ইসরাত জাহান জুঁই, এই প্রজন্মের জনপ্রিয় লোক সঙ্গীত শিল্পী। একজন গায়িকা হিসেবে জুঁইয়ের আজকের যে জনপ্রিয়তা তা একদিনে হয়নি। ছোটবেলা থেকেই গানে গানে দিন পার করতে করতে অনেক কষ্ট অনেক শ্রম আর অধ্যাবসায়ের পর জুঁই আজ শ্রোতা দর্শকের কাছে প্রিয় একজন শিল্পী হয়ে উঠেছেন। একেবারেই নিজের একান্ত চেষ্টায় জুঁই তার আজকের অবস্থানে এসেছেন। তার মা আঞ্জুমান আরা বেগম দীপার কাছেই জুঁইয়ের গানে হাতেখড়ি। এরপর নরসিংদীতেই দুজনের কাছে গানে তালিম নিয়েছেন। সেখানকার শিল্পকলা একাডেমিতে চার বছরের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কোর্স সম্পন্ন করেন। ঢাকায় আসার পর বাফাতে তিন বছরের লোক সঙ্গীতের কোর্স সম্পন্ন করেন আবু বকর সিদ্দিকের কাছে। কিছুদিন আগেই তিনি ঢাকার সরকারি সঙ্গীত কলেজ থেকে লোক সঙ্গীত বিষয়ে অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন। একই কলেজে তিনি একই বিষয়ে বর্তমানে মাস্টার্স করছেন। অর্থাৎ নিজেকে গানে ঠিকঠাক মতো শিক্ষিত করে তুলেই তিনি গানের ভুবনে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন।
কিছুদিন আগে তার কণ্ঠে প্রকাশিত হয় তার মৌলিক ফোক গান ‘সোনা বন্ধু করলো ডাকাতি’ গানটি। নির্মল দাসের লেখা ও সুরে প্রকাশিত এই গান শ্রোতা দর্শকের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে। আগামী ঈদ উপলক্ষে জাহাঙ্গীর রানার লেখা ও সুর করা ‘প্রতিদান’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ করার কথা রয়েছে। জুঁই জানান তার নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ইসরাত জাহান জুঁই’ ও ‘জুঁই অফিসিয়ালসের জন্য তাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গান করতে হয়। প্রতি মাসে দুই/তিনটি গান তাকে প্রকাশ করে যেতে হয়। কারণ তার চ্যানেল দুটো অনেক কষ্টে এখন প্রতিষ্ঠিত। কোনো গান প্রকাশ করলেই তা শ্রোতা দর্শকের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে। যে কারণে গানের বাইরে আর কোনো কিছু নিয়েই তার ভাবনা নেই। যদিও পেশাগতভাবে গানের ক্যারিয়ার শুরুর সময় দেশের কোনো প্রতিষ্ঠিত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা বা অনুপ্রেরণা পাননি তিনি ।
যে কারণে তিনি গান নিয়ে নিজের চ্যানেলেই মনোযোগী হন। জুঁইয়ের কণ্ঠে প্রথম প্রকাশিত মৌলিক গান ছিল ‘তুমি বুঝলা না’। এরপর তার কণ্ঠে প্রকাশিত আলোচিত, সাড়া ফেলা গানগুলো হলো ‘মিরপুর এক্সপ্রেস’, ‘শেষ পাখি’, ‘দুষ্টু মেয়ে’, ‘ষোলকলা’, ‘মরার কোকিলে’, ‘ভাগ্যে ছিলি না’, ‘বন্ধু বড় মায়া লাগাইছে’, ‘প্রেমের হাওয়া’, ‘তুমি কারে পাইয়া সুখি’, ‘পিরিত মধুর যন্ত্রণা’ ইত্যাদি। আর কাভার করা গানের মধ্যে আলোচিত ‘তোমরা কইওগো বুঝাইয়া’ (৭০ মিলিয়ন ক্রস করেছে), ‘জীবন মানে যন্ত্রণা’, ‘কলিজা ভুনা’, ‘বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না’, ইত্যাদি গান জুঁইয়ের কণ্ঠে আবারো ভীষণ আলোচনায় আসে। সব মিলিয়ে জুঁই এখন পর্যন্ত ২০০’র বেশি গান করেছেন। জুঁই বলেন, ‘আমি শ্রোতা দর্শকের কাছে ভীষণ কৃতজ্ঞত। তাদের ভালোবাসার কারণেই আমি আজকেরই জুঁই। আমার স্বামী নজরুল ইসলাম রাজ আমাকে গানে অনুপ্রেরণা দেন। তবে তার আরো সহযোগিতা পেলে আমি আরো বহুদূর যেতে পারতাম।