‘অল উই ইমাজিন এজ লাইট’ এর জন্য কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার গ্রাঁ পিঁ জিতে নিয়েছেন ভারতীয় নির্মাতা পায়েল কাপাডিয়া। নিজের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি দিয়েই ইতিহাস তৈরি করা কে এই পায়েল? পায়েল ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এফটিটিআই) ছাত্রী ছিলেন ২০১৫ সালে। পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে তিনি আন্দোলনে জড়িয়ে চার মাস ক্লাস বর্জন করেন। ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান পদে টিভি স্টার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া গজেন্দ্র চৌহানকে মেনে নিতে না পেরে ক্লাস বর্জন করে শাস্তিও পেতে হয়েছিল পায়েলকে। একই বছর আরেক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ায় তার নামে এফআইআর দায়ের করা হয়। ২০১৭ তার ১৩ মিনিটের ফিল্ম ‘আফটারনুন ক্লাউডস’ কান উৎসবের শিক্ষার্থী নির্মাতাদের বিভাগ সিনেফঁদাসোতে নির্বাচিত হয়। বিষয়টি জানার পর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট তাকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পায়েলের ডকুমেন্টারি ‘এ নাইট অফ নোয়িং নাথিং’ ২০২১ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে অয়েল ডি’অর (গোল্ডেন আই) পুরস্কার জিতেছে। গল্প বলার ক্ষেত্রে বরাবরই ব্যতিক্রমী পায়েল। ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’-এর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ভারত-ফ্রান্স যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ চলচ্চিত্রের গল্প মুম্বাইয়ের রুমমেট দুই নার্সকে কেন্দ্র করে। তাদের মধ্যে প্রভা দীর্ঘ সময় যোগাযোগ না থাকা স্বামীর কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে একদিন একটি উপহার পায়। আরেক রুমমেট অনু তার প্রেমিকের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর জন্য জায়গা খুঁজে। একদিন দুই নার্স একটি সমুদ্র সৈকতের শহরে বেড়াতে যায়। সেখানে এক রহস্যময় বন হয়ে ওঠে তাদের স্বপ্ন প্রকাশের জায়গা।
পায়েলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আমেরিকান অভিনেত্রী ভায়োলা ডেভিস। তখন মঞ্চে পায়েলের পাশে ছিলেন ছবিটির তিন অভিনেত্রী কানি কুসরুতি, দিব্যা প্রভা ও ছায়া কদম। ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ ছবিটির মাধ্যমে ৩০ বছর পর ভারতীয় ছবি হিসেবে কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নাম লেখায় ভারত। পুরস্কার পেয়ে পায়েল বলেন, ‘ধন্যবাদ কানকে আমাদের ছবিটিকে এখানে নিয়ে আসার জন্য। আরেকটি ভারতীয় সিনেমা পাওয়ার জন্য প্লিজ আরও ৩০ বছর অপেক্ষা করবেন না।’ এটি পায়েলের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি।
২০১৯ সালে ১৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার জিতে নেন পায়েল। সে বছর ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন (ডকুমেন্টারি) বিভাগে ‘অ্যান্ড হোয়াট ইজ দ্য সামার সেয়িং’ এর জন্য শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্রর পুরস্কার পান তিনি।’