বাংলাদেশের সিনেমার গর্ব তিন বোন সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা। সুচন্দা ও ববিতা দীর্ঘদিন নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয় করছেন না। চম্পা মাঝে মাঝে অভিনয় করেন সিনেমা ও নাটকে। তিনিও খুব বেশি নিয়মিত নন। তবে কোনো বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে তিন বোনকে একসঙ্গে দেখা যায়। সর্বশেষ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তাদের তিন বোনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। তারা ভোট দিতে বিএফডিসিতে গিয়েছিলেন। সুচন্দা, ববিতা ও চম্পাকে একসঙ্গে প্রথম শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিন কন্যা’ সিনেমাতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। সুচন্দা বলেন, ‘ মূলত আমার আব্বার স্বপ্ন ছিলো যেন আমরা তিন বোন একসঙ্গে সিনেমাতে অভিনয় করি। এ কারণেই শিবলী ভাইয়ের নির্দেশনায় তিন কন্যা সিনেমাতে অভিনয় করা।’ তবে ‘তিন কন্যা’র পর তাদের তিন বোনের আর একসঙ্গে একই সিনেমায় আর অভিনয় করা হয়ে ওঠেনি। তবে সুচন্দা’র প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মিত সিনেমা ‘বাসনা’তে ববিতা ও চম্পা একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। বাংলাদেশের সিনেমার গর্ব এই তিন বোনকে নিয়ে মাঝে দু’একজন নির্মাতা একসঙ্গে সিনেমা নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে তার চেয়েও জরুরি এখন যে বিষয়টি তা হলো তাদের তিনজনকে নিয়ে যথাযথভাবে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করা। সিনেমা না হোক অন্তত তথ্যচিত্রটি যেন আগামী প্রজন্মের জন্য করে রাখা যায়, সেটা এখন সময়ের দাবি। ববিতা বলেন, ‘আমাদের তিন বোনের আগ্রহ আছে অবশ্যই ভালো গল্প পেলে সিনেমাতে অভিনয় করব। কিন্তু এখন কেন যেন মনে হয়, এটা আর সম্ভব নয়। তবে তথ্যচিত্র বা ডকুমেন্টারির কথা যদি বলি, সেটাও অনেক গবেষণা করে একদম শতভাগ মনোযোগ দিয়ে কাজটি করতে হবে। তিনজনের একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যচিত্র যদি থেকে যায়, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য তা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। জানিনা, এই তথ্যচিত্রটিও করা হবে কি না।’ চম্পা বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যে, এখনই সময় আমাদের তিন বোনকে নিয়ে যথাযথভাবে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আমার দুই বোন সুচন্দা আপা ও ববিতা আপার যে অবদান আছে তা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই অনেক গবেষণার পর একটি পারফেক্ট তথ্যচিত্র নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। আমার বিশ্বাস যদি স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয় এবং যথাযথ গবেষণাও আমার দুই বোনের পছন্দ হয়, তাহলে তারা তাতে সম্মতি দেবেন। কিন্তু কে নেবে এই উদ্যোগ। জানা নেই আমারও।’ তথ্য মন্ত্রণালয় চাইলেই এ উদ্যোগ নিতে পারে। কিংবদন্তীদের মৃত্যুর পর গণমাধ্যমের সামনে এসে অনেকেই অনেক কথা বলেন। এটা করা উচিত ছিলো, ওটা করা উচিত ছিলো। কিন্তু জীবদ্দশায় সাধারণত এই দেশে শিল্পীদের তেমন মূল্যায়নই করা হয় না। তাই সুচন্দা, ববিতা ও চম্পাকে নিয়ে ভাবার এখনই সময়।