উন্নত দেশের তুলনায় দেশে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কম

বললেন তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত দেশগুলোর তুলনায় দেশে বিদ্যুতের দাম অনেক কম বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎখাত এখনো জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর। কন্টিনেন্টাল ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে, দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের দেশে কিন্তু সেইভাবে দাম বাড়ানো হয়নি।

গতকাল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের কায়ছার রহমান অডিটরিয়ামে ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফর উপলক্ষ্যে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মাঠ পরিদর্শনের গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎখাতে আমাদের সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে এবং জনগণের যেন অসুবিধা না হয়,

তাদের যেন সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ দেয়া যায়, সে জন্যই এই ভর্তুকি। সেই ভর্তুকি কিছুটা কমানোর জন্য বিদ্যুতের মূল্য সামান্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটিও উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।

এসময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা বিএনপিকে তাদের জনসভায় নিরাপত্তা দিয়েছি, আর তারা আমাদের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে, গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। এটিই হচ্ছে তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য। আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। আর তারা ষড়যন্ত্র আর অস্ত্রের শক্তিতে বিশ্বাস করে। সুতরাং জনতার শক্তিতে যেন সমস্ত অপশক্তি দূরীভূত হয়, সেটিই ২৯ তারিখে রাজশাহীর জনসভায় দেখিয়ে দিতে হবে।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সারা দেশে বিভিন্নভাবে জনসভা করেছে। আমরা সহায়তা করেছি। আমরা সহায়তা না করলে তাঁরা নির্বিঘ্নে এই জনসভা করতে পারত না। আর আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমাদের জনসভায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত, চারশ’ জনের বেশি আহত হয়েছে, শেখ হাসিনা ও আমাদের বিভিন্ন জনসভায় বোমা হামলা হয়েছে। শেখ হেলালের জনসভায় হামলা করে এক ডজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কিবরিয়া সাহেব, আহসান উল্লাহ মাস্টারের জনসভায় হামলা করে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় হামলা হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা রাসেল স্কয়ারে চল্লিশ-পঞ্চাশ জন জমা হলেই লাঠিপেটা করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, তৎকালীন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকেও লাঠিপেটা করা হয়েছে। কই, তাদের কোনো নেতার গায়ে কোনো আঁচড় পড়েছে! পড়ে নাই। এটিই হচ্ছে তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে পুরো রাজশাহী বিভাগজুড়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও সরকারের সাফল্য তুলে ধরার জন্য নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এতে মানুষ উৎসাহিত হবে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে যোগ দেবে।

তথ্যমন্ত্রী এর আগে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি বিএনপির দেশব্যাপী বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, বিএনপির সামনের কর্মসূচিও গত ১৪ বছর ধরে তাঁরা যে নানা ধরনের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে তারই ধারাবাহিকতা ছাড়া আর কিছু হবে না। কয়েকদিন আগে বিএনপি যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করল বা আগামী ১৬ তারিখে যে মিছিল, সেগুলো একটা ডিম পাড়ার আগে হাঁস যেমন অনেক হাঁকডাক দেয়, সেটি ছাড়া আর কিছু না।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করি। আমাদের শক্তি জনগণ এবং সাম্প্রতিক সময়েও আপনারা দেখেছেন সমগ্র বাংলাদেশে যে জনসভাগুলো আমরা করেছি, সেখানে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ। অর্থাৎ জনগণ যে আমাদের সাথে আছে, সেটি সাম্প্রতিক সময়েও বিভিন্ন সমাবেশে প্রতীয়মান হয়েছে।

আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আয়োজন নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ২৯ তারিখে যে জনসভা হতে যাচ্ছে, সে দিন রাজশাহী শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। সমাবেশ মাঠে হবে, কিন্তু পুরো শহরই সে দিন সমাবেশে পরিণত হবে। লক্ষ লক্ষ লোক হবে।

আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে ও অন্যান্যের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক এসএস কামাল হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা যোগ দেন।