বাংলাদেশ আর আমি একসঙ্গে বড় হচ্ছি
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিনোদন প্রতিবেদক
বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ বিপাশা হায়াত। মঞ্চ, টেলিভিশন কিংবা চলচ্চিত্র সব ক্ষেত্রেই পেয়েছেন সাফল্য ও খ্যাতি। গত শনিবার নন্দিত এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৭১ সালের জন্মগ্রহণ করেন বিপাশা। তার বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা আবুল হায়াত। বর্তমানে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন বিপাশা। মোবাইল ফোনে জন্মদিন নিয়ে দেশের গণমাধ্যকে বিপাশা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ আমার জন্ম আর বাংলাদেশের জন্ম ২৬ মার্চ। বাংলাদেশ ও আমি একসঙ্গে বড় হচ্ছি। এটি চমৎকার অনুভূতি। বিপাশা আরো বললেন, শুধু জন্মদিন নয়; প্রতিটি দিনই মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। জন্মদিনে মা-বাবাকে সম্মান জানাতে চাই। আমি মনে করি, দিনটি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। তাদের কারণেই এই পৃথিবীতে আমার অস্তিত্ব। আর যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানান, তাদের জন্য আমার ভালোবাসা। বিপাশা হায়াত প্রসঙ্গে বাবা আবুল হায়াত বলেন, আমার খুউব আদরের সন্তান বিপাশা। দেশে নেই, স্বাভাবিকভাবেই মনটা খারাপ। তবে যেখানে আছে সে তার স্বামী-সন্তান নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে, এটাই আমার এবং আমার স্ত্রীর মনের শান্তি। সন্তান যেখানেই থাকুক, যেভাবেই থাকুক যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে। প্রত্যেক বাবা-মায়ের কামনা এটাই। বিপাশা সবমিলিয়ে ভালো থাকুক, জন্মদিনটাও ভালো কাটুক, এটাই চাই। আর সময়-সুযোগ করে বাচ্চাদের পড়াশোনার সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের মাঝে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আসুক, এই চাই। তুমি আমাদের গর্ব। আবুল হায়াত জানান, লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার পর বিপাশা হায়াত শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম নাটকে অভিনয় করেন। তার নিজের পরিচালনায় বিপাশা হায়াত প্রথম অভিনয় করেন ‘হারজিৎ’ নাটকে। এটা আবুল হায়াতেরও প্রথম পরিচালিত নাটক ছিল। বিপাশা হায়াত প্রসঙ্গে তৌকীর আহমেদ বলেন, বিপাশা তার সব কর্মদিয়েই একজন আলোকিত মানুষ। আমরা দীর্ঘ সময় দুজন দুজনকে দেখছি। নিঃসন্দেহে বিপাশা মানুষটিই আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তার আলাদা কোনো সত্ত্বাকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেবার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সবকিছু মিলিয়েই পরিপূর্ণ একজন বিপাশা, একজন আলোকিত মানুষ। বিপাশা হায়াত পুরো নব্বইয়ের দশকে ছিলেন শীর্ষ অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। অভিনয় করেন শঙ্কিত পদযাত্রা, রূপনগর, ছোট ছোট ঢেউ, অন্য ভুবনের ছেলেটা, চেনা অচেনা মুখ, থাকে শুধু ভালোবাসা, বীজমন্ত্র, স্পর্শ, শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই, বিপ্রতীপ, অতিথি, হার জিত, আশিক সব পারে, বিষকাঁটার মতো জনপ্রিয় নাটকগুলোতে। মডেলিং জগতেও খেতাব ছিল তার। একটা সময় পর অভিনয় জগৎ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। তবে যখনই ফিরে এসেছেন তখনই নিজেকে সমাদৃত করেছেন।
বাণিজ্যিক সিনেমায় তাকে দেখা না গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা আগুনের পরশমণি ও জয়যাত্রায় অভিনয় করেন তিনি। অভিনয়ের বাইরে তিনি নাট্যকার। অনেক নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে শুধু তোমারেই জানি, শুকতারা, শঙ্খবাস, ঘাসফুল, প্রেরণা অন্যতম। উপস্থাপক হিসেবেও সুপরিচিতি আছে তার। ‘বিপাশার অতিথি’ নামে একটি অনুষ্ঠান বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। আবৃত্তি ও গানেও দক্ষ তিনি। তার আরেকটি প্রতিভা হলো তিনি একজন চিত্রশিল্পী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বছর কয়েক আগে অ্যাসিড আক্রান্ত নারীদের সাহায্যার্তে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করেছিলেন। বর্ণিল ক্যারিয়ারে তিনি একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৯৪ সালে আগুনের পরশমণি সিনেমার জন্য তিনি এই পুরস্কার পান। এছাড়া তার ঝুলিতে অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে।