ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অভিনন্দন জানালেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

নানা নাটকীয়তায় মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার হলেন ম্যাকার্থি

নানা নাটকীয়তায় মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার হলেন ম্যাকার্থি

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নানা নাটকীয়তায় অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার নির্বাচিত হলেন কেভিন ম্যাকার্থি। তবে এ নির্বাচন ছিল একটি কঠিন প্রক্রিয়ার। ১৫ দফা ভোটাভুটির পর স্পিকার নির্বাচিত হন রিপাবলিকান পার্টির এ নেতা। গতকাল ম্যাকার্থির পক্ষে ভোট পড়ে ২১৬টি। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক নেতা হাকিম জেফ্রিস পেয়েছেন ২১২ ভোট। জয়লাভ করার জন্য ভোটের প্রয়োজন ছিল ২১৮টি। প্রতিনিধি পরিষদের আরও ৬ সদস্য ‘প্রেজেন্ট’ ভোট দিয়েছেন। খবর বিবিসির।

রিপাবলিকানরা সদস্যরা এর আগে কেভিন ম্যাকার্থিকে মনোনীত করতে সম্মত হলেও শেষমুহূর্তে দলটির কয়েকজন নেতা সমর্থন প্রত্যাহারের হুঁমকি দিলে৫৭ বছর বয়সী এ নেতার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। এ নিয়ে কয়েক দিনের অচলাবস্থার পর শুক্রবার রাতে চরম নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়। ১৪তম ভোটাভুটিতে আর মাত্র একটি ভোট পেলেই স্পিকার পদ নিশ্চিত হতো ম্যাকার্থির। কিন্তু নিজ দলীয় সদস্য ম্যাট গেটজ ভোট দিতে রাজি না হলে আরও একবার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন ম্যাকার্থি। এ নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদে হট্টগোলও শুরু হয়। এমনকি একপর‌্যায়ে রিপাবলিকান নেতা মাইক রজার্সকে টেনে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে পঞ্চম দীর্ঘতম প্রতিযোগিতার পর হাউজ স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন কেভিন ম্যাকার্থি। তার বিজয়ে মার্কিন কংগ্রেসে ১৬৪ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম অচলাবস্থার অবসান ঘটলো।

বিজয়ী ঘোষণার পর ম্যাকার্থি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি খুশি যে ভোটাভুটি শেষ হলো। নতুন স্পিকারকে এরই মধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন রিপাবলিকান নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তিনি রিপাবলিকানদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। এরআগে গভীর সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। ১৯২৩ সালের পর গত ১০০ বছরে এমন সংকটে পড়েনি মার্কিন কংগ্রেস। গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান রিপাবলিকানরা। উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে ডেমোক্র্যাট। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের অধিবেশন শুরুর দিনে স্পিকার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বৃহস্পতিবার মোট পাঁচ দফা ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়। প্রতিবারই ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কংগ্রেসের অধিবেশন মুলতবি করতে একমত হন আইনপ্রণেতারা। প্রতিনিধি পরিষদের আসনসংখ্যা ৪৩৫। এর মধ্যে রিপাবলিকানদের ২২২ ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ২১২। স্পিকার হতে ম্যাকার্থির প্রয়োজন ২১৮ ভোট। দলের বিদ্রোহী কট্টরপন্থী আইনপ্রণেতাদের সমর্থন ছাড়া তার পক্ষে স্পিকার হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাকে স্পিকার পদে সমর্থন দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ম্যাট গায়েৎজের নেতৃত্বে উগ্র ডানপন্থী আইনপ্রণেতারা।

যেসব আইনপ্রণেতা স্পিকার নির্বাচনের ভোটাভুটিতে ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তারা উগ্র-রক্ষণশীল ‘ফ্রিডম ককাসের’ সদস্য। আর তাদের অনেকে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করে আসছেন। ২০২০ সালের ওই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারচুপির অভিযোগ এনে তখন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, নির্বাচনে তার বিজয় ‘ছিনিয়ে’ নেয়া হয়েছে। ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে ডানপন্থীদের এই বিদ্রোহ ব্যক্তিগত বিরোধ ছাড়িয়ে মতাদর্শিক বিরোধে গড়ায়। বিদ্রোহীরা কেন্দ্রীয় সরকারের আকার, কাজ ও কাজের পরিধিকে ব্যাপকভাবে সীমিত করতে চান। আর কংগ্রেস এই কাজ যাতে সহজভাবে করতে পারে, সেভাবেই কংগ্রেসের কার্যপ্রণালিতে সংস্কার আনতে চান তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত