ক’দিন পর ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার তাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকা পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষের কারণে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাবে আশপাশের সড়কে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট। ফলে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। ক’দিন আগেই, গত ১৫ এপ্রিল একই এলাকায় এ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। বস্তুত এ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে জড়ানো যেন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই ছোটখাটো ঘটনায় তারা একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। সর্বশেষ ঘটনার সূত্রপাত ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে মারধরকে কেন্দ্র করে হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুধু এ দুই কলেজ নয়, প্রকৃতপক্ষে অতীতে বিভিন্ন সময় এ এলাকায় অবস্থিত তিনটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা গেছে। এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো- ঢাকা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ এবং আইডিয়াল কলেজ। ডিএমপির সূত্রমতে, এ তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা ছয় মাসে মারামারি-সংঘর্ষে জড়িয়েছেন প্রায় ১২০ বার। তাদের এ সংঘর্ষ যেন কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। অথচ রাজধানীর ব্যস্ত ব্যবসায়িক এ এলাকায় রয়েছে বেশকিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট। সংঘর্ষের সময় এসব প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি মাঝেমাঝেই রণক্ষেত্রে রূপ নেয় মিরপুর সড়কের নিউমার্কেট মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব মোড় পর্যন্ত। কখনও কখনও তা ছড়িয়ে পড়ে সড়কের দুই পাশের গলিতেও। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইগো ও হিরোইজম থেকে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। জানা গেছে, এসব এলাকায় বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে শিক্ষা নেয় এ তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে কথা কাটাকাটি, চায়ের দোকানে বসা নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রেমঘটিত বিষয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্যের মতো বিষয়গুলো সংঘাতের নেপথ্য কারণ।
বস্তুত গুটিকয়েক উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রের কারণে সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তিন কলেজেরই। নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তিন কলেজ এলাকার বাসিন্দারাও। বিপন্ন হয়ে পড়ছে কলেজ তিনটির শান্তিপ্রিয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন। তাই এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান জরুরি। এজন্য উল্লেখিত তিন কলেজের কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা।