ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘টুয়েলভথ ফেল’

বদলে দেওয়া জীবনের গল্প

বদলে দেওয়া জীবনের গল্প

জীবনের প্রতিচ্ছবিই তো সিনেমা। সম্প্রতি ভারতে মুক্তি পাওয়া ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমাটিও তেমনই এক জীবনের প্রতিচ্ছবি। জীবনের গল্পটি নাড়া দেয় সিনেমা প্রেমীদের। অনেকেই এই সিনেমায় নিজেকে খুঁজে পান। ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমায় দেখানো হয়েছে, মানুষের জীবনে অভাব কোনো অযুহাত হতে পারে না। অসীম ধৈর্য নিয়ে লেগে থাকলে মানুষ তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। যারা অভাবের কথা বলে- অর্থের জন্য পড়াশোনা হচ্ছে না, তারা শুধুই অযুহাত দিচ্ছেন। তারা মূলত নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছেন। প্রায় সব শ্রেণির নেটিজেনরা এই সিনেমা নিয়ে কথা বলছেন। এমনটি হওয়ার একটি সঙ্গত কারণ রয়েছে। ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমায় একটি সফলতার গল্প চিত্রিত হয়েছে। যে গল্পে শূন্য থেকে চূড়ার ওঠার কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে সুনিপুণভাবে। আইপিএস কর্মকর্তা মনোজ কুমার শর্মাকে নিয়ে ঔপন্যাসিক অনুরাগ পাঠকের উপন্যাস ‘টুয়েলভথ ফেল’ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিধু বিনোদ চোপড়া এটি পরিচালনা করেছেন। ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমায় মনোজ দাদির অর্থ নিয়ে পড়াশোনা করতে শহরে যান। কিন্তু তার ব্যাগ হারিয়ে ফেলেন। এরপর খেয়ে না খেয়ে শূন্য থেকে শুরু করে মনোজ। একদিন তিনি জীবনযুদ্ধে জয়ী হন। মানুষ জীবনে একেবারে খাদে পড়ে গেলেও উঠে দাঁড়াতে পারে। জীবনে অন্ধকার যে কোনো সময় আসতে পারে। মনে হতে পারে জীবনে আর কিছুই করা সম্ভব না, সব শেষ গেছে। কিন্তু সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। দ্বাদশ শ্রেণিতে অকৃতকার্য হয়েও মনোজ আইপিএস অফিসার হতে পেরেছিলেন- এটি জীবনে জয়ী হওয়ার বড় উদাহরণ। সবখানেই সততার জয় হয়। দেখা যায়, শেষ পর্যায়ে এসেও অনেকেই হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু সততার সঙ্গে কাজ করে গেলে ভীষণ প্রতিকূল পরিবেশেও বেঁচে থাকা যায়। সংগ্রাম চালিয়ে গেলে একসময় সব কিছু অনুকূলে চলে আসে। মনোজের বাবা সততা ও ঘুসের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও এক সময় সততার পথ থেকে সরে আসতে চান কিন্তু মনোজ অটল থাকেন। এর ইতিবাচক ফলাফল তিনি পান। জীবনকে সাজাতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কোনো অযুহাত নয়, কঠোর পরিশ্রম মানুষকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়- এটা যুগ যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত। এটা সবসময় যেমন সত্য- এই সিনেমায় তা আরও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। সিনেমাটি দেখলে যে কারো মনে হবে পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নেই।

পরিশ্রমের পাশাপাশি অনুপ্রেরণাও একজন মানুষের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সামান্য অনুপ্রেরণা মানুষকে অনেক পথ এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। এ সিনেমায় ‘শ্রদ্ধা’ মনোজের জীবনে অনুপ্রেরণার নাম। ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমায় গৌরি ভাইয়ের মতো চরিত্র মানুষকে মানবিকতা সম্পর্কে নতুন বার্তা দেয়। ‘মানুষ মানুষের জন্য’-এই অনুভব তৈরি করে। শুধু তাই নয়, অন্যের জয়ে যে নিজের আনন্দ হতে পারে, এর জন্য যে ত্যাগ করা যায় গৌরি চরিত্রটি এর জ্বলন্ত উদাহরণ। জীবনে বড় হতে গেলে পৃথিবীতে কোনো কাজই ছোট নয় এমন দৃষ্টিভঙ্গী তৈরি করতে হবে। মনোজ রেস্তোরাঁর বাসন ধোঁয়া থেকে শুরু করে লাইব্রেরির বাথরুমও পরিষ্কার করছেন অবলীলায়। শুধু তা-ই নয়, তিনি টয়লেট পরিষ্কার করেছিলেন। সেই মনোজ ভারতের আইপিএস অফিসার হয়েছেন। এর চেয়ে আর বড় উদাহরণ কী হতে পারে। আর সেজন্যই সিনেমাটি দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত