চলার পথে মনে পড়ে ফকির আলমগীরকে

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বিনোদন প্রতিবেদক

গত ২৩ জুলাই ছিল বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী বিশেষত দেশীয় গণসঙ্গীত ও পপ সঙ্গীতে বিশেষ অবদান রাখা সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীরের ত...তীয় মৃত্যু বার্ষিকী। কিন্তু মৃত্যু বার্ষিকীর সময়টাতে দেশের পরিস্থিতি এতোটাই বিপর্যস্ত ছিলো অনেকে ভুলেই গিয়েছিলেন তার প্রয়াণ দিবসের কথা। তারপরও অনেকেই নানানভাবে ফকির আলমগীরকে স্মরণ করেছেন। এখনো অনেকের চলার পথে ফকির আলমগীরকে অনুভব করেন। শুধু তার সমসাময়িককালের শিল্পীরাই যে তাকে মনে করেন এমনটি নয়।

এই প্রজন্মের অনেকেই তাকে স্মরণ করেন, সময় সুযোগ হলে গল্পে আড্ডায় তাকে নিয়ে গল্প করেন। ঠিক তেমনি তিনজন শিল্পী হলেন পুতুল, লোপা ও বিউটি। পুতুল বলেন, ‘আমার সঙ্গে নানান সময়ে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে। আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। আমিও তাকে ভীষণ শ্রদ্ধা করতাম। ভীষণ হাসি খুশি মনের একজন মানুষ ছিলেন তিনি। আর তিনি কতো বড় একজন শিল্পী ছিলেন তা বলার দৃষ্টতা আমার নেই। আমরা আসলে একে একে আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনের যারা অভিভাবক তাদের হারিয়ে ফেলছি। তাদের হারিয়ে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সত্যিকার অর্থেই যে শূন্যতার সৃষ্টি হচ্ছে এটা কোনোভাবেই পূরণ হবার নয়।’ লোপা বলেন, ‘অনেক বছর আগের কথা। আমরা বেশ কয়েকজন শিল্পী একসঙ্গে একটি ফটোশ্যুট-এ অংশ গ্রহণ করেছিলাম। অভি মঈনুদ্দীন ভাই-ই তা আয়োজন করেছিলেন। তো, সেই সময়টাতে তারসঙ্গে দারুণ সময় কেটেছিল। যেহেতু তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ডিপার্টম্যান্ট-এ অর্থাৎ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন, তাই আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। তার কণ্ঠ অসাধারণ।

এই ধরনের কণ্ঠের বিকল্প নেই। সত্যিই মাঝে মাঝে তাকে ভীষণ মিস করি। সহজ সরল মনের একজন শিল্পী ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের গানে তার অবদান বাংলাদেশ যুগের পর যুগ শ্রদ্ধাভরে তাকে মনে রাখবে।’ বিউটি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা শাফিন স্যার, জুয়েল স্যারকে হারালাম। আমাদের সঙ্গীতাঙ্গন সত্যিই শূন্য হয়ে যাচ্ছে। ফকির আলমগীর স্যার আমাকেও ভীষণ স্নেহ করতেন। যেহেতু আমি ফোক ঘরানার গান গাই, তাই আমাকে বলতেন আমি যেন এই ধারাতেই সীমাবদ্ধ থাকি, আমি ফোক গানেই ভালো করবো। মাঝে মাঝে কিছু গান পরিবেশনার সময় স্যারের কথা ভীষণ মনেপড়ে। স্যারকে আল্লাহ বেহেস্ত নসীব করুন, এই দোয়াই করি।’ ফকির আলমগীর জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন। ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সঙ্গীত বলয়ে প্রবেশ করেন। ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী একজন শব্দ সৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।