বাংলাদেশের প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী বিগত বেশ কয়েকমাস যাবত আমেরিকাতে আছেন। সেখানেই তিনি মা ও মেয়ের সঙ্গে আছেন। একজন সন্তানের কাছে মাই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। তাই মায়ের ভালোবাসার ছায়াতলে থেকে যেন প্রশান্তিতে আছেন মৌসুমী। প্রতিদিনই প্রতিক্ষণে মৌসুমী দেশকে, দেশের মানুষকে অনুভব করেন। যে কোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন। তবে ঠিক কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন তিনি তা নিশ্চিত করেননি। মৌসুমী যখন যেখানেই থাকুন না কেন, মনে মনে তিনি একজন মানুষকে সবসময় খুঁজে বেড়ান। আর সেই মানুষটি হলেন তার গৃহশিক্ষিকা ‘আনা’। ছোট্টবলোয় মৌসুমী যখন রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে পড়তেন সেই সময় আনা মৌসুমীকে পড়াতে তার বাসায় আসতেন। আনা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আনার সঙ্গে মৌসুমীর পরিবারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিটি মানুষের জীবনেই হয়তো এমন মানুষ আছেন যাকে মানুষ নীরবে মনে মনে খুঁজে বেড়ান। মৌসুমী বলেন, ‘পড়াশুনায় আমি খুব ফাঁকিবাজ ছিলাম। কিন্তু আনা ম্যাডাম আমাকে খুউব যত্ন করে পড়াতেন। তিনি আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন, আদর করতেন। তার সেই স্নেহ মায়া আজও ভীষণ মিস করি। খুউব কাছে থেকে তাকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। মনে হয় তার দেখা পেলে আমি হারিয়ে যাওয়া ছোট্টবেলাটা ফিরে পাবো। মাঝে মাঝে মনে হয় তিনি বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে দেখা হবে। দেখা হলে হয়তো জড়িয়ে ধরে আমি খুব করে কেঁদেও ফেলতে পারি। জানিনা এই জীবনে আর কোনোদিন আনা ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হবে কি না। তবে আমি দোয়া করি আনা ম্যাডাম যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।’ একজন গৃহ শিক্ষিকার প্রতি মৌসুমীর এমন টানই তার উদার মনের পরিচয় বহন করে। মৌসুমী তার কর্মক্ষেত্রেও তার সর্বোচ্চ ভালো ব্যবহার দিয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন। দর্শক ভক্তসহ সবার ভালোবাসায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। মৌসুমী অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘সোনার চর’। এদিকে মৌসুমী আমেরিকাতে বাংলাদেশীদের নানান ধরনের অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করেন। চলচ্চিত্রে মৌসুমীর অভিষেক হয়েছিল সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত সালমান শাহের বিপরীতে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। এরপর সালমান শাহের সঙ্গে ‘স্নেহ’, ‘অন্তরে অন্তরে’ ও ‘দেন মোহর’ সিনেমাতে অভিনয় করেন মৌসুমী। সালামান শাহ মৌসুমী জুটিকে এই চারটি সিনেম ছাড়া আর কোনো সিনেমাতে অভিনয়ে দেখা যায়নি।