আজ বাংলাদেশের ‘নায়ক রাজ’ রাজ্জাকের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তিনি ৮৩’তে পা দিতেন। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের গর্ব, আমাদের সবারই প্রিয় নায়ক রাজ রাজ্জাক ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তার তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট অভিনয়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। আরেক ছেলে বাপ্পী দেশের বাইরেই স্থায়ী হয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর বিএফডিসিতেও নায়ক রাজ পরিবারের যাওয়া আসা একেবারেই কমে গেছে। খুব জরুরি কোনো প্রয়োজন না হলে বাপ্পারাজ, সম্রাটও বিএফডিসিতে সাধারণত যান না। জানা যায়, নায়ক রাজের জন্মদিনকে ঘিরে বিএফডিসিতে প্রতিষ্ঠিত কোনো সমিতিরই বিশেষ কোনো আয়োজনও নেই। তবে চাইলেই সমিতিগুলো বিশেষত শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি নায়ক রাজের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারতো। এদিকে গণমাধ্যম সব সময়ই ব্যতিক্রম। গণমাধ্যমগুলো নায়ক রাজের এই জন্মদিনে বিশেষ শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষত বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নায়ক রাজ’র জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে, যা সবসময়ই করে আসে গণমাধ্যমগুলো। বাংলাদেশের সিনেমায় আজ থেকে ৫৮ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। তবে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থান গড়ে নেন। এর পর থেকে টানা কয়েকদশক প্রধান নায়ক হিসেবেই তিনি অভিনয় করে গেছেন। তার অভিনীত অনেক উল্লেখযোগ্য সিনেমা রয়েছে। যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘কাগজের নৌকা’, ‘রংবাজ’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা’, ‘স্লোগান’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘স্বরলিপি’, ‘আলোর মিছিল’, ‘বেঈমান’, ‘আবির্ভাব’, ‘মনের মতো বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘নাচের পুতুল’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘আনার কলি’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘বড় ভালো লোক ছিলো’, ‘তওবা’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’, ‘সন্ধি’।
বাবার জন্মদিন প্রসঙ্গে নায়ক রাজ রাজ্জাকের ছোট ছেলে সম্রাট বলেন, ‘সত্যি বলতে কী দিন যতো যাচ্ছে যে কারো জন্মদিন নিয়ে উচ্ছ্বাসটা কমে যাচ্ছে। একটা সময় আব্বুর জন্মদিনে বড় পার্টি হতো। সেই সময়টা খুউব উপভোগ করতাম। কিন্তু এখনতো আসলে বিশেষ দিন বলেই যে এমন নয়, আব্বুর জন্য সবসময়ই দোয়া করি। আব্বুর কবরের কাছে যাই, আজকেও যাবো। আল্লাহর কাছে দোয়া করে শুধু এতোটুকুই বলবো-আল্লাহ যেন আমার আব্বুকে বেহেস্ত নসীব করেন। আব্বু কোনোদিন কাউকে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকলে যেন ক্ষমা করে দেন। শুধু দোয়া চাই সবার কাছে। জন্মদিনে কেউ বিশেষ আয়োজন করলেন কী করলেন না এ সব নিয়ে আমাদের সত্যিই কোনো ভাবনা নেই।’