পুরো রমজান মাসজুড়ে দুয়েকটি সবজি ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম তুলনামূলক কম ছিল। তাতে ক্রেতারা স্বস্তিতে ছিলেন। তবে রমজান ও ঈদ শেষে বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। মাছের দামও অনেকটা বাড়তি। এমন পরিস্থিতে ক্রেতাদের মাঝে অস্বস্থি বিরাজ করছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে আলোকিত বাংলাদেশে গতকাল ‘সবজি ও মাছের বাড়তি দামে অস্বস্তিতে ক্রেতারা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকার আশপাশে, যা আগের তুলনায় প্রায় ৩০ টাকা বেশি। বাড়তি মাছের দামও। পরিস্থিতি এমন- এক কেজি পাঙাশ কিনতে ক্রেতার ২০০-২৩০ টাকা গুণতে হচ্ছে, যা ঈদের আগেও ১৮০-১৯০ টাকা ছিল। পাবদা, টেংরা, রুইসহ বেশিরভাগ মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। আগের চেয়ে নির্ধারিত দাম না বাড়লেও অনেক দোকানে সয়াবিন তেল নেই। যে কারণে অনেকে বোতলের গায়ের দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে উচ্চশ্রেণির মানুষের ভোগান্তি না হলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় তা দিয়ে তাদের চাহিদা মেটাতে কষ্ট হয়। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে, বাজার তদারকি জোরদার করে অসাধুদের আইনের আওতায় আনা।
সার্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নআয়ের মানুষ যে কষ্টে আছেন, তা বলাই বাহুল্য। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে যে হারে দাম বাড়ছে, তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা দেখছি, ঠুনকো অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে। খুচরা বাজারে ক্রেতারা সেসব পণ্য অস্বাভাবিক দাম দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা মনে করি, বাজারে সঠিক তদারকির অভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। এ কারণে বাজারে সার্বক্ষণিক নজরদারি প্রয়োজন। সিন্ডিকেট ভাঙতে নিতে হবে শক্ত পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকারের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। রাঘববোয়ালরা তো বটেই, বাজার অস্থিরতায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধ লোকদেখানো নামমাত্র জরিমানা ধার্য নয়, কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে বিধান পরিবর্তন করে হলেও। ডিজিটাল এই যুগে কৃষকদের কথা চিন্তা করে মাঠপর্যায় থেকে সবজিসহ নিত্যপণ্য কীভাবে সরাসরি খোলাবাজারে সরবরাহ করা যায়, সে পথও খুঁজে বের করতে হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।