ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ব্রয়লার মুরগির মাংস নিয়ে গবেষণা

জনস্বাস্থ্যের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই : কৃষিমন্ত্রী

জনস্বাস্থ্যের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই : কৃষিমন্ত্রী

‘ব্র্রয়লার মুরগির মাংস একটি নিরাপদ খাদ্য এবং ব্রয়লার মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই। ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া নিরাপদ বিষয়ক গবেষণায় এসব ফলাফল পাওয়া যায়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অধীনে গবেষণাটি গত বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে পরিচালিত হয়।’ এতে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে দেখা যায়, ‘ব্রয়লার মুরগির মাংসে, হাড়ে এবং কম্পোজিটে মূলত দুটি অ্যান্টিবায়োটিক এবং ৩টি হেভি মেটালের সামান্য উপস্থিতি রয়েছে- যা অস্বাভাবিক নয় এবং তা সর্বোচ্চ সহনশীল সীমার অনেক নিচে। খামার এবং বাজারে প্রাপ্ত ব্রয়লার মাংসের চেয়ে সুপারশপের ব্রয়লার মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক এবং হেভি মেটালের পরিমাণ কম।’ কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক গতকাল সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে গবেষণার ফলাফল নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, মৎস্য ও প্রাণিসচিব নাহিদ রশীদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া এবং গবেষণা দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া নিরাপদ কি না, এ নিয়ে অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, ব্রয়লার মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক, হেভি মেটাল এবং অন্য ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে- যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের ফলে সাধারণ জনগণের মাঝে অনেক সময় ব্রয়লার মাংস সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্রয়লার শিল্পের ওপর বড় ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই পরিস্থিতিতে ব্রয়লার মুরগির মাংসে, হাড়ে, কম্পোজিটে (কলিজা, কিডনি এবং গিজার্ডের সমন্বয়) এবং মুরগির খাদ্যে কি পরিমাণ এন্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতু আছে তা নির্ণয় করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অধীনে গবেষণাটি করা হয়। তিনি জানান, গবেষণায় বাংলাদেশের পাঁচটি জেলা শহরের (ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং বরিশাল) ব্রয়লার খামার (ছোট, মাঝারি এবং বড়) এবং বাজার থেকে ব্রয়লারের মাংস, হাড় ও কম্পোজিট এবং ব্রয়লার খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত প্রায় ১২০০টি ব্রয়লার মুরগি এবং ৩০টি ব্রয়লার মুরগির খাদ্য থেকে ৩১৫টি নমুনা প্রস্তুত করে বহুল ব্যবহৃত ১০টি এন্টিবায়োটিক এবং ৩টি ভারী ধাতুর অবশিষ্টাংশের পরিমাণ পরীক্ষা করা হয়।

গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বিস্তারিত তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, উৎস নির্বিশেষে ব্রয়লারের মাংসে দুটি অ্যান্টিবায়োটিক এবং ৩টি হেভি মেটালের সামান্য উপস্থিতি রয়েছে। এটা অস্বাভাবিক নয় এবং এটি সর্বোচ্চ সহনশীল সীমার অনেক নিচে। ফলে ব্রয়লার মুরগির মাংস একটি নিরাপদ খাদ্য এবং ব্রয়লার মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই। তিনি বলেন, মুরগির খাবারে ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করা হয়, এমন তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কেননা, দেশে বর্তমানে হাঁস-মুরগির খাবারের চাহিদার পরিমাণ ৯৫ লাখ টন, গবাদিপশুর ১৪৫ লাখ টন। অথচ মোট ট্যানারির বর্জ্য হয় মাত্র ৮৫ হাজার টন।

মন্ত্রী বলেন, দেশে ব্রয়লার মুরগি খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। চাহিদা বৃদ্ধি করতে পারলে দেশে যে পরিমাণ খামার ও অবকাঠামো রয়েছে, তার পুরোপুরি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। সেজন্য, মানুষের কাছে মুরগির মাংস জনপ্রিয় করতে হবে। এটি করতে পারলে একদিকে আমিষের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে সুস্থ, সবল ও মেধাবী জাতি গঠন সহজতর হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত