দিন যত যাচ্ছে দেশের স্বাস্থ্য খাতের অবকাঠামো তত সমৃদ্ধ হচ্ছে। এ খাতে বেড়ে চলছে সরকারি বরাদ্দ ও বেসরকারি বিনিয়োগ। জটিল রোগের চিকিৎসাও কমবেশি শুরু হয়েছে। এরপরও বিদেশমুখী রোগীর স্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের মাধ্যমে সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্য পূরণে স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতা ভিন্ন। দেশের চিকিৎসাসেবা রোগীদের আস্থা অর্জন করতে পারছে না। নানা অন্তরায় ও সংকটে প্রতিবছর অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে বিদেশমুখী হচ্ছেন। মূলত আস্থাহীনতার কারণেই এ খাতের নীতি-নির্ধারকরাও চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক দশকে হৃদরোগ, স্নায়বিক রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনি জটিলতা, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, উচ্চরক্তচাপ, আর্থ্রাইটিস এবং মানসিক অসুস্থতার মতো সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে। আক্রান্তরা ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করছে। এসব রোগের চিকিৎসায় শতাধিক মেডিকেল কলেজ, একটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ২০টি বিশেষায়িত হাসপাতালসহ নামিদামি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে সঠিক রোগ নির্ণয় না হওয়া ও সেবা অব্যবস্থাপনার রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
রোগীদের পর্যাপ্ত সময় দিতে চিকিৎসকদের আন্তরিকতা ও আচরণের ঘাটতিসহ অন্তত ২১ কারণে চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি অনেকে আস্থা রাখতে পারছেন না। ফলে ব্যয় মেটাতে সক্ষম রোগীদের বিরাট একটি অংশ ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও চীনসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছেন। এ সুযোগে বাংলাদেশি রোগীদের টার্গেট করে বিদেশের মেডিকেল ট্যুরিজমগুলোও চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা বাণিজ্য সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার চিত্র যাচাইয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের উদ্যোগে সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) একটি জরিপ করেছে। জরিপের তথ্য বলছে, মানুষ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। গত বছর ৫৪ শতাংশ মানুষ সরকারি হাসপাতাল থেকে কোনো সেবাই নেননি।