ঢাকা বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মহাকাশে বিজ্ঞানের নতুন মাইলফলক

মো. তাহমিদ রহমান
মহাকাশে বিজ্ঞানের নতুন মাইলফলক

পৃথিবী হলো মানবজাতির আবাসস্থল। এই পৃথিবীর চারিদিক ঘিরে আছে অসীম মহাকাশ। সৌরজগতের কেন্দ্রে থাকা সূর্যসহ মহাকাশে এরূপ বহু নক্ষত্র রয়েছে। পাশাপাশি আছে চন্দ্রের মতো বিভিন্ন উপগ্রহ, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা প্রভৃতি। তাছাড়াও ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও ধূলিকণা থেকে শুরু করে আমাদের পৃথিবী এবং দূরদূরান্তের সব জ্যোতিষ্ক এবং দেখা না দেখা সব কিছু নিয়েই হলো এই মহাবিশ্ব। মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৮০ কোটি বছর আগে। মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে গ্যাস থেকে ফুটন্ত তরল, তারপর গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহ-উপগ্রহের কাঠামো লাভ করেছে। মহাবিশ্ব ও মহাকাশ নিয়ে মানুষের কৌতুহলের অন্ত নেই। মহাবিশ্বের রহস্যের কি তল মেলে কখনও? সেই প্রাচীনকালের মুনি-ঋষিদের খালি চোখে আকাশ পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে আজকের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ বা অতি ক্ষুদ্র কণাদের কর্মকাণ্ড দেখার মতো প্রকাণ্ড সব যন্ত্রপাতি দিয়ে মহাবিশ্বের অসংখ্য অজানা রহস্যের সন্ধান জারি রয়েছে আবহমান কাল ধরেই। ক্ষুদ্র কণার জগত থেকে অতি দূর নক্ষত্রমণ্ডলী, মহাবিশ্বের হরেক বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়েই চলেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের এই সন্ধান যে কবে শেষ হবে তার কোনো ঠিকানা নেই। আকাশের দিকে তাকালেই মনে হয় আমরা একা নই। পুরো মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ আচরণে দূর আকাশ থেকে মিটিমিটি করে হাসছে। যারা মহাকাশ নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে শুধুমাত্র তাদেরই শ্রেষ্ঠ জিনিসটা দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত এই বিশ্ব? রহস্যময় মহাবিশ্বে বহু অজানা বিষয় রয়েছে যা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। মহাকাশের অনেক রহস্যই অধরা থেকে যায় পৃথিবীতে স্থাপিত সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপগুলোতেও। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে সেই অজানা রহস্যগুলোকে উন্মোচন করতে শুরু হয়েছে স্যাটেলাইট যুগ। বিজ্ঞানীরা মহাকাশে কৃত্রিম স্যাটেলাইট পাঠাতে শুরু করেন। শুরু হয় মহাকাশকে জানার নতুন পদ্ধতি। ১৯৯০ সালের ২৪ এপ্রিল মহাকাশে পাঠানো হয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। এর মাধ্যমে স্থাপিত হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের আরেকটি নতুন যুগ “স্যাটেলাইট টেলিস্কোপের যুগ”। মহাকাশের রহস্যের সন্ধানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে গত বছর ৫ জুন বুচ উইলমোর এবং সুনীতা উইলিয়ামস নামক দুই মহাকাশচারী বোয়িং স্টারলাইনার স্পেসক্র্যাফেট চেপে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠ ত্যাগ করেছিলেন। এই মিশনের নাম ছিল ‘বোয়িং ক্রিউ ফ্লাইট টেস্ট’। সেখানে তাদের প্রধান কাজ ছিল টেক-অফ, ল্যান্ডিং এবং উড়ানের সময়ে ওই স্টারলাইনার স্পেসক্র্যাফেটর সার্বিক পারফরম্যান্স এবং তার ক্রিউ ইক্যুইপমেন্ট, স্পেসস্যুট এবং সিট পারফরম্যান্স পরীক্ষা করা। যাতে পরবর্তীকালে রেগুলার রোটেশন মিশনের যে সার্টিফিকেশন স্টারলাইনার পেয়েছে, তাকে রিয়েল টাইম ডেটা দিয়ে ভ্যালিডেট করানো যায়। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ডকিংয়ের সময়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, ম্যানুয়াল অ্যাবর্ট সিনারিওতে কমিউনিকেশন চেকআউট কীভাবে হবে, টেস্ট ম্যানুয়াল-অটোমেটেড নেভিগেশন এবং লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের পরীক্ষা করার দায়িত্বও ছিল সুনীতাদের। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের তাদের থাকার কথা ছিল আট দিন। বোয়িং কোম্পানির তৈরি মহাকাশযানে চড়ে সফলভাবে পৌঁছে গেলেও বিধি বাম হয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও হিলিয়াম গ্যাস নির্গমন সমস্যাজনিত কারণে ওই বোয়িং যানে মহাকাশচারীদের পৃথিবী পৃষ্ঠে ফেরানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মহাকাশে আটকে পড়ে নভোচারীরা। এ যেন এক রূপকথার গল্প! মহাকাশে আটকেপড়া সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোরকে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠানো হয় স্পেসএক্সের মহাকাশযান ক্রু নয় ড্রাগন ক্যাপসুল রকেট। স্পেসএক্সের ক্রু ৯ ড্রাগন ক্যাপসুল রকেটটি ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ০৩ মিনিটে ফ্লোরিডার নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে চারজন নভোচারীকে নিয়ে উড্ডয়ন করে। তারা হলেন অ্যান ম্যাকক্লেইন, নিকোল আয়ার্স, জাপানের মহাকাশ সংস্থার নভোচারী তাকুয়া অনিশি ও রুশ নভোচারী কিরিল পেসকভ।

তারা উইলিয়ামস এবং উইলমোরের স্থলাভিষিক্ত হবেন। অবশেষে টানা ৯ মাস মহাশূন্যে কাটানোর পর স্পেস স্টেশনকে বিদায় জানিয়ে পৃথিবীর পথে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোরসহ মোট চার নভোচারী। অন্য দুজন নভোচারী হলেন নাসার নিক হেগ এবং রাশিয়ান নভোচর আলেকজান্ডার গর্বুনভ। কিছুদিন আগে ড্রাগন যানে চড়ে তারা মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন। মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্কের পাঠানো স্পেস এক্স ড্রাগন ক্যাপসুল ক্রু নাইনে টানা ১৭ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে ১৯ মার্চ বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত প্রায় সাড়ে চারটে নাগাদ ফ্লোরিডার উপকূলের জলভাগে অবতরণ করে তাদের রকেট। দীর্ঘ ২৮৬দিন মহাকাশে অপেক্ষার পর শান্ত আটলান্টিকের ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় যখন সুনীতা উইলিয়াম এবং বুচ উইলমোর এর প্যারাসুট খুলে গেল ঠিক সেইসঙ্গে মহাবিশ্বের বুকে উন্মোচিত হলো মহাকাশ বিজ্ঞানের সাফল্যের নতুন মাইলফলক। নীল গগন থেকে সোজা নীল সমুদ্রে এলেন চার নভোচারী। ইলন মাস্কের স্পেস এক্সের তত্ত্বাবধানে ক্রু নয় এর মাধ্যমে মহাকাশ থেকে নভোচারীদের উদ্ধার করে অজেয় অসম্ভবকে সম্ভব করল নাসা। মার্কিন নৌবাহিনীর সহায়তায় সমুদ্রের গভীর থেকে ক্যাপসুল বের করা হয়। হাসিমুখে ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে এলেন সুনীতাসহ চার নভোচারী আর সেই হাসি দেখে প্রাণজুড়ানো স্বস্তিতে হেসে উঠল সমগ্র বিশ্ববাসী। জার্নাল অফ স্পেস মেডিসিনে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, মহাকাশে দীর্ঘ সময় যে সকল মহাকাশচারীরা কাটিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। গবেষকরা মহাকাশ অভিযানের আগে এবং পরে নভোচারীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে সেটি বিশ্লেষণ করেছেন। দেখা গিয়েছে মহাকাশচারীদের শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। এই কোষগুলো মানবদেহে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। কম মাধ্যাকর্ষণের কারণে মহাকাশচারীদের ইমিউন সিস্টেমের স্বাভাবিক ফাংশনকে প্রভাবিত করে। যার কারণে ঠান্ডা ও শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার মতো রোগে আক্রান্ত হতে হয় মহাকাশচারীদের। তার কারণেই পৃথিবীতে ফিরে আসার পরেও, মহাকাশচারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে মহাকাশ ভ্রমণ মহাকাশচারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে? গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত মহাকাশচারী দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানে গিয়েছেন পৃথিবীতে ফিরে আসার পর মহাকাশচারীদের মাথা ফুলে যায়, তাদের পেশী ও হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং তাদের শরীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে অনভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই পৃথিবীর সাথে মানিয়ে নিতে নভোচারীদের ৪৫ দিনের পুনর্বাসন কর্মসূচিতে রাখা হয়। মহাকাশচারীদের স্ট্রেন্থ, কন্ডিশনিং এবং রিহ্যাবিলিটেশন টিম মহাকাশচারীদের মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পর তাদের শরীরকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার জন্য একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেছে নাসা। অবতরণের পর মহাকাশচারীরা প্রোগ্রামের অংশ হয়ে ওঠেন। সপ্তাহে সাত দিনই মোট ৪৫ দিন ধরে দিনে দুই ঘণ্টার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রোগ্রামটি বিশেষভাবে প্রত্যেক মহাকাশচারীর ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য তৈরি করা হয়। দীর্ঘদিনের মহাকাশবাসের একঘেয়েমি কাটাতে বাড়ি থেকে পছন্দের খাবার সরবরাহ করা হয় মহাকাশচারীদের। বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে মহাকাশ থেকে বার্তাও পাঠান মহাকাশচারীরা। ভিডিও বার্তায় মহাকাশচারীরা বলেন ‘আমরা ভালো আছি, সুস্থ আছি। কেউ বেশি চিন্তা করবেন না’। এমনকী, মহাকাশে স্পেস স্টেশন থেকে আমেরিকার নির্বাচনে অবধি অংশগ্রহণ করেন তারা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সান্তা টুপি পরে ক্রিসমাসও পালন করেছিলেন তারা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখেছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও তার সঙ্গীরা। এভাবেই সাহস আর ধৈর্যে ভর করেই কেটেছে ৯টা মাস! ২৮৬ দিনের সুনীতার এই বন্দিদশা মহাকাশ বিজ্ঞানের অনেক নবদিগন্ত উন্মোচিত করবে। নাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই নয় মাসে মহাকাশে বসে বায়ো-নিউট্রিয়েন্টস নিয়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রমিসিং প্রজেক্টের পরীক্ষাও শুরু করেছেন সুনীতা উইলিয়ামস ও তার সঙ্গীরা। যেখানে তারা পরীক্ষা করেছেন উপকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া এবং অণুজীব নিয়ে, যাদের দিয়ে মহাকাশে বসেই আগামী দিনে ফ্রেশ নিউট্রিয়েন্ট বানানো সম্ভব হবে।বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই প্রজেক্ট সফল হলে, মহাকাশে লম্বা সময় গবেষণার জন্য যাওয়া অ্যাস্ট্রোনটদের রকেটে বাড়তি খাদ্যের বোঝা নিয়ে যাওয়ার সমস্যা মিটবে। খাদ্যের জায়গায় সঙ্গে অন্য গবেষণার যন্ত্রপাতি নিয়ে গিয়ে মহাকাশে থাকা অবস্থাতেই অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও মিনারেলস বানিয়ে নিতে পারবেন তারা। পাশাপাশি মাইক্রোবসদের জীবনচক্র নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করেছেন সুনীতা। সুনীতা উইলিয়ামস ও তার সঙ্গীদের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে একুশ শতকের মহাকাশ দৌড়ে প্রযুক্তি বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় নেমে পড়লো বহুজাতিক কোম্পানিগুলি। মহাকাশ দৌড়ের নানা ক্ষেত্রে কে প্রথম সফল হবে এই নিয়ে টানটান উত্তেজনায় কেটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী তিনটি দশক। ১৯৫৮খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৬৮খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মহাকাশ ঘিরে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে আমেরিকা ও রাশিয়া। মহাকাশে স্পুটনিক পাঠিয়ে রাশিয়া প্রথমে টেক্কা দিলেও দ্বিতীয় দফায় চাঁদের বুকে মানুষ পাঠিয়ে বাজিমাৎ করে আমেরিকা। পঞ্চাশ থেকে সত্তর দশকে প্রতিযোগিতা মূলত সীমাবদ্ধ ছিল তৎকালীন বিশ্বের এই দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে। প্রযুক্তি উন্নয়নের এই যুগে এসে মহাকাশ গবেষণায় তাদের সঙ্গে সমানভাবে উচ্চারিত হচ্ছে চিন, ভারতের, জাপান, ইউরোপের বহু দেশ, অস্ট্রেলিয়া এমনকি এশিয়া মহাদেশের সৌদি আরব ও ইরানের নাম। সেইসঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছে আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি বোয়িং এবং স্পেস এক্স। গত সত্তর বছরে প্রযুক্তি বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রায় ছয় হাজার রকেট উৎক্ষেপণের দ্বারা কমবেশি ছাপ্পান্ন হাজার উপগ্রহ বা সমতুল্য বস্তু পৃথিবীর চারিদিকে নানা কক্ষপথে ঘুরছে। নানা বিপদ ও আশঙ্কার মধ্যেও সুনীতা উইলিয়াম ও তার সঙ্গীদের পৃথিবীর পৃষ্ঠে প্রত্যাবর্তন মহাকাশ অন্বেষণের প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে তুলবে।

লেখক : প্রভাষক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ) নূরুল আমিন মজুমদার ডিগ্রি কলেজ, লাকসাম, কুমিল্লা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত