ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ

* এ বছর বিপিএম ও পিপিএম পদক পাচ্ছেন ১১৫ জন * আইজি’স ব্যাজ পাচ্ছেন ৪৫৮ জন
পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ

‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ আছে জনতার পাশে’ এই প্রতিপাদ্যে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ছয় দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন আজ সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্যদিয়ে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন। এ সময় তিনি পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণও দেবেন।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেবেন। পুলিশ সপ্তাহের প্রতিটি অনুষ্ঠান যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা গত রোববার এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে জানা গেছে, ২০২২ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২৫ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা’ পদক প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের এসব পদক পরিয়ে দিবেন।

এছাড়া প্রশংসনীয় ও ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতি বছর পুলিশ সদস্যদের দেয়া হয় পুলিশ ফোর্সেস এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ (আইজি’স ব্যাজ)।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এবারের পুলিশ সপ্তাহে ভালো কাজের জন্য পুরস্কার হিসেবে আইজি’স ব্যাজ পাচ্ছেন ৪৫৮ জন পুলিশ সদস্য।

আগামীকাল রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের প্যারেড গ্র্যাউন্ডে তাদের এই ব্যাজ পরিয়ে দেবেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) পৃথক বাণী দিয়েছেন। পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানেরও।

পুলিশ সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল পরিদর্শন, পুলিশ সদস্যদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ প্যারেড, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশ্যে ভাষণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার পুরস্কার বিতরণ, পুলিশ অফিসারগণের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন ইত্যাদি।

পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। পুলিশ সপ্তাহ শেষ হবে ৮ জানুয়ারি।

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও প্রাক্তন সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী আহ্বানে তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়ে তৎকালীন পুলিশের সদস্যরা ২৫ মার্চ কালরাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৪ বছরে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পদ সৃজন করে, জনবল নিয়োগ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ, প্রশাসন ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে পেরেছি। দেশের গন্ডি পেরিয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের পুলিশ সদস্যরা ভূয়সী সম্মান ও মর্যাদা অর্জন করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই করেছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যরা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘থ্রি-নট-থ্রি’ রাইফেল হাতে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমিতে নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা করে। যেসব পুলিশ সদস্য মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত