রম শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ মার্চ। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, রোহিঙ্গা ইস্যু, বিশ্বে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা, আঞ্চলিক রাজনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে কথা বলেন। তিনি তার সরকারের গৃহীত সংস্কারপ্রক্রিয়া এবং সেসবের বাস্তবায়ন সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে ওইসব সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে জাতীয় নির্বাচন এ বছর, না আগামী বছর আয়োজন করা যাবে। প্রধান উপদেষ্টা ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ নিশ্চিত করার ব্যাপারে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইনে তাদের নিজেদের ভিটামাটিতে ফিরে যেতে পারে সে ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি রোহিঙ্গারা যত দিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন যাতে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা চান। জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানান। তিনি কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি।’ মানবিক সহায়তা কমানো একটি অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন যে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করলেও মানবিক সহায়তা হ্রাস করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব জানান যে তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ বৈঠকে ভূ-রাজনীতি, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা দিক নিয়েও আলোচনা হয়।

চার. ১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশ সফর করতে পেরে আনন্দিত বলে জানান। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এক বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বৃহত্তর পরিসরে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং সমৃদ্ধির ভবিষ্যতের জন্য জনগণের আশাকে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। তিনি বলেন, একটি ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা এবং ঐকমত্যে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। সবার জন্য একটি টেকসই এবং ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করে আপনাদের অবিচল অংশীদার হিসেবে জাতিসংঘের ওপর নির্ভর করতে পারেন।’ মিয়ানমারে লড়াই বন্ধ করা ও সেখানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারের সব প্রতিবেশী দেশের চাপ বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি বলে জাতিসংঘ মহাসচিব উল্লেখ করেন। তিনি এটি শুধু বাংলাদেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সম্মিলিতভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। আর এ জন্য প্রথম ধাপে সহিংসতা বন্ধ করে একই সঙ্গে এমন কার্যকর ব্যবস্থা গঠন করা, যাতে মিয়ানমারে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাধানের পথ সুগম হয়, যা স্বাভাবিকভাবেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনকে সহজ করবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরো বলেন, ‘একই সঙ্গে আমাদের মিয়ানমারের ভেতরে মানবিক সহায়তা জোরদার করতে হবে, যাতে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।’ পাঁচ. ১৫ মার্চ বিকেলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তারা পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সম্ভাবনা এবং উদ্বেগ নিয়ে খোলাখুলিভাবে কথা বলেন। অপতথ্য আর বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। প্রতিনিধিদলের কথায় দীর্ঘদিনের দুঃশাসনের ফলে কাঠামোগত পরিবর্তন হলেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ার উল্লেখ করে নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের জনগণের এসব অংশের লোকজনের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার বিষয়গুলো উঠে আসে। জাতিসংঘ মহাসচিব তাদের কথা অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে শোনেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জটিল। তবে ব্যবসা, বিনিয়োগের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।’ তবু বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কিছু বিষয়ে তার আরো জানা প্রয়োজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি যে জটিল, তিনি এবার বাংলাদেশ সফরে এসে মতবিনিময়ের পর বুঝেছেন। তাই তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে।

ছয়. রোহিঙ্গা ইস্যুটির দুটি দিক বেশি গুরুত্বপূর্ণ- তাদের জন্মভূমিতে সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন এবং প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা। বাস্তবতার ভিত্তিতে বলতে গেলে এই দুই ক্ষেত্রই সংকটে পড়েছে। প্রত্যাবাসন হয় হয় করে সেই যে ঝুলে গেছে, সেই জট খুব তাড়াতাড়ি খুলবে বলে মনে হয় না। মিয়ানমারের জান্তা সরকার, সর্বোপরি সেখানকার অভ্যন্তরীণ সহিংস পরিস্থিতি কবে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যাতে রোহিঙ্গাদের সঠিকভাবে প্রত্যাবাসন করা যাবে, তা কেউ বলতে পারবে না। অতএব আমাদের দ্বিতীয় সমস্যার দিকেই দৃষ্টি দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশের আশ্রয়ে যত দিন আছে, তাদের অসুবিধা না হয়। তবে এর অর্থ এই নয় যে, তাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা বন্ধ করে দিতে হবে। আমাদের একা নয়, বিশ্ববাসীকে নিয়েই এর সমাধান করতে হবে। তবে বর্তমান আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কতটুকু এগোতে পারবে সে প্রশ্নটি থেকেই যায়। যা হোক, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছি।’

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্ব বহন করে। অন্যদিকে তিনি নিজে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের চলমান ঘটনাগুলো যেমন দেখলেন এবং জানলেন, তা জাতিসংঘের বাংলাদেশ সম্পর্কে ভবিষ্যৎ সাহায্য-সহযোগিতার সমীকরণ নির্ণয়ে অবশ্যই সহায়ক হবে।

লেখক : সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত