অভিনেত্রী সূচনা আজাদ। সাইফ চন্দনের ‘আব্বাস’ ছবির মাধ্যমে দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলেন তিনি। এরপর কাজ করেছেন অঞ্জন আইচের ‘আগামীকাল’ ছবিতে। দুটি ছবিতেই প্রশংসিত হন সূচনা। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার একাধিক ছবি। নিজের কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
আপনি বড়পর্দার অভিনেত্রী। ইদানীং আপনাকে নাটকে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে। এর কারণ কী?
আমার মিডিয়ায় কাজ শুরু হয় নাটকের মাধ্যমে। তখন টিভিসি ও ফটােশুটের কাজ করতাম। কাজের প্রতি খুব একটা সিরিয়াস ছিলাম না। কিন্তু সাইফ চন্দনের ‘আব্বাস’ রিলিজ হওয়ার পর মনে হলো বছরে একটা করে অন্তত সিনেমা করাই যায়। আবার ওই সময় সিনেমার মার্কেট ভালো ছিল না। আগের মতো তিন শিফটে সিনেমায় কাজ করার সুযোগও নেই। কারণ, সিনেমাই তো বানানো হয় অল্প কিছু। সেজন্য শুভাকাঙ্ক্ষিরা পরামর্শ দিলেন নাটকে অভিনয়ের। তাহলে অভিনয়ের চর্চা থাকবে। এর মাঝে প্রোডাকশন হাউজ দিলাম। কাজের সংখ্যাও বাড়তে লাগল। অর্থাৎ, অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার জন্যই নাটকে নিয়মিত হয়েছি।
কেমন চরিত্রে অভিনয় করতে চান?
আমি কখনোই তথাকথিত নায়িকা হতে চাইনি। চরিত্র ধারণ করতে চেয়েছি। ‘আব্বাস’ ছবিতে মেক ডাউনে অভিনয় করেছি। একই কথা প্রযোজ্য ‘আগামীকাল’ ছবির জন্যও। সেখানে একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরিত্রের প্রয়োজনে মেক-ডাউন করতে হয়েছে। সামনে আসছে ‘নিশীথিনী’। এ ছবির চরিত্রের নাম নন্দিনী। এটি অদ্ভূত সুন্দর একটি চরিত্র। আমি যেমন চরিত্রে কাজ করতে চাই তেমন। এমন একটি চরিত্রের জন্যই বোধহয় এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম।
চিত্রনায়ক ইমনের সাথে ‘আগামীকাল’, ‘কানামাছি’ ও ‘নিশীথিনী’ ছবিতে কাজ করলেন। পরিচালকও একজন, অঞ্জন আইচ। একই নির্মাতা ও নায়কের সাথে টানা কাজের কারণ কী?
বিষয়টি পরিচালকের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করেছে। সহশিল্পী হিসেবে ইমন ভাই যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। কাজের সময় উনি চরিত্রের মাঝে ঢুকতে পারেন। তার সাথে কাজ করে আরাম পেয়েছি। ইমন ভাই ও অঞ্জন দা’র সাথে আমার দারুণ বোঝাপড়া। অঞ্জন দা কাজের যথেষ্ট জায়গা দেন। তার সাথে কাজের স্বাধীনতা আছে, যা বাইরের প্রজেক্টে খুব একটা খুঁজে পাই না। তাই আমাদের তিনজনের সিঙ্ক ভালো।
‘আব্বাস’ যেমন সাড়া ফেলেছিল ‘আগামীকাল’র বেলায় তেমনটি হয়নি। এ প্রসঙ্গে কী বলবেন?
‘আগামীকাল’ যারা দেখেছে তারা প্রশংসা করেছে। ফিল্মের ক্ষেত্রে ভাগ্যও থাকতে হয়। এমন অনেক ছবি হিট হয় যেগুলো বিলো এভারেজ। প্রত্যাশা মেটাতে না পারার নানাবিধ কারণের এটি একটি। আমরাও হয়তো আরো ভালোভাবে ছবিটি দর্শকের কাছে তুলে ধরতে পারতাম।
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
ক’দিন আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছি। সেখানে পাঁচটি নাটকের কাজ সম্পন্ন করলাম। সেগুলো শিগগিরই প্রচারিত হবে। ডিএ তায়েবের ওয়েব সিরিজ ‘পুলিশ স্টেশন’র কাজ শেষ করেছি। এখানে আমি একজন চিত্রনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছি। শিগগিরই সিরিজটি কোনো একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে।
আপনার একটি প্রোডাকশন হাউজ আছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাচ্ছি।
আমাদের প্রোডাকশন হাউজের নাম ‘পার্পেল রে’। আমার সাথে পার্টনার হিসেবে আছেন নির্মাতা অঞ্জন আইচ দাদা। প্রায় ৩ বছর হলো এ প্রোডাকশন হাউজের বয়স। হাউজের মাধ্যমে ধারাবাহিক নাটক, খণ্ড নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করছি। এখানে সময় দিতে হয়।
এ সময়ের অনেকে থিয়েটারে কাজ করছেন। আপনার এমন কোনো ইচ্ছে আছে?
আমি ছোটবেলায় থিয়েটার করেছি। থিয়েটারের বিষয়গুলো জানি। কীভাবে আয়নার সামনে অভিনয়ের প্র্যাকটিস করতে হয় জানি। অনলাইনে অভিনয় ওয়ার্কশপের ভিডিওগুলো দেখি।
আর প্রচুর সিনেমা দেখি। ওখান থেকে চরিত্রগুলো জানার চেষ্টা করি। তা ছাড়া বাইরে বের হলে নানা ধরনের চরিত্র দেখি।
যেমন একটি মেয়ে ফুল বিক্রি করছে। আরেকটি মেয়ে তার বাচ্চাকে পথের মধ্যে যত্ন করছে। এ ধরনের চরিত্রগুলো দেখে মনে হয়, যদি এমন চরিত্রে অভিনয় করতে পারতাম!