বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দুটি ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ। ইতিহাসের শিকড়ে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত এই দুটি দেশের বন্ধুত্বের সম্ভাবনা এবং উভয়ের জন্য উভয়ের পরিপূরকতার ক্ষেত্র অসংখ্য। বাংলাদেশে ভারতের বশংবদ আওয়ামী স্বৈরাচার উৎখাত ও উচ্ছেদের পর দুই দেশের জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে এসেছে। ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভারতের আজন্ম শত্রু পাকিস্তান সঙ্গতকারণেই আমাদের মিত্র হওয়ার এবং মিত্র থাকার যাবতীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। এর মধ্যে রয়েছে ১. প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ২. দুই দেশের জনগণের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগ, ৩. বাণিজ্য, পর্যটন; ৪. শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়; ৫. ক্ষুধা অপুষ্টি ও রোগ বিমারির বিরুদ্ধে যৌথভাবে প্রকল্পভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ; ৬. বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা; ক্রীড়া সহযোগিতা; ৭. অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা; ৮. গণতান্ত্রিক প্রথা-প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে যৌথ প্রয়াস; ৯. চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ নিয়ে আঞ্চলিক জোট গঠনপূর্বক ‘সার্কে’র চেতনা পুনরুদ্ধার; ১০. ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখে দিতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গঠন ও মজবুত করা; ১১. দুই দেশের মধ্যে বিবদমান সব ঝুলন্ত ইস্যুর ন্যায়সঙ্গত সুরাহা করা; ১২. যুব সংহতি ও সম্প্রীতি গড়ে তোলা; ১৩. অতীতের সব ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং বৃহত্তর মুসলিম ঐক্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্প্রীতি গঠনে ব্রতী হওয়া তথা অতীতের দায় বর্তমানের ওপর চাপিয়ে দেয়ার মানসিকতা বদলে ফেলার মাধ্যমে আঞ্চলিক ইসলামী ঐক্যের নববিন্যাস সাধন করা ইত্যাদি ছাড়াও সময়ে সময়ে উদ্ভূত সুযোগ গ্রহণ ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা।
আমাদের এই দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কে নতুন বিন্যাস বা নবজন্ম সূচনার এখনই সময়, যে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে প্রজন্ম পরম্পরায়।