ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে আট জেলা

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে আট জেলা

পৌষের শেষ দশকে এসে ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় জেঁকে বসছে শীত। এসব এলাকায় দিনের বেলাতেও চলছে কুয়াশার দাপট; ভরদুপুরেও রোদের দেখা মিলছে না। এরই মধ্যে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়ে দেশের আট জেলায় শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঢাকাতেও তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি কমে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।

দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশেই অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিম বাতাসে নাকাল হতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষকে। হাসপাতালে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের ভিড়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শীত নিবারণে অনেকেই ছুটছেন কাপড়ের দোকানে। তবে শীতবস্ত্রের অভাবে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়, যা অব্যাহত থাকবে।

এ দিন যশোরে দেশের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৬ ডিগ্রির মধ্যেই ছিল। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর টেকনাফের ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আবহাওয়াবিদ হামিদ বলেন, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় দেশের উত্তর, উত্তর পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পৌষের মাঝামাঝি এসে টানা কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা কমায় শীত ও কুয়াশার দাপট বেড়েছে। দিনের অল্প যেটুকু সময় কুয়াশা ভেঙে সূর্যের দেখা পাওয়া যায়, তার বাইরে সারা দিনই গরম কাপড় গায়ে চাপিয়ে থাকতে হচ্ছে।

সকাল সকাল কাঁপতে কাঁপতে স্কুলমুখী হয় স্কুল শিক্ষার্থীরা। নগরীর শ্রমজীবী আর পেশাজীবীরাও গায়ে মোটা কাপড় জড়িয়ে ছোটেন গন্তব্যে।

এই আবহাওয়ার মধ্যেও পাতলা কাপড় পরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢালাইয়ের কাজে ব্যস্ত একজন শ্রমিক জানান, দিনভরই পানির মধ্যে কাজ করতে হয়। আর কাজ করলে শরীরে গরম হয়, শীতে কামড়াতে পারে না। কাজ থামালেই শীত লাগবে। রিকশাচালকদের অনেকেই একই ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আকাশ আংশিক মেঘলা এবং সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে এবং দেশের কোথাও কোথাও তা দুপুর পর্যন্ত চলতে পারে কুয়াশার দাপট।

জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত