টানা বেশ কয়েকদিন রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে অবশেষে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলাদেশের সিনেমার এক সময়ের সাড়া জাগানো নায়িকা অঞ্জনা। ৩৫০টিরও বেশি সিনেমার এই নায়িকার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রাঙ্গনে নেমে এসেছেন শোকের ছায়া। সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত, বিনয়ী আর সবার সঙ্গে ভীষণ মিশুক প্রকৃতির এমন নায়িকা বাংলাদেশের খুব কমই আছেন। তাই তার এই অসময়ে চলে যাওয়াটা সবার জন্যই ভীষণ বেদনাদায়ক। সবারই মনের মধ্যে আশা বাসা বেধেছিল যে হয়তো সুস্থ হয়ে আবার সবার মাঝে ফিরে আসবেন অঞ্জনা। কিন্তু মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয়েছে তাকে। সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি চলেই গেলেন পরপারে। অঞ্জনা মূলত ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী। বিশেষ বিশেষ দিবসে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে ঢাকা কিংবার ঢাকার বাইরে নৃত্য পরিবেশন করেন অঞ্জনা। বলা যায় প্রায় প্রতি মাসেই কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে থাকতো তার নৃত্য পরিবেশনা। অভিনয়ে অঞ্জনা বিরতি নিলেও নাচে কখনোই তিনি বিরতি নেননি। কারণ নায়িকা হবার অনেক আগে থেকেই তিনি একজন নৃত্যশিল্পী। সিনেমায় অভিনয় করেছেন সর্বশেষ ২০০৬ সালে জি সরকারের নির্দেশনায় ‘হাঙ্গামা’ চলচ্চিত্রে। দীর্ঘদিন নতুন কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করা থেকে বিরত ছিলেন। তবে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে এমদাদুল হক খানের নির্দেশনায় ‘দুটি মন’ নাটকে সর্বশেষ অভিনয় করেন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুতে অঞ্জনা শফিকুল ইসলাম স্বপনের নির্দেশনায় ‘লেমনডিউ’র বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেও বেশ আলোচনায় এসেছিলেন। অঞ্জনা জীবদ্দশায় জানিয়েছিলেন তার জন্ম ঢাকায়, ২৭ জুন। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। তার বাবা শ্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সাহা আর মা শ্রীমতি কমলা সাহা। বাবা ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করতেন। আজ থেকে প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় আগে তিনি তার বাবাকে হারান।