বাংলাদেশের নাটকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারিন জাহান। যাকে তার পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীরা অভিনয়ের পাঠশালা হিসেবে বিবেচনা করেন। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ভীষণ গুণী এই অভিনেত্রী নাটকেই অভিনয় করে দর্শকের মধ্যে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। বাংলাদেশে গেলো বছর তার অভিনীত প্রথম সিনেমা হৃদি হক পরিচালিত ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে তারিন জাহানের অনবদ্য অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। আর এবার ওপার বাংলায় অর্থাৎ কলকাতায় প্রশংসায় ভাসছেন তারিন জাহান। কারণ ওপার বাংলাতেও গেলো শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত প্রথম সিনেমা মানসী সিনহা পরিচালিত ‘এটা আমাদের গল্প’। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই দর্শক বেশ আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটি উপভোগ করছেন। যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও লক্ষ্য করা গেছে। কলকাতায সিনেমার প্রচারণা করতে গিয়ে সেখানে তার অনেক নাটকের দর্শকের সেঙ্গও দেখা হয়েছে। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করেও তারা হলে হলে গিয়ে তারিন অভিনীত ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমাটি উপভোগ করেছেন। দর্শকের এই আগ্রহ আর ভালোবাসায় ভীষণ উচ্ছ্বসিত তারিন। যেন জীবনের নতুন এক অধ্যায় কলকাতাতে অতিবাহিত করছেন বাংলাদেশের বরেণ্য এই অভিনেত্রী। ‘এটা আমাদের গল্প’ সিনেমার গল্প বউ শাশুড়ির রাগ অভিমান, ভালোবাসাকে ঘিরেই গল্প। মূল কথা হলো মানুষের যখন বয়স হয়ে যায় তখন মানুষ একা হয়ে যায়। সেই বয়সে প্রেমে পড়াটা অপরাধ নয়। একা থাকার চেয়ে কাউকে ভালোবেসে ভালো থাকাটা ভালো। গল্পে তারিন বাংলাদেশের একটি হিন্দু পরিবারের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কলকাতার সিনেমায় তারিনের অভিষেক বেশ ভালোভাবেই হলো। দর্শক তাকে মন থেকে গ্রহণ করে নিয়েছেন। তার অভিনয়, তার ব্যক্তিত্ব, তার বিনয় যেন সিনেমার পুরো টিমসহ দর্শকের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। তারিনকে শুভ কামনা জানিয়ে দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘ কলকাতার দর্শক তারিনের অভিনীত সিনেমার প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছে, এটা সত্যিই আনন্দের বিষয়। কারণ আমি জানি দেশের বাইরে অন্য কোনো দেশের সিনেমাতে অভিনয় করে সেখানকার দর্শকের ভালোবাসা পাওয়াটা কতো কঠিন। তারিন নিঃসন্দেহে সিনেমাটি তার চরিত্রানুযায়ী ভালো অভিনয় করেছে বিধায় দর্শক তাকে গ্রহন করে নিয়েছে। তারিনের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো। আমরা ১৯৭১ সেইসব দিন-সিনেমাতে একসঙ্গেও অভিনয় করেছি। এই সিনেমাকে ঘিরেও আমাদের মধুর স্মৃতি আছে।’ একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেত্রী দিলারা জামান বলেন, ‘তারিন তার প্রজন্মের সেরা অভিনেত্রী, তার পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার। যে কারণে কলকাতার সিনেমাতেও তারিন অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছে, এটা আমাদেরও ভালোলাগার।’ এদিকে বাংলাদেশে তার অনেক সহকর্মী শিল্পীরা অধীর অপেক্ষায় তাকে সরাসরি অভিনন্দন জানানোর। তারিন ফিরে এলেই কলকাতায় প্রথম সিনেমার সাফল্যগাঁথার গল্প উপভোগ করবেন তারা।