ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে

দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে

দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের কোথায় কি দুর্নীতি হয়েছে সে তথ্য দিতেও জাতীয় সংসদে আহ্বান জানানো হয়েছে। কাজেই শুধু মুখে দুর্নীতির কথা বললেই হবে না, সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।

গতকাল সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেসব লোক দুর্নীতির কথা বলেন তারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তাদের আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা করতে গিয়ে গরিব মানুষের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে সুদ দিতে গিয়ে ঘরবাড়ি বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে চলেই যেতে হয়েছে অথবা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু এই গরিব মানুষের টাকা দিয়েই বিদেশে নামধাম করে তারা ভালোই আছে, প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করছে। এই টাকা তো গরিবের রক্তের কামানো টাকা, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি বলেন, জনগণকে দেয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সবসময় জাতির কল্যাণে কাজ করে এবং দেশের মানুষ এর সুফলও পাচ্ছে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার দেশেবাসীর কাছে উপস্থাপন করে এবং সবসময় তাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার রক্ষা করে, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে আমুল পরিবর্তন ঘটেছে তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। নানা ধরনের কথা রটায় কিন্তু মূলত একটা পরিবর্তন যে এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায় তা এখন স্পষ্ট। তিনি বলেন, আমরা রাস্তাঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি করেছি। তারপরও এসব উন্নতি অনেকে চোখে দেখেও না দেখার ভান করে, স্বীকার করতে চায় না, করতে চাইবেও না। কিন্তু যেটা আমি সবসময় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা করে সে ওয়াদা রক্ষা করে।

সরকারপ্রধান বলেন, প্রত্যেক ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি, আমাদের কথা ছিল প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালাব সেটাও আমরা পেরেছি। দারিদ্র্যের হার অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে এই হার আরো ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।

এত উন্নতি করার পরও একশ্রেণির লোক আছে যাদের কোনো কিছুই ভালো লাগে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দেশেও যাদের একেবারে নির্দিষ্ট বেতনে চলতে হয় তাদের কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা বুঝি। সেজন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে খাবার কিনে নিয়ে এসে ভর্তুকি মূল্যে সেটা দিচ্ছি। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে আপৎকালীন সময়ে ভোজ্য তেল, চিনি ও ডালসহ নিত্যপণ্য যেন ক্রয় করতে পারে ন্যায্যমূল্যে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি, খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার কৃষিতেও ভর্তুতি অব্যাহত রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের তরিতরকারী এখন ৭০টির মতো দেশে রপ্তানি হচ্ছে। শরিয়তপুরের যে সবজি হচ্ছে তা সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে। এভাবে উদ্যোগ নিয়ে আমরা করতে পারি। কাজেই সেভাবেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চিন্তা আমাদের করতে হবে। কৃষকদের গুরুত্ব দিয়ে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বানের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বৈজ্ঞানিক তৎপরতা চালানোর কথা জাতির পিতা বলে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর গবেষণায় সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকে গবেষণায় পৃথক বরাদ্দ দিয়েছি। যার জন্য বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু আমাদের দেশের একেকটা খাত ধরে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার ফলে আজকে যেমন দারিদ্র্য কমাতে পেরেছি তেমনি কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে বাড়াতে পেরেছি। কেউ ইচ্ছা করলেও বেকার থাকতে পারে না, কারণ, প্রকৃতপক্ষে বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সুযোগ সৃষ্টি করেছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে এখন গ্রামে বসে টাকা উপার্জন করছে। কাজেই এভাবে যত সুযোগ আছে আমরা করেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত