ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঢাকাসহ ১০ বিভাগে আজ গণঅবস্থান

ব্যাপক শোডাউনে বিএনপি

* ৩৬ দলের যুগপৎ অবস্থান * আসতে পারে নতুন কর্মসূচি
ব্যাপক শোডাউনে বিএনপি

বর্তমান সরকারের পতনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি হিসেবে আজ ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও সমমনা ৩৬ দল। বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩ পর্যন্ত ৪ ঘণ্টার এ কর্মসূচিতে শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীদের ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ১০ বিভাগের গণঅবস্থানে নেতৃত্ব দিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১২ নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সূত্র মতে, রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেবে বিএনপি। আর ঢাকার ভিন্ন ছয়টি স্পটে অবস্থান নেবে বিভিন্ন জোট শরিকসহ ৩৬টি দল। এ কর্মসূচি সফলে বেশ কিছুদিন ধরে প্রস্তুতি সভা করেছে বিএনপি ও শরিকরা। এদিকে গণঅবস্থান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। এক্ষেত্রে ২৫ জানুয়ারি কালোদিবস পালনের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে আন্দোলনের শরিকদের মতামত নিয়েছে দলটি। বিএনপির ঘোষণার পর তাতে সমর্থন জানাবে শরিকরা।

তবে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হসেবে গণমিছিল করলেও আজ গণঅবস্থানে থাকছে না জামায়াতে ইসলামী। দলটি আলাদাভাবে মহানগরগুলোতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ আলোচনা সভা করবে বলে জানা গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স গতকাল মঙ্গলবার জানান, দেশব্যপী বিভাগীয় সদরের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় গণঅবস্থানে নেতৃত্ব দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস।

অন্যদিকে সিলেট বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আব্দুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান নেতৃত্ব দেবেন।

এছাড়া এর আগে গঠনকৃত সমন্বয় টিমের দলনেতা, সমন্বয়কারী, সমন্বয় সহযোগীসহ বিভাগের অন্তর্গত জেলাগুলোর অধিবাসী কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক, সদস্য, জেলা, উপজেলা ও মহানগরসহ অন্যান্য নেতারা নিজ নিজ বিভাগীয় সদরের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বলেও সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উল্লেখ করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং ও দলের মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাতদলীয় ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, ‘১২ দলীয় জোট’ বিজয় নগর পানির ট্যাংক এলাকায়, ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ পুরানা পল্টন প্রীতম হোটেলের উল্টো দিকে, এলডিপি কারওয়ান বাজার এফসিডি-সংলগ্ন দলীয় অফিসের সামনে, গণফোরাম (মন্টু) ইডেন কমপ্লেক্স ১৬৭ আরামবাগ দলীয় অফিসের সামনে এবং চারদলীয় ‘বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য জোট’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্ব পাশে অবস্থান নেবে। এসব দলও অবস্থান কর্মসূচি সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।

গণঅবস্থানের প্রস্তুতি সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, এ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিতে সব ওয়ার্ড ও থানার নেতাদের নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে কোনো বাধা দিয়ে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি রোখা যাবে না উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী বলেছেন, গণঅবস্থান কর্মসূচি হলো জনগণের কর্মসূচি, বাস্তবায়ন ও করবে জনগণ। আওয়ামী ‘স্বৈরাচারী সরকার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী’ দিয়ে আমাদের সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচাল করতে এলে জনগণ এর সমুচিত জবাব দেবে।

সূত্র মতে, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফার ভিত্তিতে সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ও রংপুর বাদে অন্য জেলা ও মহানগরগুলোতে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা ও রংপুরে গণমিছিল কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতসহ সমমনা অন্য দলগুলোও একই কর্মসূচি পালন করে। ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার গণমিছিল-পূর্ব জমায়েত থেকেই ১১ জানুয়ারির গণঅবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়।

এদিকে আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করার অনুমতি চেয়ে গত রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠিদেয় বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন ও আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।

বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের নয়াপল্টনে অনুমতি দেয়া হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত