একুশে পদকপ্রাপ্ত জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা মাসুদ আলী খানকে দেখার জন্য এবং তারসঙ্গে কিছুটা সময় গল্প, আড্ডা দেবার জন্য বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের কয়েকজন জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী গত ২৯ জানুয়ারি বিকালে একত্রিত হয়েছিলেন। বরেণ্য অভিনেতা, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের আহ্বানে এবং সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীনের উদ্যোগে মাসুদ আলী খানের রাজধানীর গ্রীন রোডের বাসাতেই এই আড্ডার আয়োজন করা হয়। এই আড্ডায় অংশ নিয়েছিলেন দিলারা জামান, আবুল হায়াত, আমিরুল হক চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর ও খায়রুল আলম সবুজ। বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রাণবন্ত এই আড্ডা চলে। দীর্ঘদিন পর একের সঙ্গে অন্যের দেখা হয়ে সবারমধ্যে দারুণ উচ্ছ্বাস আর আনন্দ বইছিল পুরোটা সময়জুড়ে। বিশেষ করে মাসুদ আলী খানকে কাছে পেয়েই যেন সবার মধ্যে বেশি ভালোলাগা কাজ করছিল। পুরোনো দিনের নানান গল্পে মগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন তারা সবাই। এমন ধরনের আড্ডা তারা আগামীতে নিয়ম করে কয়েকমাস পরপর দিতে চান বলে আবদারও রাখেন সবাই। যে কারণে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে এমন আয়োজন করার প্রস্তুতিও চলছে। গল্প, আড্ডায় এক সময় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, এই মুহূর্তে একটু গান হলেও ভালো হতো। আয়োজনে উপস্থিত থাকা শিল্পী রাইসা ও তার ছোট বোন প্রতিভা গান গেয়ে শোনান। রাইসার গান শুনে মুগ্ধ হন সবাই। আয়োজনটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে এতে যোগ দেন প্রয়াস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রয়েল ক্যাফে’র কর্ণধার প্রদ্যুৎ কুমার তালুকদার।
তিনি মাসুদ আলী খানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রদ্যুৎ কুমার তালুকদারের সৌজন্যে এবং MOMS COLLECTIONS -এর সহযোগিতায় জীবন্ত কিংবদন্তিদের হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেয়া হয়। এমন আয়োজন প্রসঙ্গে দিলারা জামান বলেন, ‘আমার জীবনের অনন্য সাধারণ একটা মুহূর্ত পার করলাম। আগামী প্রজন্মের জন্য উদাহরণ রেখে গেলাম যে আমরা এই বয়সেই বিচ্ছিন্ন নই। সবার কাছে দোয়া চাই। অবশ্যই ধন্যবাদ নূর ও অভি’কে।’ আবুল হায়াত বলেন, ‘আমার কাছে তো মনে হলো যে, এটাই একটা বড় উৎসব। এই ধরনের উৎসব জীবনের এই পর্যায়ে এসে ভীষণ প্রয়োজন। বিশেষ ধন্যবাদ নূর এবং অভিকে।’ আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মাসুদ ভাইকে দেখার খুউব ইচ্ছে ছিল, এই আয়োজনের মধ্যদিয়ে আমার সেই ইচ্ছে পূরণ হলো।’ আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘একসঙ্গে হওয়ার ইচ্ছেটা অনেকদিনের। অভি’র কারণে আমিও এগিয়ে এলাম প্রবল আগ্রহ নিয়ে। আগামীতে মাঝেমধ্যে এমন হবে, আশা রাখছি।’ খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘এই আয়োজনের পুরোটাজুড়ে ভীষণ আন্তরিকতা ছিল এবং আমি চাই এমন আয়োজন নিয়মিত হোক।’ মাসুদ আলী খান বলেন, ‘আমি তোমাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ যে তোমরা সবাই আমাকে দেখতে এসেছ। এই ৯৪ বছর বয়সে আরো বহুদিন বাঁচার সাহস পেলাম। নূর ও অভির কাছে ঋনী হয়ে গেলাম।’ পুরো আয়োজনটির জন্য মাসুদ আলী খানের স্ত্রী তাহ্মিনা খান সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।