বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নন্দিত নায়িকা পূর্ণিমা। পূর্ণিমা’র মধ্যে অভিনয়ের সহজাত প্রকৃত’রূপ আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন প্রয়াত বরেণ্য গুণী চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। যে কারণে তিনি পূর্ণিমা’কে নিয়ে পরপর তিনটি সিনেমা ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘ শাস্তি’ ও ‘সুভা’ নির্মাণ করেছিলেন। তিনটি সিনেমাতেই দর্শক পূর্ণিমাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে তার অসাধার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এসব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য একজন শিল্পীকে ভীষণ পরিশ্রমী হতে হয়, ভীষণ ডেডিকেটেড হতে হয়। পূর্ণিমা ঠিক তাই হয়েছিলেন বিধায় চাষী নজরুল ইসলামের মতো একজন মেধাবী পরিচালকের পরপর তিনটি সিনেমাতে অভিনয় করতে পেরেছিলেন। তিনটি সিনেমাই ছিলো সাহিত্য নির্ভর সিনেমা। চাষী নজরুল ইসলাম প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে পূর্ণিমা বলেন, ‘শ্রদ্ধেয় চাষী নজরুল ইসলাম স্যার ছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একজন অন্যতম অত্যাধুনিক, শিক্ষিত, রুচিশীল এবং ভীষণ মেধাবী একজন পরিচালক। আমার পরম সৌভাগ্য যে আমি তার নির্দেশিত পরপর তিনটি সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। যেহেতু তিনটি সিনেমায় তার সঙ্গে আমার পথচলা, তাই সম্পর্কটাও হয়ে গিয়েছিলো বাবা আর মেয়ের মতোই। তিনি আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। আমি শুনেছিলাম যে, তিনি আমাকে নিয়ে পরবর্তীতে আরো সিনেমা নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কেন যেন আমার ওপর তার ভীষণ আস্থা ছিল। আমিও তার নির্দেশনায় কাজ করতে ভীষণ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম। যদিও অনেক দেরিতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একজন নায়িকা হিসেবে আমার সিনেমার দুনিয়ায় পথচলা। তারপরও আমার সৌভাগ্য যে আমি চাষী স্যারের মতো কয়েকজন গুণী পরিচালকের নির্দেশনায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। বলা যায় অভিনয় জীবনে এগুলো আমার বড় প্রাপ্তি। চাষী স্যার নেই, কিন্তু তিনি বেঁচে থাকবেন তার কর্মের মধ্যদিয়ে যুগের পর যুগ। যদি কোনো সিনেমার কথাও কারো মনে নাই বা থাকে, ‘ওরা ১১ জন’ সিনেমার কথা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ভুলবেন না, ভুলবে না একজন চাষী নজরুল ইসলামেেক।’
উল্লেখ্য, মেঘের পরে মেঘ’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিলো রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস অবলম্বনে। ‘শাস্তি’ ও ‘সুভা’ নির্মিত হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে। দু’টিতে পূর্ণিমা’র বিপরীতে ছিলেন রিয়াজ এবং একটিতে (সুভা) তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। এদিকে পূর্ণিমা জানান, এখনো নতুন কোনো কাজ শুরু করেননি তিনি। মুক্তির অক্ষোয় আছে তার অভিনীত ‘গাঙচিল’, ‘জ্যাম’ ও ‘আহারে জীবন’ সিনেমা তিনটি।