রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সাত বছর নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপাকে। টেলিভিশন, বেতার কিংবা স্টেজ শো করতে পারতেন না তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতন হলে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী। শিল্পী সত্ত্বাকে আটকে দেয়া হয়েছিল জানিয়ে একটি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে কনকচাঁপা বলেন, আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে পুরো সাত বছর নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমার শিল্পী সত্ত্বাকে আটকে দিলো।
বাস্তব জীবনে আমার কোনো ব্যক্তিগত সময়ই ছিল না। এই নিষিদ্ধ থাকাকালে আমি অনেক মূল্যবান বই পড়েছি। গান যা গাওয়ার তা তো গেয়ে ফেলেছি। এখন আমাকে আটকে রেখে কী লাভ? আমার গান আকাশে বাতাসে ভাসে। কোনো টিভি চ্যানেলে বাজলেই কী, না বাজলেই কী! তাতে অবশ্য আমার অনেক উপকার হয়েছে। জন্মের পর থেকেই গানের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। নিজেকে দেখার ফুসরত হয়নি বলা চলে। কোন কোন গান গেয়েছি, সেটা গাওয়া আসলে দরকার ছিল কি না, তাও ভাবার সময় পাইনি।
সত্যিকার অর্থে কিছু ভাবার, কিছু শোনার সময় পেয়েছি বিভিন্ন জার্নির ফ্লাইটে। পরিবারের সবার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে তাদের লেখা চিঠি পড়তাম ফ্লাইটে। করোনা মহামারি আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছিল। আমি বুঝেছিলাম, অনেক কাপড় না থাকলেও বাঁচা যায়। অনেক খাবার, বিলাসিতা খুবই অন্যায় এবং নিবিড়ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শান্তিই সত্যিকারের শান্তি। এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, দেশ আমাকে সারাজীবনই অবহেলা করেছে। বড় বড় স্টেজ প্রোগ্রামে খুবই কম ডাক পেয়েছি।
জীবনে একবারও সরকারি সফরে ডাকা হয়নি। এগুলোতে আমি অভ্যস্ত। জাতীয় পুরস্কারের জুরি বোর্ড জানে নিশ্চয়ই, আমাকে কতবার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যদিও তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি, কিন্তু দর্শক জানে কতগুলো গানে আমাকে তারা পুরস্কার পাওয়া থেকে বঞ্চিত রেখেছে। আফসোস নেই। ইদানিং এই পুরস্কার এত নিচে নেমেছে যে আমি পাইনি বলে উল্টো আনন্দিতই হয়েছি। মানুষের ভালোবাসাই আমার শক্তি।