বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদ। অভিনয় অঙ্গনের কিংবদন্তী শিল্পীদের কাছে নাদিয়া যেমন ভীষণ স্নেহের একজন শিল্পী ঠিক তেমনি তার পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের কাছেও নাদিয়া ভীষণ প্রিয় এক শিল্পীর নাম। তিনি সবসময়ই নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন একজন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে। ছোটবেলায় ‘নতুনকুঁড়িতে তিনি নাচে এবং অভিনয়ে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। অভিনয়ের দুনিয়ায় পথ চলতে চলতে তিনি অভিনয় জীবনের ‘রজত জয়ন্তীতে (২৫ বছরে) পদার্পণ করেছেন। অভিনয় শেখারও আগে নাদিয়ার নাচ শেখা। তার নাচের গুরু প্রয়াত হাবিবুল চৌধুরী। এর পর শিশু একাডেমিতে শেখার পর, সাত বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করেন তিনি ‘বাফা’ থেকে। প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন তিনি। এর পর তিনি রাইজা খানম ঝুনু, সোহেল রহমান, শিবলী মোহাম্মদ, শামীম আরা নীপা ও দীপা খন্দকারের কাছেও নাচ শিখেছেন। তবে অভিনয়ে তার গুরু এ্যাডওয়ার্ড বাড়ই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পোস্টমাস্টার’র রতন চরিত্রে বারৈ’র লেখা স্ক্রিপ্টে অভিনয় করেই ‘নতুনকুঁড়িতে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। এর পরপরই নাদিয়া বিটিভির ‘বারো রকমের মানুষ’ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান। মাঝে বিরতির পর ২০০০ সাল থেকে নাদিয়া মূলত অভিনয়ে নিয়মিত হতে শুরু করেন। প্রথম প্রচারে আসে রেজানুর রহমানের ‘ছায়াকায়া’ নাটকটি। এতে অভিনয় করে সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী হিসেবে ‘বাচসাস’ পুরস্কারে ভূষিত হন। তবে তার আগে তিনি মোহন খানের ‘দূরের মানুষ’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন। অভিনয় জীবনের দীর্ঘদিনের পথচলায় নাদিয়া বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দীপ্ত টিভিতে প্রচার শেষ হওয়া ‘বকুলপুর’ নাটকের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। অভিনয় জীবনের এই সময়ে এসে এই ধারাবাহিক নাটকে ‘প্রিন্সেস দিবা’, পরবর্তীতে চেয়ারম্যান দিবা চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় দর্শকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
তাই পরিচালক কায়সার আহমেদের কাছে তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। নাদিয়া কৃতজ্ঞ পরিচালক আবুল হায়াত, সালাহউদ্দিন লাভলু, আল হাজেন, সুমন আনোয়ার, সকাল আহমেদ, ফজলুর রহমান, তাহের শিপন, অম্লান বিশ্বাস, এসএ হক অলিকসহ আরো বেশ কয়েকজন নির্মাতার কাছে। সহশিল্পীদের মধ্যে তিনি ইন্তেখাব দিনার, জয়, মিলন, চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম জাহিদ হাসান, জিতু আহসান, তৌকীর আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞ। অভিনয় জীবনের রজত জয়ন্তী প্রসঙ্গে নাদিয়া আহমেদ বলেন, ‘অভিনয় জীবনের দীর্ঘদিনের এই পথচলায় দিনের পর দিন দেশে কিংবা দেশের বাইরে মানুষের এই যে অকৃত্রিম ভালোবাসা, এটাইতো আসলে জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। ভীষণ আনন্দ নিয়েই পরিবার বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে জীবন উদযাপন করতে ভালোবাসি।’