ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু আজ

তুরাগ তীরে লাখো মুসল্লি

* নিরাপত্তাঝুঁকি নেই * শৃঙ্খলা রক্ষায় অঙ্গীকার দুই গ্রুপের * করোনার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দুই বছর পর আয়োজন
তুরাগ তীরে লাখো মুসল্লি

আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। করোনার ধকল কাটিয়ে দুই বছর বিরতির পর কহর দরিয়াখ্যাত টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আজ আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মুসল্লিরা তুরাগতীরে অবস্থান নিয়েছেন। গত রাতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ইজতেমা ময়দান। ইজতেমা উপলক্ষ্যে গতকাল সারা দিন টঙ্গিমুখী মুসল্লিদের বহনকারী যানবাহনের চাপে ঢাকা ও আশপাশের জেলার সড়কে যানজট তৈরি হয়। কোথাও কোথাও দীর্ঘ যানজটে থেমে থাকতে দেখা যায় যানবাহন। এতে করে পথের ভোগান্তিতে পড়ে মুসল্লিসহ সাধারণ মানুষ।

২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা-১৯ মহামারির কারণে গত দুই বছর (২০২১ ও ২০২২ সাল) ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। দুই বছর পর শুরু হলো বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমা শুরুর দুই দিন আগেই অনেক মুসল্লি ময়দানজুড়ে অবস্থান নেন। দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের মতবিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে দুই পর্বে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলীগ জামাতের বাংলাদেশের শীর্ষ মুরুব্বি ও কাকরাইল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জোবায়ের আহমেদের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নিবেন আজ থেকে। তাদের ইজতেমা চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। গত রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্ব শেষ হবে। সে হিসাবে এখন যারা মাঠে আছেন বা আসছেন, সবাই জুবায়েরপন্থি। পরবর্তী পর্বে অংশ নেবেন তাবলিগের দিল্লির মুরুব্বী সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্ব সমাপ্তির পর ৫ দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আগামী ২০ জানুয়ারি শুরু হবে। গত রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে প্রথমপর্বে আগত মুসল্লিরা রাতের মধ্যে ময়দান ত্যাগ করবেন। পরে মাওলানা সা’দ আহমাদ কান্ধলভীপন্থি অনুসারী মুসল্লিরা আগামী ২০শে জানুয়ারি শুক্রবার বাদ ফজর থেকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নিবেন। ২২শে জানুয়ারি মধ্যাহ্নের পূর্বে যে কোনো এক সময় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। প্রতি পর্ব ইজতেমা কার্যক্রম শেষে জিম্মাদারগণ ময়দানের দায়িত্ব প্রশাসনের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যাবেন।

এদিকে গতকাল সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে টঙ্গীর তুরাগতীরে মুসল্লিদের ঢল নামে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিদের সংখ্যাও বাড়তে দেখা যায়। ধীরে ধীরে ভরে উঠতে শুরু করে ইজতেমার মাঠ।

ইজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন- বিশ্ব ইজতেমার মাঠে আজ ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় এ আসরের প্রথম পর্ব। ইজতেমায় যোগ দিতে গত মঙ্গলবার থেকেই ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা।

গতকাল ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকায় তথ্য নিয়ে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইজতেমায় যোগ দিতে মুসল্লিরা তুরাগতীরে আসতে থাকেন। কেউ বাসে, কেউ ট্রাকে, আবার কেউ পিকআপ ভ্যানে চড়ে এসেছেন ইজতেমা মাঠে। সবার হতেই ছিল একাধিক ব্যাগ ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। মুসল্লিরা মাঠে ঢুকেন ভিন্ন ভিন্ন ফটক দিয়ে। মাঠে ঢুকেই নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নেন মুসল্লিরা।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ বিরতির পর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় তারা বেশ উচ্ছ্বসিত।

জুবায়ের অনুসারীদের শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বি খন্দকার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এ বছর বিপুলসংখ্যক সাথি ইজতেমায় অংশ নেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার থেকেই সাথিরা বাসে, ট্রাকে করে দলে দলে আসতে থাকেন। সবাইকে নিয়ে একটি সুন্দর ইজতেমা হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ মুরুব্বি ও শূরা সদস্য মাওলানা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ময়দানের প্রস্তুতিকাজ শেষ করতে হাতে সময় খুবই কম ছিল।

এবারের ইজতেমায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত বুধবার আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন- আমরা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই আপনারা নির্ভয়ে ইজতেমায় অংশ নিতে পারেন। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পুরো ময়দানজুড়ে লাগানো হয়েছে প্রায় ৩০০ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।

তাবলিগের দুই পক্ষই সুন্দরভাবে ইজতেমা অনুষ্ঠানের কথা দিয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ আছে, এটা সত্য। এজন্য আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই বসেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা হয়েছে। মঙ্গলবারের সভায় তাদের নিজেদের মতবিরোধ নিরসনের আহ্বান জানিয়েছি। দুই পক্ষই আমাদের কথা দিয়েছে, ইজতেমা সুন্দরভাবে পালন করবে। কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। আমরা এ ব্যাপারে তাদের ওপর আস্থা রাখতে চাই।’

সাধারণ মানুষের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের সুবিধার্থে আমরা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছি। পকেটমারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপ রুখতে আমাদের পেট্রোল টিম কাজ করবে। ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করব। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোলরুম তৈরি করেছে। এছাড়াও কন্ট্রোল রুম থাকবে, এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভারভেশন টিম থাকবে, হেলিকপ্টার টহল থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম, বোম ডিস্পোজাল টিম থাকবে। আখেরি মোনাজাত ও জুমার নামাজে যাতে মুসল্লিরা সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, ইজতেমাস্থল ৯১টি খিত্তায় বিভক্ত। খিত্তাভিক্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, নৌপুলিশ, অ্যান্টিট্যারিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।

আইজিপি আরও বলেন- ইতিপূর্বে আমরা যেভাবে সফল হয়েছি, এর ধারাবাহিকতায় এবারো আমরা এই আয়োজন সফল করব।

ইজতেমা ময়দানে ২৮ দেশের মুসল্লি : দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পদচারণায় টঙ্গী এখন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৮ দেশের এক হাজার ৪৬১ জন বিদেশি মেহমান ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে তাদের জন্য নির্ধারিত নিবাসে অবস্থান নিয়েছেন। এ স্রোত আখেরি মোনাজাতের আগমুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে জানিয়েছেন ইজতেমা ময়দানের মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম।

প্রথম পর্বে জেলা-এলাকাভিত্তিক খিত্তার অবস্থান : এ বছর প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যেসব খিত্তায় অবস্থান করবেন তা হলো- গাজীপুর (খিত্তা-১), টঙ্গী (খিত্তা-২, ৩ ও ৪), ঢাকা (খিত্তা-৫ থেকে ১৮ ও ২১, ২২, ২৫, ২৭, ২৮, ৩০), রাজশাহী (খিত্তা-১৯), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (খিত্তা-২০), নাটোর (খিত্তা-২৩), নওগাঁ (খিত্তা-২৪), নড়াইল (খিত্তা-২৬), সিরাজগঞ্জ (খিত্তা-২৯), টাঙ্গাইল (খিত্তা-৩১), রংপুর (খিত্তা-৩২), গাইবান্ধা (খিত্তা-৩৩), লালমনিরহাট (খিত্তা-৩৪), মুন্সীগঞ্জ (খিত্তা-৩৫), যশোর (খিত্তা-৩৬), নীলফামারী (খিত্তা-৩৭), বগুড়া (খিত্তা-৩৮), জয়পুরহাট (খিত্তা-৩৯), নারায়ণগঞ্জ (খিত্তা-৪০), ফরিদপুর (খিত্তা-৪১), ভোলা (খিত্তা-৪২), নরসিংদী (খিত্তা-৪৩), সাতক্ষীরা (খিত্তা-৪৪), বাগেরহাট (খিত্তা-৪৫), কুষ্টিয়া (খিত্তা-৪৬), মেহেরপুর (খিত্তা-৪৭), চুয়াডাঙ্গা (খিত্তা-৪৮), ময়মনসিংহ (খিত্তা-৪৯, ৫১), শেরপুর (খিত্তা-৫০), জামালপুর (খিত্তা-৫২), গোপালগঞ্জ (খিত্তা-৫৩), কিশোরগঞ্জ (খিত্তা-৫৪), নেত্রকোনা (খিত্তা-৫৫), ঝালকাঠি (খিত্তা-৫৬), বান্দরবান (খিত্তা-৫৭), বরিশাল (খিত্তা-৫৮), পিরোজপুর (খিত্তা-৫৯), হবিগঞ্জ (খিত্তা-৬০), কক্সবাজার (খিত্তা-৬১), সিলেট (খিত্তা-৬২), সুনামগঞ্জ (খিত্তা-৬৩), ফেনী (খিত্তা-৬৪), নোয়াখালী (খিত্তা-৬৫), লক্ষ্মীপুর (খিত্তা-৬৬), চাঁদপুর (খিত্তা-৬৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (খিত্তা-৬৮), খুলনা (খিত্তা-৬৯), পটুয়াখালী (খিত্তা-৭০), বরগুনা (খিত্তা-৭১), চট্টগ্রাম (খিত্তা-৭৪), কুমিল্লা (খিত্তা-৭৫), তুরাগ নদের পশ্চিমপাড় কাঁচাবাজারে মৌলভীবাজার (খিত্তা-৭৬), রাজবাড়ী (খিত্তা-৭৭), মাদারীপুর (খিত্তা-৭৮), শরীয়তপুর (খিত্তা-৭৯), মানিকগঞ্জ (খিত্তা-৮০, সাফা টাওয়ার), রাঙামাটি (খিত্তা-৮১), খাগড়াছড়ি (খিত্তা-৮২), দিনাজপুর (খিত্তা-৮৩), পাবনা (খিত্তা-৮৪), ঠাকুরগাঁও (খিত্তা-৮৫), ঝিনাইদহ (খিত্তা-৮৭, যমুনা প্লট), মাগুরা (খিত্তা-৮৮, যমুনা প্লট), কুড়িগ্রাম (খিত্তা-৮৯, কামারপাড়া বেড়িবাঁধ বঙ্গবন্ধু মাঠ), পঞ্চগড়ের (খিত্তা-৯০) কামারপাড়া হাইস্কুল মাঠ-বধির স্কুল ভবন) নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।

এছাড়াও ময়দানের চারপাশে ১১ ও ১২নং খিত্তার কিয়দংশ, ৩২ ও ৩৭নং খিত্তার মাঝামাঝি ১২নং, ৭২, ৭৩, ৮৬ ও ৯১নং খিত্তাগুলো সংরক্ষিত হিসেবে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ডা. খান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।

বিশ্ব ইজতেমা যেভাবে শুরু হয় : ১৯১০ সালে ভারতের রাজস্থানের মেওয়াতে মাওলানা ইলিয়াস রাহ. তাবলিগ জামাতের গোড়াপত্তন করেন। ছয়টি মৌলিক বিষয়কে সামনে রেখে তাবলিগ জামাত তার দাওয়াতি কার্যক্রম গোটা বিশ্বে পরিচালনা করে আসছে। ছয়টি মৌলিক বিষয় হচ্ছে- ১. কালিমা; ২. সালাত; ৩. ইলেম ও জিকির; ৪. একরামুল মুসলিমিন; ৫. সহিহ নিয়ত; ৬. দাওয়াত ও তাবলিগ।

১৯২০ সালে তৎকালীন দেওবন্দ মাদ্রাসার সব আকাবির আসলাফের পরামর্শ মোতাবেক মাওলানা ইলিয়াস রাহ. দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম শুরু করেন।

১৯৪৪ সালে মাওলানা ইলিয়াস রাহ. এর ইন্তেকালের পর তাবলিগ জামাতের দায়িত্ব দেয়া হয় তার সন্তান মাওলানা ইউসুফ রাহ.কে। মাওলানা ইউসুফ রাহ. এর ইন্তেকালের পর তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব দেয়া হয় মাওলানা এনামুল হাসান রাহ.কে। মাওলানা এনামুল হাসান রাহ. এর ইন্তেকালের আগে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সুচারুরূপে পরিচালনার লক্ষ্যে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি আলমি শূরা (আন্তর্জাতিক পরিচালনা কমিটি) গঠন করা হয়।

বিশ্ব ইজতেমা বিশ্ব তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সমাবেশ। বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের প্রধান মার্কাজ হলো ঢাকার কাকরাইল মসজিদ। ১৯৪৬ সালে ঢাকার কাকরাইলে প্রথম বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়। ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামে। এরপর নারায়ণগঞ্জে ১৯৫৮ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর টঙ্গীর পাগার নামক স্থানে ইজতেমা হয় ১৯৬৬ সালে। ১৯৬৭ সাল থেকে রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে শিল্পনগরী টঙ্গীর সুবিশাল ময়দানে তুরাগ নদীর পূর্ব তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বিশ্ব ইজতেমা।

মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের প্রায় ৫০-এর অধিক দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান তাবলিগ জামাতের সাথীরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করে থাকেন।

আখেরি মুনাজাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। বর্তমান বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ১৯৯৫ সালে সরকারিভাবে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়।

ইজতেমা মাঠে দুই মুসল্লির মৃত্যু : বিশ্ব ইজতেমার মাঠে দুই মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ইজতেমা ময়দানে তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরা হলেন- গাজীপুর শহরের ভুরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা আবু তৈয়ব ওরফে আবু তালেব (৯০) এবং সিলেটের জৈন্তাপুর থানার হরিপুরের হেমুবটপাড়া এলাকার মো. ফজলুল হকের ছেলে মো. নুরুল হক (৬৩)।

বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেছেন তাবলিগ জামায়াতের গাজীপুর মারকাজের শূরা সদস্য তৈয়ব। তিনি সকাল ১০টার দিকে মারা যান। আর নুরুল হক ভুগছিলেন অ্যাজমা রোগে। পরে সকালে ইজতেমা ময়দানের ৬২ নম্বর খিত্তায় অবস্থানকালে নুরুল হকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তিনি মারা যান। দুপুরে ইজতেমা ময়দানে জানাজা শেষে লাশ দুটি তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত