বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের এই প্রজন্মের দর্শকপ্রিয় একজন অভিনেত্রী মিম চৌধুরী। ২০১২ সালে ‘ম্যাঙ্গোলী নাচো বাংলাদেশ নাচো’ রিয়েলিটি শোতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি। অবশ্য এ জন্য তাকে দীর্ঘ একটা সময় ‘নৃত্যাঞ্চল পারফর্মিং আর্ট সেন্টার’-এ নাচ শিখতে হয়েছে। আর এর কিছুদিন পর তিনি মাহফুজ আহমেদর পরিচালনায় জীবনের অন্যতম সেরা নাটক ‘সরীসৃপ’-এ মাহফুজ আহমেদর বিপরীতেই অভিনয় করার সুযোগ পান। মিমের কাছে এ যাবতকাল পর্যন্ত যতো নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি এই নাটকটি তার সবচেয়ে প্রিয়।
প্রিয় তালিকায় আরো রয়েছে রুলীন রহমানের ‘সুন্দর’ ও ইমরান হাওলাদারের ‘জাদু’ (রচনায় জুয়েল এলিন) নাটকটি। অবশ্য, ‘জাদু’ নাটকটি এখনো প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এ নাটকে তার বিপরীতে আছেন মোশাররফ করিম। নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েসন সম্পন্ন করা মিম চৌধুরী এখন একজন অভিনেত্রী হিসেবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। যে কোনো ধরনের চরিত্রে তিনি দুর্দান্ত। যে কারণে নানান ধরনের গল্পের নাটকে কাজ করার প্রস্তাব আসে তার কাছে। কখনো টিভি চ্যানেলের জন্য কখনো ইউটিউব চ্যানেলের জন্য। নিজে বুঝে শুনেই কাজ করেন মিম। দু’টি ভিন্ন চ্যানেলে (বাংলাভিশনে ‘স্টার ওয়ার্ল্ড ও গ্লোবাল টিভিতে গ্লোবাল মিউজিক) নিয়মিত উপস্থাপনা করছেন তিনি। বহু বিজ্ঞাপনেও মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। মিমের সৌভাগ্য হয়েছিল চিত্রনায়ক শাকিব খানের সেঙ্গ সাফি উদ্দিন সাফি পরিচালিত ‘ভালোবাসা এক্সপ্রেস’ সিনেমাতে অভিনয় করার। অবশ্য এরপর আর তিনি কোনো সিনেমাতে অভিনয় করেনি।
আগ্রহ রয়েছে ভালো গল্পের সিনেমাতে। মিম আগামী কিছুদিনের মধ্যে তাইফুর জাহান আশিক ও এসএ হক অলিকের নির্দেশনায় দুটি খণ্ড নাটকে অভিনয় করবেন। আরটিভিতে তার এই মুহূর্তে প্রচার চলতি একমাত্র ধারাবাহিক নাটক কায়সার আহমেদ পরিচালিত ‘গোলমাল’। সেরা অভিনেত্রী, মডেল, নৃত্যশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক বেশ কয়েকবার সম্মানীত হয়েছেন তিনি। ৯ মে জন্ম নেয়া মাসুদ পারভেজ চৌধুরী ও রূপা চৌধুরীর মেয়ে মিম চৌধুরীর স্বপ্ন নিজেকে একজন সু-অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার। অভিনয় জীবনের চলার পথে নিজেকে সেভাবেই গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে পেশাগতভাবে পথচলার একযুগ প্রসঙ্গে মিম বলেন, ‘একটা সময় আমার বাবা গান করতেন, মা নাচের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদেরই সন্তান আমি, আমার এখানে পথ চলতে পারিবারিক কোনো প্রতিকুলতা অতিক্রম করতে হয়নি। শুরু থেকেই আমার বাবা মা আমাকে ভীষণ অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, আমার সঙ্গে থেকেছেন, আমাকে সাহস দিয়েছেন।
যে কারণে আমি আজ অনেকটা দূর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আরো দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে চাই আমি। হয়তো অনেকেই লবিং করে ভালো ভালো প্রজেক্টে কাজ করছেন। কিন্তু অভিনয়টা যদি ভালো না করা যায় কোনো লবিং-এ কাজ হবেনা, দর্শক তাকে গ্রহণ করে না। তাই লবিং ছাড়াই নিজের যোগ্যতায় যতোটুকু এগিয়ে যেতে পারছি তাতেই তৃপ্ত আমি। প্রতিনিয়ত আমি আমার নিজের ভাঙ্গি গড়ি, আমার আমিকে অভিনয়েই পূর্ণ রূপ দিতে চাই, দর্শকের অন্যতম প্রিয় একজন হতে চাই।’