গানের ভুবনে প্রতিষ্ঠা পেতে যারা আসেন তাদেরকে বেশ ভালোভাবেই গান সম্পর্কে জেনে আসতে হয়। গান যথাযথভাবে শিখেও আসতে হয়। গান বা সঙ্গীত হলো গুরুমুখী বিদ্যা। গানে যার নিয়মিত চর্চা রয়েছে, প্রতিনিয়ত যিনি গানের চর্চায় সময় দেন, নিজের কণ্ঠকে প্রতিনিয়ত আরো শ্রুতি মধুর করে তোলার চেষ্টা করেন তারাই সত্যিকার অর্থে সঙ্গীতশিল্পী। এই সময়ে এসে অনেক শিল্পীই তা করেন না। তবে তাদের মধ্যে প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে ব্যতিক্রম ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খানের ছেলে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ইউসুফ আহমেদ খান। ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ’ প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে পেশাগতভাবে তার গানের ভুবনে যাত্রা শুরু হলেও শুধু একের পর এক স্টেজ বা টিভি শো করে যেতে হবে এমন ভাবনা তার কখনোই ছিল না। মন দিয়ে নিয়মিত চর্চায় থেকে সঙ্গীতে সাধনা করে যেতে হবে এমন ভাবনাটাই ছিল তার মাথায় সবসময়। যে কারণে প্রজন্মের একজন সত্যিকারের শিল্পী হিসেবেই ইউসুফ আহমেদ খানের নামটি আসে সবার আগে। ইউসুফ তার গায়কী নিয়ে যেমন ভীষণ সচেতন থাকেন, ঠিক তেমনি তিনি নিজে যখন গানের সুর করেন, সঙ্গীতায়োজন করেন তখনো তিনি সে ব্যাপারে ভীষণ সচেতন থাকেন। আবার এখন তিনি গানে প্রশিক্ষক হিসেবও কাজ করছেন। সঠিকভাবে আগ্রহীদের শেখানোর চেষ্টা করেন তিনি। এদিকে গত বছর থেকে ইউসুফ রাজধানীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গীতের শিক্ষক হিসেবেই চাকরি শুরু করেছেন। গানের ভুবনে পথচলায় বাধা নয় বরং এই শিক্ষকতা পেশা যেন গানে তাকে আরো ভীষণ মনোযোগী করে তুলেছে।
ইউসুফ আহমেদ খানের গানের ভুবনে পথচলা, তার মৌলিক গান প্রকাশ, গানে তার সাধনা, সুরকার সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ এবং একজন প্রশিক্ষক হিসেবে তার পথচলা-সবদিক বিবেচনা করে ইউসুফ আহমেদ খানের হাতে উঠে এলো এবার এক অন্যরকম সম্মাননা। সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অংশী’ থেকে তাকে ‘সঙ্গীত পুরস্কার ২০২৪’এ ভূষিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া কনভেনসন সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ-এর হাত থেকে ইউসুফ এই সম্মাননা গ্রহন করেন।
‘ইউসুফ বলেন, ‘অতি সাধারণ একজন শিল্পী আমি। এখনো গানে নিজেকে শিক্ষানবিশ হিসেবেই বিবেচনা করি। প্রতিনিয়ত বাবার কাছে মায়ের কাছে গানের অনেক কিছুই শেখার চেষ্টা করছি। যখনই কোনো মৌলিক গান গাইতে যাই, তখন যেন মনে হয় এখনো আমার অনেক শেখা বাকী। তারপরও চেষ্টা করি নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোভাবে গাইতে। মাঝে মাঝে সুর করি। কেমন হয় জানিনা, তা শ্রোতা দর্শক ভালো বলতে পারবেন। তবে সঙ্গীত পুরস্কার ২০২৪-এ আমাকে ভূষিত করায় আমি খুব আনন্দিত। কেন যেন মনে হয় আমি এই সম্মাননার যোগ্য নই। তারপরও অংশী-ও সবাই মনে করেছেন, আমাকে যোগ্য মনে করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি। বিশেষ ধন্যবাদ জানাই শ্যামলী খান খালামনিকে। আগামীতে আরো ভালো গান গাইবার, আরো ভালো সুর করার চেষ্টা থাকবে আমার। গানের মানুষ আমি, প্রাণের মাঝে গান ছাড়া আর কিছু নাই। তাই গানকেই ভালোবেসে বেঁচে থাকতে চাই।’ এদিকে আর দুদিন পরেই প্রকাশ পেতে যাচ্ছে ইউসুফের কণ্ঠে নতুন গান ‘কিছুটা সময়’। গানটি লিখেছেন ড. পল্লব খন্দকার, সুর সুঙ্গীত করেছেন অমিত টিটু চক্রবর্ত্তী। ইউসুফের কণ্ঠে সর্বশেষ প্রকাশিত শ্রোতাপ্রিয় গান ‘আমি চাই তোমাকে’, গানটি লেখা ও সুর করা অভি মঈনুদ্দীনের।