একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকেরকে স্মরণ করা হবে স্মৃতিকথা, গান-কবিতায়। এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে আলী যাকেরের নাট্যদল ‘নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়’। আগামীকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে ‘স্মৃতিতে স্মরণে আলী যাকের’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর জানান, স্মারক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যদিয়ে তারা আলী যাকেরকে স্মরণ করবেন। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দেবেন কলকাতার থিয়েটারের অভিনেতা লেখক বিভাস চক্রবর্তী। এ ছাড়া নাগরিকের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মারা যান একুশে পদক পাওয়া অভিনেতা আলী যাকের। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর। মঞ্চ, টেলিভিশনের দাপুটে এই অভিনেতা একাত্তরের একজন শব্দসৈনিক। ১৯৭২ সালে আরণ্যকের ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেন আলী যাকের, শুরু হয় মঞ্চে তার পথচলা। সে নাটক দেখে পরে লেখক জিয়া হায়দার ও অভিনেতা নির্দেশক আতাউর রহমান তাকে নিয়ে যান তাদের দল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। মৃত্যু পর্যন্ত আলী যাকের ওই নাট্যদলের সভাপতি ছিলেন। মঞ্চে নূরলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে আলী যাকেরের অভিনয় এখনো দর্শক মনে রেখেছে। ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি পাথর’, ‘আজ রবিবার’র মতো টিভি নাটকে অভিনয় করেও তিনি প্রশংসা পেয়েছেন। ‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চনাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন আলী যাকের। বেতারে অর্ধশতাধিক শ্রুতি নাটকেও কাজ করেছেন। অভিনয়, নির্দেশনার বাইরে তিনি ছিলেন একজন নাট্যসংগঠক; পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন লেখালেখির সঙ্গে। নাটকে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। দীর্ঘ কর্মজীবনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন আলী যাকের। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আলী যাকের যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন।