ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেটে যাচ্ছে ইভিএমে ভোট নিয়ে সংকট

কেটে যাচ্ছে ইভিএমে ভোট নিয়ে সংকট

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে আগে যে সংকট ছিল, তা এখন কেটে যাচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে ইভিএম প্রকল্প নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ আসায় নড়ে-চড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে ইভিএম ব্যাবহার করা হবে বলে জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র জানায়, ইভিএম প্রকল্প দ্রুত পাশ না হওয়ায় এ যন্ত্র ব্যবহার নিয়ে আগে কিছুটা সংশয়ে ছিল ইসি। কিন্তু পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত প্রকল্প পাস করার ঘোষণা আসায় এ সংকট কেটে গেছে। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ইভিএম কিনে বৃহৎ আকারে ভোটে ব্যবহার করতে চায় ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও ইভিএমে সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করতে চায় ইসি।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর পাঁচশোর বেশি নির্বাচন ইভিএমে করেছি। সেখানে কোনো সমস্যা হয়নি। কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হবে। কিন্তু আমার ইচ্ছে শতভাগ কেন্দ্রে ইভিএমের ব্যবস্থা করা। আমরা এখন পর্যন্ত অনড় ইভিএমে ভোটের ব্যাপারে। আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে প্লানিং কমিশন মূল্যায়নের পর সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, যত শিগগির সম্ভব ইভিএম কেনার প্রকল্পটি অনুমোদন করানো হবে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মকানুনের মধ্যেই ইভিএম নিয়ে কথা বলছি। নির্বাচন কমিশনের সব প্রয়োজন আইনের আলোকে বিচার করা হবে। যত শিগগির সম্ভব ইভিএম কেনার প্রকল্প অনুমোদন করা হবে। দ্রুত আমরা এটি করানোর চেষ্টা করব।

জানা যায়, আরও দুই লাখ ইভিএম কেনার জন্য আট হাজার ৭১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করে প্ররিকল্পনা মন্ত্রণালয় পাঠায় নির্বাচন কমিশন। পরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠায় ইসিকে ব্যয় কমানোর জন্য। যাছাই-বাছাই করে আবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় ইসি। তবে প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

এক প্রশ্নের জাবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তাদের (নির্বাচন কমিশন) অবস্থান আমরা জানি না। তবে পেপারে আমরা পড়েছি, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ইভিএম কেনার প্রকল্পটি পাস হতে হবে।

এমএ মান্নান বলেন, শুধু একনেক সভায় এগুলো অনুমোদন হয়, ব্যাপারটি তা নয়। তাদের (নির্বাচন কমিশন) সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। তাদের সচিব আমাদের সচিবের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। ১৫ জানুয়ারি কোনো রেড লাইন (লাল রেখা) নয়, এটা ১৮ জানুয়ারিও হতে পারে, ২০ জানুয়ারিও হতে পারে। এমনকি আগামীকালও ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, চলতি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইভিএম নতুন প্রকল্প পাস না হলে ১৫০ আসনে এই যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এক্ষেত্রে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে। রাশেদা সুলতানা বলেন, ইভিএম প্রকল্পের অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করবো বলে আমরা বলেছিলাম। এক্ষেত্রে প্রকল্প পাস না হলে আমাদের কাছে বর্তমানে যা আছে তাই দিয়েই ভোট করব। মধ্য জানুয়ারির মধ্যে নতুন প্রকল্প পাস না হলে ব্যালটে যেতে হবে। সেই প্রস্তুতিও নিতে হবে। সময়মতো হলে তো ভালো। না হলে যা আছে তা নিয়েই করবো।

ইভিএম বিষয়ে তিনি বলেন, ইভিএমের জনবলের জন্য পুনর্বিবেচনা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। মাত্র ১৩ জন লোকবল দিয়ে ইভিএমের ভোট পরিচালনা সম্ভব নয়। ইভিএমের প্রকল্পের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ১৫ জানুয়ারির পরে হলে খুবই কঠিন হবে ইভিএমে নেয়া। ইভিএম না হলে ব্যালটেও ভোট করার জন্য প্রস্তুত ইসি।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ইভিএম শুধু ফল দেয়, এটি একটি যন্ত্র, তাকে যা ইনপুট দেয়া হবে তার ফলাফল সে প্রদর্শন করবে। তবে এর পেছনে যারা থাকে, তারাই দুষ্কর্মগুলো করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত