কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনম। বাংলাদেশের পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানেও সমান জনপ্রিয় তিনি। দীর্ঘদিন ধরে সিনেমার পর্দায় তাকে দেখা যাচ্ছে না। বাসায় নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে থাকার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন এই কিংবদন্তি। তুমুল সমালোচনার মুখে সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের নাম পরিবর্তন করে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড করা হয়। এরইমধ্যে বোর্ড গঠন করে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরাই নবগঠিত সার্টিফিকেশন বোর্ডে দায়িত্ব পালন করবেন। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে দুজন সদস্য সরে দাঁড়ানোয় শূন্যতা সৃষ্টি হলে সেখানে আসার জন্য প্রস্তাব করা হয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনমকে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী শবনমকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুঠোফোনে কল করে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে, শারীরিক অসুস্থতা থাকায় এ প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন শবনম। তারপরও পীড়াপীড়ি করলে তিনি দুই দিন সময় চান।
এর মধ্যে ৭৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে বোর্ডে থাকার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন এই অভিনেত্রী। শবনম বলেন, মুঠোফোনে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমাকে প্রস্তাব করেছিলেন বোর্ডে থাকতে। কিন্তু, এ মুহূর্তে আমার শরীর অনেক কিছুই পারমিট করে না। প্রতিদিন ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। এসব নিয়ে ভাবার সময়ও পাই না। তবে, মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ, তারা আমার কথা মনে করেছেন বলে। কারণ, তারা আমাকে নাও ভাবতে পারতেন।
শবনম বলেন, শরীর পারমিট না করলে কিছুই ভালো লাগে না। বোর্ডে থাকলে ভালো লাগত। কিছুদিন আগে পাকিস্তান ফিল্ম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যানের পদে অফার করেছিল তারা। এর জন্য মোটা অঙ্কের অনারিয়ামও দিতে রাজি ছিল। কিন্তু, এ বয়সে এই গুরুভার নেওয়ার মতো ফিটনেস আমার নেই। তাছাড়া দেশ ছেড়ে কোথাও আর যেতে চাই না। যে ক’টা দিন বাঁচি, মাতৃভূমিতেই সবার সঙ্গে হেসে-খেলে কাটিয়ে বিদায় নিতে চাই। শবনম চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছিলেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। এরপরের বছর উর্দু সিনেমা ‘চান্দা’য় অভিনয় করে পাকিস্তানে তারকাখ্যাতি পান। শবনম বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করলেও দীর্ঘ সময় অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের সিনেমায়। পাশাপাশি এ অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রেও। পাকিস্তানের সিনেমায় তার অবদান এতোটাই যে সেখানকার মহানায়িকা বলা হয়ে থাকে শবনমকে।