ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুক্তিপণ দাবিতে অপহৃত চার কৃষককে নির্যাতন

পরিবারের কাছে ২৫ লাখ টাকা দাবি
মুক্তিপণ দাবিতে অপহৃত চার কৃষককে নির্যাতন

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত ৪ কৃষককে মুক্তিপণের দাবিতে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অপহরণকারি চক্রের সদস্যরা মুঠোফোনে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অপহৃতদের পরিবারের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত রোববার ভোরে হ্নীলার লেচুয়াপ্রাং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ওই ৪ কৃষককে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছিলেন অপহৃতদের স্বজনরা। পরে রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মুঠোফোনে মুক্তিপণ হিসেবে এ টাকা দাবি করা হয় বলেও তারা জানান।

তবে অপহৃতদের স্বজনরা ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির তথ্য দিলেও এ নিয়ে পুলিশ এখনো কারও কাছ থেকে অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, টেকনাফের হ্নীলা থেকে অপহৃত ৪ কৃষককে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এখনো পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। এছাড়া ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, অপহরণকারি চক্রের সদস্যরা অপহৃত আব্দুর রহমানের নিজস্ব ফোন থেকে কল করে তার পিতা গুরা মিয়ার কাছে এ মুক্তিপণ দাবি করেছে। জানতে পেরে তিনি বিষয়টি নিয়ে অপহৃতদের পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছেন। গত রোববার ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় কৃষি জমিতে ফসল (ভুট্টা) পাহারা দেয়ার সময় ৪ কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবারগুলো। অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আব্দু সালাম, গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ ও রাজা মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম।

অপহৃত এক কৃষকের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত ৪ জনের মধ্যে আব্দুর রহমানের কাছে মোবাইল ফোন ছিল, অপহৃত আব্দুর রহমানের মোবাইল ফোন থেকে কল করে অপহৃত আব্দুল হাকিম বলেছেন-তাদের ছাড়িয়ে আনতে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে এবং এখনো অপহৃতদের পাহাড়ে রাখা হয়েছে। তবে পুলিশকে জানাতে নিষেধ করা হয়েছে বলেও জানান তারা। কারণ হিসেবে বলেছেন, পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে পারবে না। কিন্তু পুলিশকে জানালে তাদের (অপহৃতদের) আরও নির্যাতন করা হবে বলে জানিয়েছেন অপহৃত হাকিমের পরিবারকে।

অপহৃত আরেক কৃষকের বড় ভাই জানান, পাহাড়ের পাদদেশে তাদের ক্ষেতের জমি আছে। যেখানে প্রায় প্রতিদিন পাহাড় থেকে হাতি নেমে ফসলের ক্ষেত নষ্ট করে। তাই হাতি থেকে ক্ষেত রক্ষায় শনিবার রাতেই পাহাড়ে যায় চারজন। কিন্তু প্রতিদিনের মতো ভোরে ফিরে আসার কথা থাকলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত চারজনের কেউ বাড়ি ফিরেননি। এ দিকে স্থানীয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গত সাড়ে ৩ মাসে এ নিয়ে কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। যার অধিকাংশই মোটা অংকের মুক্তিপণের মাধ্যমে ছাড়া পেয়েছেন।

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত