রাজধানী যেন দাবি-দাওয়ার শহরে পরিণত হয়েছে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কিংবা কোনো সংগঠন তাদের যে কোনো দাবি পূরণে প্রায় রাজধানীর সড়কগুলো অবরোধ করে আন্দোলন করতে দেখা যায়। যানজটের এ নগরীতে কোনো একটি রাস্তা বন্ধ হলেই এর প্রভাব পড়ে আশপাশের অন্যসব সড়কে। এক্ষেত্রেও হয়েছিল তা-ই। শুধু তেজগাঁওয়ে নয়, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, কাওরানবাজার, মগবাজার, এফডিসি মোড়, হাতিরঝিল, গুলশান, মালিবাগসহ রাজধানীর বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ছড়িয়ে পড়েছিল এর প্রভাব। এসব সড়কে দীর্ঘস্থায়ী যানজট সৃষ্টি হয়; কোথাও কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল যানবাহন। ফলে যাত্রীদের, বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
আমরা মনে করি, দাবি আদায়ের জন্য অথবা প্রতিবাদ হিসাবে এমন কোনো কর্মসূচি দেয়া উচিত নয়, যা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ও গোষ্ঠীকে তাদের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। সেসব ক্ষেত্রেও যানজট সৃষ্টি হয়ে তা জনদুর্ভোগের কারণ হয়েছে। তাই সব পেশাজীবী ও গোষ্ঠীরই উচিত জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যে কোনো কর্মসূচি পরিহার করা। বস্তুত কথায় কথায় সড়ক অবরোধের প্রবণতা থেকে সবারই সরে আসা উচিত। প্রত্যেকেরই বোঝা উচিত, এ প্রবণতা চলতে থাকলে আজ যারা অবরোধ করছেন, তারাও অথবা তাদের অসুস্থ বা বৃদ্ধ স্বজনরাও কখনও এমন দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন। একইসঙ্গে আমরা এ কথাও বলব, শিক্ষার্থীরা কোনো দাবি-দাওয়া উত্থাপন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।