ঢাকা সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যে রেলভ্রমণ

পূর্বপ্রস্তুতিতে ঘাটতি-দুর্বলতা নয়
ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যে রেলভ্রমণ

বিশ্বের যে কোনো দেশে রেলভ্রমণ অধিকতর সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আরামদায়ক। ফলে যাত্রীসাধারণ রেলভ্রমণ খুব পছন্দ করেন। এ কারণে সারা বছর ট্রেনের টিকিটের চাহিদা থাকে অত্যধিক। তবে উৎসব ঘিরে রেলের টিকিটের চাহিদা যায় বহুগুণে বেড়ে। কিন্তু দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেন চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে ঈদযাত্রায়। প্রথমত, ঈদ মৌসুমে টিকিট কেনা থেকে গন্তব্যে পৌঁছানোয় নানাবিধ দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ কিছু প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে কিন্তু তা যাত্রীদুর্ভোগ লাঘবে তেমন কাজে লাগে না। প্রতি বছরের মতো এবারও টিকিট ছাড়া ট্রেনে যাত্রী পরিবহন, অতিরিক্ত যাত্রী চাপ এবং শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আরো একটি অনুষঙ্গ যোগ হয়েছে রেলওয়ে গেটকিপাররা চাকরি জাতীয়করণ দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়ায়। ২৪ মার্চের মধ্যে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের ঘোষণা দেয়া না হলে ঈদযাত্রার প্রথম দিন থেকে সারা দেশে রেলপথ অবরোধ ও কর্মবিরতিতে যাবেন তারা। ফলে ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রেলপথে যাত্রীদের ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে কি না, তা নিয়ে এবার আরও বেশি শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ দিকে ৩০ মার্চের টিকিট বিক্রির মধ্য দিয়ে ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই টিকিট বিক্রি নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট ছাড়ার পর নিমেষে শেষ হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, ঈদে বাড়ি ফেরা উপলক্ষে ফেসবুকসহ সামাজিকমাধ্যমে বিভিন্ন পেজে টিকিট বিক্রির প্রচার চালাচ্ছেন কেউ কেউ। আর বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজনীয় টিকিট না পেয়ে অনেকে সমাজিকমাধ্যম থেকে চড়া দামে এসব টিকিট কিনছেন। যদিও বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে বলে দিয়েছে, রেলওয়ে অ্যাপস আর টিকিট করার নির্ধারিত ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে টিকিট কিনে প্রতারিত হলে এর দায় সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে নিতে হবে। আর ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নীতি নিশ্চিত করতে অন্যের টিকিটে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

প্রতি বছর ঈদযাত্রা উপলক্ষে টিকিটবিহীন যাত্রী ঠকানো, প্ল্যাটফর্মে টিকিট ছাড়া কাউকে ঢুকতে না দেয়া, তল্লাশিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রহরা থাকে। এরপরও যাত্রী চাপ ঠেকাতে ব্যর্থ হয় রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতি বছরই ট্রেনের ছাদ পর্যন্ত যাত্রীতে ঠাসা থাকে। এতে নিরাপত্তার অভাব, টয়লেট ও পানিসংকট এবং ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়ে যাত্রী দুর্ভোগ বাড়িয়ে তোলে।

যদিও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ ট্রেন চালু করা, অতিরিক্ত কোচ সংযোজন ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিবার যাত্রীচাপ সামাল দিতে না পেরে এসব ব্যবস্থা ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায় না। তাই ঈদে যাত্রীদের রেলভ্রমণ আরামদায়ক করতে অনলাইন টিকিটব্যবস্থা আরও উন্নত করা, ট্রেনের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়ানো ও কঠোরভাবে সময়সূচি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণে রেলের নজরদারিব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা দরকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত