রাজনীতিতে বিষোদগার চায় না আওয়ামী লীগ

বললেন ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে বিষেদাগার চায় না। রাজনীতিতে সংস্কার আনার চেষ্টা আওয়ামী লীগের আছে। রাজনৈতিক সাংস্কৃতি পরিবর্তন আনার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে, কিন্তু বিএনপি মাঝখানে শুধু দেয়াল তৈরি করেছে। পরিবর্তনের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্টের ঘটনার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান খুনিদের বিদেশে পাঠিয়েছেন, তাদের পুরস্কৃত করেছেন। তিনি বিচার না হওয়ার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করেছেন। ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তারপরও খালেদা জিয়ার ছেলের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী

উনার বাড়িতে গিয়েছিলেন। ওই সময় তাকে অপমান করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে গণভবনে দাওয়াত করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি। আসলে হয়তো আলাপ হতো। তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত এ কথা আমি বলব না। আমাদের গণতন্ত্র বিকাশমান পর্যায়ে রয়েছে। আমরা ভুলত্রুটি সংশোধন করতে পারব এবং বিকাশের ধারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। রাতারাতি এটির পরিবর্তন সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর এ দেশে বলতে গেলে গণতন্ত্র ছিল না। গণতন্ত্র ছিল শৃঙ্খলিত। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে প্রথমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন। শেখ হাসিনার দুঃসাহসিকতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং জেলা হত্যার বিচার হয়েছে। এসব অসম্ভব কাজগুলো তিনি সম্ভব করতে পেরেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আগামী নির্বাচন। সেটা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে হবে বলে নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে করণীয় সম্পর্কে এমপিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। তার নির্দেশ আমরা পালন করছি। একইসঙ্গে আমরা বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলা করছি। রিজার্ভ নিয়েও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, পাঁচ মাস আমদানি করার মতো রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা আছে। আমাদের মুদ্রাস্ফীতি ৯-এর ওপর চলে গিয়েছিল। এখন ৮ এর নিচে নেমে গেছে। আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। আমাদের মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলারের বেশি এবং ২০২৬ সালে চার হাজারে ডলারে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ এখনও পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যাচ্ছে। একজন নেতার জন্য সেটি সম্ভব হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেন। তিনি বাংলাদেশের রূপকার। তিনি করোনা সংকটের সময় বিনামূল্যে টিকা দিয়েছেন।

সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ পৃথিবীর বহু দেশেই সংকট। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়াও আছে। ইউরোপে পর্যন্ত রেকর্ড ভাঙা সংকট। আমেরিকায় সংকট। সেখানে সরকার সম্পর্কে নানা কথা থাকে, সমালোচনাও থাকে। কিন্তু সেখানে প্রেসিডেন্টে বাইডেনের পদত্যাগ কেউ দাবি করে না। তবে আমাদের দেশে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের দাবি করা হয়। একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করা হয়। পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই।

বায়েজিদ সংযোগ সড়কে টোল নেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, টাকা খরচ করে সুন্দর সড়ক করা হয়েছে। এতো সুন্দর সড়কে চলাচল করবেন টোল দিতে হবে না? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সড়কে টোল নেয়া হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা সভাপতি এমএ সালাম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।