আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে চাঙা করতে বিদায়ি ২০২২ সালের শুরু থেকেই উদ্যোগ নেয় বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে বছরজুড়ে নানা পরিকল্পনা আর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে দীর্ঘ ১৬ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের টার্গেটে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে দাঁড়ানোই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট। বছরের শেষ দিকে এসে সেই টার্গেট পূরণে বিএনপি অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। এরইমধ্যে সরকারবিরোধী অন্তত ৩২টি দল নিয়ে ১০দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি। এছাড়া চূড়ান্ত আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুতের অংশ হিসেবে ১০ বিভাগে গণসমাবেশ, জাতীয় সংসদ থেকে দলীয় এমপিদের পদত্যাগ, রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপ রেখা ঘোষণাসহ বিএনপির নানা কর্মকাণ্ড ছিল বিদায়ী বছরের অন্যতম আলোচিত বিষয়। তবে গত বছরের বেশ কিছু দিন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাসপাতালে থাকা ও তার উন্নত চিকিৎসার দাবির পাশাপাশি বছরের শেষ দিকে এসে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান এবং দলীয় মহাসচিবসহ শীর্ষ অনেক নেতার কারাবন্দিত্ব নিয়ে বিএনপিতে বেশ উদ্বেগ ছড়ায়। তারপরও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দিক-নির্দেশনায় গত বছর শুরু হওয়া আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নতুন বছরের শুরুতেই সফলতা দেখার আশা করছে দলটি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা গণমিছিলের মধ্য দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি। আমার বিশ্বাস, নতুন বছর হবে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনের বছর। তিনি বলেন, আমরা একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবি দিয়েছি এই বছরই তার ফলাফল আনতে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো। সরকার দাবি না মানলে অবশ্যই এই আন্দোলনের ফয়সালা আমরা রাজপথেই করব।
চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য বৃহত্তর ঐক্য গঠন : বিগত বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। একইসঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং বর্তমান সরকারের পতনে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে গত বছরের প্রথম থেকেই তৎপরতা শুরু করেছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে একদিকে সারা দেশে দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি সরকারবিরোধী সব দলকে নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের চেষ্টা চালায়। তবে গতানুগতিক জোট পদ্ধতি বিলুপ্ত করে এবার যুগপৎ আন্দোলনের টার্গেট নিয়ে আগ্রহী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন বিএনপি নেতারা। জাতীয় সরকার গঠনের আশা দেখিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যারা যুগপৎ আন্দোলন করতে ইচ্ছুক এমন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গত বছরের ২৪ মে সংলাপ শুরু করে বিএনপি। কয়েকদফা বৈঠকের পর তার চূড়ান্ত রূপ পায়। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একমত পোষণ করে সাত দলীয় জোট-গণতন্ত্র মঞ্চ। একইসঙ্গে নিষ্ক্রিয় হয় পুরানো ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পরে ২০ দলের শরিক দলগুলো ‘১২ দলীয় জোট’ ও ‘১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ নামে নতুন দুই ভাগ হয়ে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী এবং অলি আহমদের এলডিপি আলাদাভাবে বিএনপির আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে। এরইমধ্যে গণমিছিলের মধ্য দিয়ে যুগপৎ কর্মসূচির সূচনা করেছে সংশ্লিষ্টরা। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে জোটের পরিবর্তে যুগপৎ পদ্ধতি চালু করেছে বিএনপি। এতে মূলত জামায়াতের সঙ্গে কৌশলী সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে দলটি।
বিভাগীয় গণসমাবেশ ও আলোচিত ১০ ডিসেম্বর : নেতাকর্মীদের চাঙা করে ইস্যুভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে বিভাগীয় সমাবেশে শুরু করেছে বিএনপি। দলটির বিগত রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোর তুলনায় যা ব্যতিক্রম ছিল। এরপর গত ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় ও ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ করে বিএনপি। পরিবহণ ধর্মঘটসহ সরকারি মহলের নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এসব সমাবেশ সফলের মধ্য দিয়ে দলটিতে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। তবে ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ঢাকায় সমাবেশের প্রায় দেড় মাস আগে দলটির নেতা আমানউল্লাহ আমানের এক বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। আমান বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে। এরপর থেকে ১০ ডিসেম্বর যত ঘনিয়ে আসছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে ততই উত্তেজনা বাড়ে।
একপর্যায়ে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাইলেও সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা যেকোনো মাঠে করার কথা বলা হয়। তবে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে থাকে বিএনপি। এ নিয়ে বিতর্ক ও আলোচনার মধ্যেই গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজনের মৃত্যু এবং অনেকেই আহতসহ গ্রেপ্তার হন। এরপর বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে কয়েকদিন টানটান উত্তেজনা চলে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি। শেষপর্যন্ত সমাবেশে জাতীয় সংসদ থেকে দলীয় এমপিদের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়াসহ ১০ দফা দাবি ও যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষে করে দলটি। এরমধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মোড় নেয় বিএনপি।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ : ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপির ৬ জন বিজয়ী হন। পরে সংরক্ষিত নারী আসনের একটি পায় দলটি। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, তারা সংসদে যাবে না। পরে সিদ্ধান্ত বদলে শপথ নেন দলটির সংসদ সদস্যরা। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার অংশ হিসেবে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। এরপর দিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে সশরীরে পদত্যাগপত্র জমা দেন বিএনপির সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, মো. মোশাররফ হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জাহিদুর রহমান, রুমিন ফারহানা এবং আবদুস সাত্তার। তবে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ দেশের বাইরে থাকায় সশরীরে আসতে না পারায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ হয়নি। তবে, দেশে ফিরেই ২২ ডিসেম্বর স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর মধ্যদিয়ে বিএনপির সব সংসদ সদস্যের পদত্যাগ নিশ্চিত হয়।
পদত্যাগ করা বিএনপির এমপিরা জানান, বর্তমান সংসদ মহাজোট সরকারের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এ সংসদকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ দিকে পদত্যাগের দিনই বিএনপির ৬ সংসদ সদস্যের আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। এসব আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পরে আরও একটি আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।
রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ২৭ দফার রূপরেখা : ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে’ গত ১৯ ডিসেম্বর ২৭ রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি। দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির এই রূপরেখা আলোচনার জন্ম দেয়। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রকে মেরামতে বিএনপির রূপরেখা হাস্যকর স্ট্যান্টবাজি। তারা ক্ষমতায় এলে রূপরেখা বাস্তবায়ন হবে না। তারা এলে এই রূপরেখা নদীতে ভেসে যাবে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে এই ২৭ দফা রূপ রেখা বাস্তবায়ন করা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনে আরও প্রস্তাব দেয়া হবে বলেও দলটি জানায়। বিএনপির মিত্র রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহল এসব রূপরেখাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ : গত বছরজুড়ে খালেদা জিয়াকে নিয়ে দলটিতে বেশ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। গুরুতর অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে দিন কাটে তার। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো ও তার স্থায়ী মুক্তির দাবি ছিল বিএনপির ও তার পরিবারের। বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের পরও সে দাবি পূরণ না হওয়ায় অনেকটায় হতাশ দল ও পরিবার। বর্তমানে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি অব্যাহত রেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুলসহ শীর্ষ নেতাদের কারাবন্দিত্ব : ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৮ ডিসেম্বর রাতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৯ ডিসেম্বর তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ কয়েকশ‘ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যাদের বেশিরভাগ একাধিক মামলা নিয়ে এখনও কারাগারে দিন কাটছে।
কর্মসূচি পালনকে ঘিরে ১৬ নেতাকর্মী নিহতের অভিযোগ : এদিকে গত বছর ইস্যুভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও বিভিন্নভাবে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ১৬ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিল কর্মসূচি পালনের সময় পঞ্চগড়ে দলের এক নেতা নিহত হয় বলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ এবং হামলায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হন বলে দলটির দাবি। এছাড়া হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেছেন।
নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কার তৈমুর-সাক্কু : বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। সে হিসেবে গত বছর অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি দলটি। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। প্রার্থী হওয়ায় তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ১৮ জানুয়ারি এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। এছাড়া দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ১৯ মে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয় সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে।
২০২২ সালের দলীয় কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, একটা কঠিন মুহূর্ত দিয়ে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের চাঙা করেছে। তারা এখন রাজপথে নেমে এসেছে। যে কোনো সিদ্ধান্ত আসলে বাস্তবায়নে প্রস্তুত ও শক্তি অর্জন করেছে। বিএনপি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেছে। আগামীতে গণতন্ত্র ফিরে আসবে আন্দোলনের মাধ্যমে। খালেদা জিয়া আবারও দেশের নেতৃত্ব দেবেন।
এ বিষয়ে চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং ও বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ২০২২ সালে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস ওঠে। বিএনপি প্রতিটি ইস্যুতে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনে বিএনপিসহ অঙ্গ-সংগঠনের সাতজন শহীদ হন। এছাড়া বন্যায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে মানুষের পাশে থেকেছে বিএনপি। এমনকি জনগণের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছে দলটি। জনগণের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।